কাউনের চালের সিদ্ধ ভাত|নিরামিষ রেসিপি |
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
কাউন বা কাউনের চাল আমাদের অনেকের পরিচিত একটি শস্য।বাংলাদেশে কাউনের চাল এক সময় মানুষ তাদের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদা পূরণ করত। সময়ের ব্যবধানে সেই চালের চাষ কমে যাচ্ছে। কিন্ত এই চাল স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি একটা শস্য। স্বাস্থ্যের এই দারুণ উপকারিতা এবং ডায়েটে অসাধারণ ভূমিকা পালন করার কারণে একে অনেক বর্তমান সময়ে সুপারফুড বলে আখ্যায়িত করে থাকে। এখন আর কেউ কাউনের চাল খাবারের চাহিদা মেটানোর জন্য খায় না,হয়তো শখের বশে বিভিন্ন রকম রেসিপি করে খায়।আমার বাসায় কাউনের চাল মোটামুটি সবসময়ই থাকে তার কারন হলো আমি একাদশীর ব্রত অনেক আগে থেকেই পালন করে আসছিলাম কিন্তু মাঝে খুব বেশি অসুস্থ হওয়ার কারনে বাদ দিতে হয়েছিলো। একদশীতে খুব বেশি খাবার গ্রহণ করা ঠিক নয়। পঞ্চ শস্য একেবারে নিষিদ্ধ তাই খাবার বলতে শুধু ফল সবজি বাদাম এগুলো খেয়ে থাকতে হবে।
দিনে আমাকে অনেক গুলো কড়া ডোজের ঔষধ খেতে হয় যা এই খাবার খেয়ে ঔষধ খাওয়া আমার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর।ব্যথার ঔষধ সবসময়ই ভরাপেট এ খেতে হয় এই কারনে মাঝে অনেক গুলো সময় একাদশী পালন করতে পারিনি।ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় এখন অনেকটাই শরীর ভালো যাচ্ছে তাই কিছু দিন হলো আবার একাদশী পালন করা শুরু করেছি।ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে খাবারের বেশকিছু বিধিনিষেধ আছে আর এখনকার দিনে অনেকেই আরও নিজে থেকে নুতন নতুন নিয়ম সৃষ্টি করে সেগুলো ধর্মের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে আমি কখনোই অন্যের মতে ধর্ম কে পালন করি না, নিজের শরীর মন যতটুকু ধারণ করতে পারে ততটুকুই করে থাকি।ধর্মে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা আছে আগে নিজের শরীর তারপর ধর্ম করতে হবে।অসুস্থতার কারনে যতটুকু পারি ততটুকুই চেষ্টা করি।আমার বিশ্বাস মন থেকে ঈশ্বর কে ডাকলে আমি যেভাবেই পালন করি না কেনো সেভাবেই আমার প্রার্থনা গ্রহণ করবেন।যাইহোক আমি খুবই নগন্য একজন মানুষ ধর্মীয় জ্ঞান আমার খুবই কম আমি শুধু মনে করি আমার কর্ম যদি ঠিক থাকে তাহলে খুব বেশি ধর্ম করার প্রয়োজন হবে না যতটুকু করি তাতেই ঈশ্বর খুশি থাকবেন।চলুন তাহলে রেসিপি টি জেনে নেওয়া যাক-
উপকরণ |
---|
কাউনের চাল |
আলু |
বেগুন |
সিম |
মিষ্টিকুমড়া |
ফুলকপি |
টমেটো |
কাঁচামরিচ |
লবণ |
সরিষার তেল |
প্রথম ধাপঃ
প্রথমে সবজি গুলো কেটে ধুয়ে নিয়েছি।
দ্বিতীয় ধাপঃ
কাউনের চাল গুলো ধুয়ে কিছুক্ষণের জন্য ভিজিয়ে রেখেছি।তারপর হাত দিয়ে কচলিয়ে কচলিয়ে ভালো করে ধুয়ে উপর থেকে সেকে সেকে জল থেকে তুলে নিয়েছি।
তৃতীয় ধাপঃ
বড় একটা পাত্রে জল দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিয়েছি।তারপর আলু গুলো দিয়ে কিছুক্ষণ সিদ্ধ করে নিয়েছি।
চতুর্থ ধাপঃ
