একতা
এখন একটি ছোট গল্প শুনাই। যদিও গল্পটি ফেসবুকে দেখেছিলাম কৌতুক হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।কিন্তু আমি এখান থেকে একটি গভীর শিক্ষা পেয়েছি।
গল্পটি এমন
একটি ব্যাংকে ডাকাত দল চুরি করতে গেছে।ডাকাত সর্দার নিজের ছেলেকেও নিয়ে গেছে শেখানোর জন্য।ব্যাংকে ঢুকে সেই ছেলেটি অনেক লোকজন দেখে ভয় পেয়ে গেল।তখন সে বাবাকে গিয়ে বলল বাবা এত লোকজন আর আমরা এত কম।এরা আমাদের উপর চড়াও হলেই তো আমরা শেষ। তখন ডাকাত সর্দার তার ছেলেকে বলল দেখ আমি কি করি,
তখন ডাকাত সর্দার চিৎকার করে সবাই কে বলল টাকা গেলে ব্যাংকের যাবে। তোমরা পরে নিজের টাকা ব্যাংকের কাছে থেকে ফেরৎ পাবে।তাই কেউ বাধা দিতে এসে নিজের প্রাণ টা দিও না। তোমরা মরলে তোমাদের বউ বাচ্চাকে কেউ দেখবে না।ব্যাস আর কেউ টু শব্দটি করল না।ডাকাতরা অনায়াসে ব্যাংক ডাকাতি করে নিয়ে চলে গেল।
এবার আর একটা গল্প শুনাই তারপর আসল আলোচনায় যাব।
১৯৪৭ সাল, বৃটিশরা ভারতীয় উপদেশ ত্যাগ করবে।এমন সময় তারা উপমহাদেশকে ভারত পাকিস্তান দুই ভাগে ভাগ করে দিয়ে যায়।পাকিস্তানের আবার দুইটি অংশ ছিল একটি পূর্ব পাকিস্তান, আপরটি পশ্চিম পাকিস্তান। পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তান কে সব সময় শোষণ করতে চাইত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১সালের মুক্তিযুদ্ধ।৩০লক্ষ শহীদ। এই ত্রিশ লক্ষ শহীদের পরিবার ছিল,বাবা মা ছিল,স্ত্রী কন্যা ছিল। তারা কিন্তু পরিবারের চিন্তায় ঘরে বসে থাকেন নি। নিজের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে গেছেন যাতে বাকিরা স্বাধীন ভাবে বাচতে পারে
দুইটি ঘটনার মাঝে মিল অমিল লক্ষ্য করেছেন? দুইটি ঘটনাতেই কিন্তু আপনার সম্পদ অন্য জন নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু প্রথম ক্ষেত্রে কেউ প্রতিবাদ করল না,কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে সবাই জীবন দিয়ে হলেও যুদ্ধ করল। এর পেছনে কারন কি? এর পেছনের কারন হল হিউম্যান সাইকোলজি। ডাকাত সর্দার খারাপ মানুষ হলেও কিন্তু মানুষ এর সাইকোলজি ভাল বুঝত। সে জানত মানুষ এর মাঝে লুকিয়ে আছে অনেক বড় শক্তি। এই শক্তি হচ্ছে একতার। মানুষ যদি একত্রিত হয় তবে তাদের কেউ রুখতে পারবে না।তাই সে প্রথমে সবাইকে আলাদা করে দিল।সবাইকে নিজের স্বার্থ আগে দেখালো। আর যখনই সবাই নিজের স্বার্থ দেখতে পেল তখনই বিভাজিত হয়ে গেল।আর সেই মুহুর্তে তাদের ক্ষতি করা হয়ে গেল সহজ।
তেমনি আমাদের বর্তমানের অবস্থাও একই। চারদিকে হাহাকার।কেউ সিন্ডিকেট করে টাকার পাহাড় গড়ছে,কেউ না খেয়ে বসে আছে।দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি,অনিয়ম, দূর্নীতি সব মিলিয়ে জন জীবন অতিষ্ট।কিন্তু তারপরেও কেউ কোন প্রতিবাদ করছে না।কেন করছে না? কারন অধিকাংশই নিজের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত।সবাইকে ধর্ম,গোত্র,দল ভেদে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। প্রত্যেকেই নিজের দল এর স্বার্থ দেখছে।নিজের কথা ভাবছে,তাই কোন প্রতিবাদ গড়ে উঠছে না।যেমনটা করে গিয়েছিল ব্রিটিশরা,ভারতীয় উপমহাদেশ যাতে সমৃদ্ধ হয়ে উঠতে না পারে তাই ভারতীয় উপমহাদেশ কে ভাগ করে দিয়ে যায়।এখন এক ভাগ আরেকভাগের সাথে লড়াই করে দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে।বাইরের শত্রুর সাথে লড়াই করার কোন শক্তিই নেই।