আলু অর্ধেক সিদ্ধ হয়ে গেলে ফুলকপি গুলো দিয়ে কিছুক্ষণ সিদ্ধ করে নিয়েছি।তারপর বাকি সবজি গুলো দিয়ে কিছুক্ষণ সিদ্ধ করে নিয়েছি।
পঞ্চম ধাপঃ
এবার ধুয়ে রাখা কাউনের চাল গুলো দিয়ে দিয়েছি।তারপর স্বাদমতো লবণ দিয়েছি।কিছুক্ষণ চুলার আঁচ বাড়িয়ে দিয়ে জ্বাল দেওয়ার পর জল শুকিয়ে গেলে চুলার আঁচ বন্ধ করে দিয়েছি।
ষষ্ঠ ধাপঃ
এবার সবজি সিদ্ধ গুলো এক এক করে তুলে নিয়েছি।তারপর লবণ মরিচ ও সরিষার তেল দিয়ে আলাদা আলাদা করে প্রতিটি সবজি মেখে নিয়েছি।
পরিবেশন
একটা প্লেটের মধ্যে পরিমাণ মতো কাউনের ভাত নিয়ে চারদিক দিয়ে সবজি মাখা গুলো দিয়ে ভাতের মাঝে সরিষার তেল দিয়ে সাজিয়ে নিয়েছি।আর এভাবেই তৈরি হয়ে গেলো কাউনের চালের সিদ্ধ ভাত রেসিপি টি।
আজ এখানেই শেষ করছি।সবাই ভালো থাকবেন , সু্স্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
OR
একাদশী রাখলে সেই সময় পঞ্চশস্য খাওয়া যায় না, এটা আমিও জানি দিদি। কারণ আমি নিজেও অনেকবার একাদশী রেখেছি। যাইহোক, আপনার শেয়ার করা এই কাউনের চালের রেসিপি আমার কাছে সম্পূর্ণ ইউনিক লাগল । আমি আগে কখনোই এই রেসিপিটি করে খাইনি । এই পোস্টের মাধ্যমে নতুন একটি রেসিপি শেখার সুযোগ হলো । কাউন চালকে যে এখন সুপার ফুড বলা হয় , এটাও আমার জানা ছিল না। স্বাস্থ্যের দিক থেকে বেশ উপকারী যা দেখছি এই কাউনের চল।
হ্যাঁ একাদশী রাখলে খাবারের অনেক বিধিনিষেধ আছে। তবে কিছু কিছু সময় শরীর রক্ষার্থে একটু নিয়মের বাইরে যেতে হয়।সুন্দর মন্তব্য টি করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।
শরীর রক্ষার্থে একটু নিয়মের বাইরে যাওয়া কোনো অপরাধের কাজ না দিদি, মাঝে মাঝে একটু নিয়মের বাইরে যাওয়াই যায়।
পুরোটাই একদম ভিন্ন ধরনের রেসিপি। কাউনের চালের সিদ্ধ ভাত এর নিরামিষ রেসিপি দেখতে অনেক লোভনীয় লাগছে দিদি। মনে চাইছে একটু টেস্ট করে দেখি😋
হ্যাঁ ভাই চলে আসো টেস্ট করার জন্য। ধন্যবাদ।
কাউনের চালের সিদ্ধ ভাত আমি আগে কখনো খাইনি। আপনি ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। রেসিপিটি দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। শীতের সবজি গুলো দিয়ে আপনি এই কাউনের চাল রান্না করেছেন নিশ্চয়ই খেতে খুবই মজা হয়েছে। সুস্বাদু ও মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
কাউনের চালের সিদ্ধ ভাত আমি আগে কখনো খাইনি৷ আজকে এই প্রথম আপনার কাছ থেকে এরকম একটি রেসিপি সম্পর্কে জানতে পারলাম৷ আপনি খুবই ভালোভাবে এই রেসিপিটি শেয়ার করেছেন৷ একদমই ইউনিক দেখা যাচ্ছে এই রেসিপি৷ একইসাথে এই রেসিপি নিঃসন্দেহে অনেক সুস্বাদু হয়েছে বলে মনে হয়৷ চেষ্টা করব এরকম একটা রেসিপি তৈরি করে দেখার৷
এটা খুবই সাধারণ একটা রেসিপি তাই চাইলে যেকেউ করে নিতে পারবে।অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনি তো অনেক সুন্দর করে কাউন চাল সিদ্ধ এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে নিরামিষ রেসিপি করেছেন। তবে কাউন চাল গুলো এখন তেমন চাষ করা হয় না। তবে এটি ঠিক শখ করে এই চালগুলো এখন মাঝেমধ্যে মানুষে খায়। সত্যি আপনার রেসিপিটি দেখে মনে হচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। খুব সুন্দর করে রেসিপিটি আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন।
কাউনের চালের ভাত আমি কখনো খাইনি। কিন্তু কাউনের চালের পায়েস খেয়েছিলাম। ভালই লাগে। এই চালটা আসলে এখন তেমন একটা চোখে পড়ে না। তাছাড়া আপনি আজকে কাউনের চাল দিয়ে খুব সুন্দর করে ভাত রান্না করেছেন। আবার অনেকগুলো সবজিও দিয়েছেন একসাথে। এর ফলে যে স্বাদ বেড়ে গিয়েছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ভর্তাগুলো দেখে লোভ লেগে গেল। আপু ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু ঠিক বলেছেন এই চালটা এখন আর বেশি দেখা যায় না। কিন্তু কাউনের চালের ভাত আর ভর্তাগুলো খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। আর শীতের দিনে সবজি খেতে আমার অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপু
কাউন চাউলের ভাত কখনো খাওয়া হয়নি।কাউন চাউল সিদ্ধ এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে রেসিপি করেছেন। আর মাঝেমধ্যে নিরামিষ রেসিপি খেতে এমনিতে বেশ মজা লাগে। তবে আমি নিরামিষ রেসিপি খেতে খুব পছন্দ করি। এই চাউল গুলো এখন খুব কমই পাওয়া যায় এবং চাষ কম করা হয়। খুব সুন্দর করে কাউন চাউল সিদ্ধ এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে রেসিপি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আপু মাঝে মাঝে নিরামিষ খাবার খেতে খুবই ভালো লাগে।আমি তো সপ্তাহে একদিন ফুল নিরামিষ খাবার খাই,পারলে আরও দুই তিন দিন খাওয়ার চেষ্টা করি।নিরামিষ খাবার শরীরের জন্য খুবই উপকারী।ধন্যবাদ আপু।
কর্মের মাঝেই ধর্ম বিদ্যমান।ধর্ম করলেই ধার্মিক হওয়া যায় না কর্মের প্রয়োজন অনেক।কাউনের চালের সিদ্ধ ভাত রেসিপিটি চমৎকার হয়েছে।তৈরি পদ্ধতি খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। কাউনের সাথে দেখছি কয়েক প্রকাশ সবজিও দিয়েছে এবং তা দিয়ে মজাদার ভর্তা বানিয়ে খেয়েছে। সব মিলিয়ে খুব সুন্দর। ধন্যবাদ সুন্দর কথা গুলোও রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।
একদম ঠিক বলেছো কর্মই হলো ধর্ম। আমিও তাই মনে করি এবং সবসময়ই ভালো কর্ম করার চেষ্টা করি।সুন্দর মন্তব্য করেছো কিন্তু দুই এক জায়গায় সামান্য বানান ভুল আছে ঠিক করে নিও।ধন্যবাদ।
আপু কাউনের চালের ভাত আমার কখনো খাওয়া হয়নি।তবে ফিরনি করে খেয়েছি।তাও সেই অনেক আগে। এখন এই কাউনের চাল কমই দেখা যায়। আপনার বানানো ভর্তা দেখে লোভ লেগে গেলো আপু। ধন্যবাদ জানাই আপনাকে মজার মজার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনি খুবই মজাদার রেসিপি শেয়ার করেছেন। আপনার এমন রেসিপি দেখে তো খিদা লেগে গিয়েছে। কাউনের চালের সিদ্ধ ভাত আর চারপাশে সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন ধরনের সবজি রেসিপি দেখে ইচ্ছে করছে খেয়ে নেই। শীতের সময়ে এই রেসিপি খেতে দারুণ লাগে। ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। ধন্যবাদ মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।