১৯৭১ সালে ঠিক এর উলটো ঘটনা ঘটেছিল।তখন দেশের মানুষ একত্রে লড়াই করেছে।তখন সবার একটাই উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা। নিজেদের ছোট ছোট স্বার্থে ভাগ হবার বদলে সবাই একত্রে লড়াই করে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা। সেই একত্রিত সাধারণ বাঙালি, সাধারণ অস্ত্র দিয়ে হারিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানী বাহিনীকে।তাই আমাদের বর্তমানে নিজেদের সব ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে,ভুলে যেতে হবে নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ।সব বাদ দিয়ে সবার বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে আমাদের আবার একত্রিত হতে হবে।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
কথায় আছে একতাই বল। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশের পরিবেশ ও পরিস্থিতি এমন একটা পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে একতা বলে কোন কথা আর নেই মানুষজন নিজেদের ধন-সম্পদ গড়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে পড়েছে তাই এর ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বিভিন্ন নিম্ন শ্রেণীর মানুষের। তবে বেশ ভালো লাগলো সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আজকে আপনি আমাদের মাঝে আলোচনা করেছেন দেখে।
ধন্যবাদ ভাইয়া৷ আপনার মন্তব্যটি অনেক উৎসাহিত করলো আমাকে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার আজকের পোস্টের মাঝে অনেক গভীর কিছু বার্তা রয়েছে। মানুষ এখন ভেতর থেকে অনেক দুর্বল কারন সবাই শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ এবং জীবন নিয়ে চিন্তা করে। আর এই সুযোগটাই নিয়েছে মানুষ রুপি হায়নার দল, দ্রব্যমূল্য আর কমার সুযোগ নেই। কারন একমাত্র আল্লাহর গজব ছাড়া এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের সম্ভবনা দেখছি না।
অসাধারণ সুন্দর পোস্ট করেছো। সত্যি তাই একতাকে আগে ভাঙ্গতে পারলেই পরাজয় করা সম্ভব। যখন আসাই কোন কিছুর পিছনে সার্থ খোজে তখন আর একতা নিয়ে কাজ করে না আর এই সুযোগ টাই শত্রু পক্ষ নিয়ে থাকে।১৯৭১সালে সবার মূল্য লক্ষ ছিলো দেশকে যে কোন মূল্যে স্বাধীন করতে হবে করেছে ও তাই।কিন্তুু বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাই সবার সার্থ নিয়ে ব্যাস্ত। এক কথায় নিজে বাঁচলে বাপের নাম এরকম ধ্যান ধারনা মানুষের। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি করার জন্য।
দারুন একটি পোস্ট আপনার মাধ্যমে পড়তে পারলাম। বর্তমান সময়ে একতা বলতে আর কিছু নেই সবাই নিজেদের সুবিধা নিয়ে ব্যস্ত। নিজেরটা পেলেই সেটাই তার কাছে অনেক কিছু অনেকগুলো উদাহরণ টেনেছেন। প্রত্যেকটা উদাহরণ সত্যিই একতা বদ্ধ হওয়ার বিষয়টি উপলব্ধি করায়। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।