জলপাইগুড়ি থেকে গাংটক পৌঁছানো
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গ্যাংটক যাওয়ার অভিজ্ঞতা। আমাদের গাড়ি চালু হওয়ার কিছুক্ষণ পর আমরা যখন শিলিগুড়ি পার হয়ে গ্যাংটকের রাস্তায় ঢুকলাম তখনকার চারপাশে পরিবেশ দেখার মত ছিলো। ধীরে ধীরে আমরা পাহাড়ের উপরে উঠতে থাকলাম। চারপাশ থেকে যেন চোখ ফেরানো যাচ্ছে না এত চমৎকার পরিবেশ। প্রথমে পাহাড় গুলোকে দূর থেকে দেখতে পাচ্ছিলাম। তারপর ধীরে ধীরে আমরাও পাহাড়ের উপর থেকে আরো উপরে উঠতে লাগলাম। যতই উপরের দিকে উঠতে থাকলাম ততই মনে হচ্ছে যে ওয়েদার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। নিউ জলপাইগুড়িতে নামার পর প্রচন্ড রকম গরম লাগছিলো। তখন আমরা গাড়িতে এসি চালিয়েছিলাম। কিন্তু পাহাড়ের উপরে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এসি বন্ধ করে জানালা খুলে দিলাম। বাইরের ঠান্ডা বাতাস অসম্ভব ভালো লাগছিলো। নিচের ফটোগ্রাফি গুলো দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন যে পরিবেশ কেমন ছিলো।
কিছুদূর পর থেকে আমাদের চোখে পড়লো তিস্তা নদী। আমরা পাহাড়ের উপর দিয়ে যাচ্ছি আর পাশেই নিচ দিয়ে তিস্তা নদী বয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে নদী যেন আমাদের সঙ্গে যাচ্ছে। আমরা যত দূরেই যাই না কেন নদী ও আমাদের সংগ ছাড়ছে না। নদীর কারণে পরিবেশটা আরো বেশি চমৎকার লাগছিল। আমরা কিছু কিছু জায়গায় দাঁড়িয়ে চারপাশে পরিবেশগুলো উপভোগ করছিলাম এবং ফটোগ্রাফি করছিলাম।
আমরা পাহাড়ের অনেক উপরে চলে এসেছি কিন্তু আরো উপরে যাওয়ার বাকি ছিল। দূরে মেঘ আর পাহাড় দেখতে পারছিলাম। আর ভাবছিলাম যে কখন মেঘের মধ্যে আমরাও যাব।
আমরা যেদিন রওনা দিয়েছিলাম সেদিন প্রচণ্ড রকম বৃষ্টি হচ্ছিলো। পরেরদিনও মোটামুটি ভালোই বৃষ্টি হচ্ছিলো। কিছুটা মন খারাপ লাগছিলো যে এরকম বৃষ্টি হলে আমরা কিভাবে ঘুরবো। কিন্তু যতই পাহাড়ে উঠছিলাম ততই মনে হচ্ছিল যেন বৃষ্টি এর সৌন্দর্য আরো কয়েক গুন বাড়িয়ে দিয়েছে।
এত উঁচু পাহাড়ের মাঝে মাঝেই এরকম ব্রিজ তিস্তা নদীর উপর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। একবার তিস্তা নদীর উপর দিয়ে ব্রিজ পার হয়ে যাই আবার কিছুদূর যাওয়ার পর আবারও ঘুরে সেই তিস্তা নদীই চোখে পড়ে।
এখানে রাস্তার উপর দিয়ে অনেক বানর দেখা যায়। কোন একটা গাড়ি গেলেই বানরগুলো দৌড়ে আসে। গাড়ির লোকজন বানরগুলোকে খাবার দেয়। আমাদের জানা ছিল না। আগে থেকে জানলে বানানোর জন্য খাবার নিয়ে যেতাম। এই বানরটি এসেছিলো তার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে খাবারের জন্য। কিন্তু আমাদের কাছে খাবার না থাকার কারণে দিতে পারিনি। এভাবেই বাচ্চাটিকে গলার সঙ্গে ঝুলিয়ে নিয়ে বানর চলাফেরা করছিল।
আমরা প্রায় চার/পাঁচ ঘন্টা জার্নির পর সিকিম শহরে প্রবেশ করি। এর গেট থেকে আবার পারমিশন নিতে হয়। এখানে ভিসার ফটোকপি এবং এক কপি করে ছবি জমা দিয়ে পারমিশন নিতে হয়। তারা আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করছিল কয়দিন থাকবো? পরে শোনার পর তারা আমাদেরকে সাতদিনের পারমিশন দিল এবং একটি কাগজ দিলো। যাওয়ার সময় এই কাগজটি তাদের কাছে জমা দিয়ে ফেরত যেতে হবে।
আরো এক/দেড় ঘন্টা জার্নি করার পর আমরা সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে পৌঁছে যাই। পরবর্তীতে গ্যাংটকের অভিজ্ঞতা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ
@tania
Photographer | @tania |
---|---|
Phone | i phone11 |
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy

বৃষ্টি থাকলে ভ্রমণের আনন্দ কমে যায়। ভয় থাকে যদি আবার বৃষ্টি আসে তাহলে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। আপু আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার ভ্রমণের এবারের পর্বটি তুলে ধরেছেন দেখে ভালো লাগলো। বানরটি অনেক যত্নে তার সন্তানকে আগলে রেখেছে দেখে ভালো লাগলো। যেহেতু সবাই তাদের খাবার দেয় তাইতো মানুষ দেখলেই খাবার খেতে মানুষের কাছে ছুটে আসে।
প্রথম দুই দিন খুব বৃষ্টি ছিল। কিন্তু তিন নম্বার দিন থেকে বৃষ্টি একদম পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিলো। এজন্য আমরা ঘুরে আরাম পেয়েছি। ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।
আসলে বানরটা দেখে মায়া লাগছে মনে হয় একটু খাবার দিতে পারলে আপনার মনে আরও বেশি খুশি লাগতো। তবে সেখানকার নিয়ম মনে হয় অনেকটাই করা তার জন্য সিকিম যাওয়ার আগে আপনাদেরকে আবার নতুন করে অনুমতি নিতে হয়েছে এবং ভিসার ফটোকপি আর ছবি জমা দিতে হয়েছে।
জ্বী ভাইয়া আমার কাছেও খুবই খারাপ লেগেছিল কোন খাবার দিতে পারেনি জন্য। জানা ছিল না। ফেরার সময় অবশ্য খাবার দিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
বৃষ্টি হলে ঘুরাঘুরি করা খুব কষ্টকর। আপনি তিস্তা নদী,পাহাড় আর আকাশের চমৎকার ফটোগ্রাফি শেয়ার করলেন আপু।খুব ভালো লাগে এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখলে।আশাকরি খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বে হয়তো আরো বিশেষ কিছু পাবো।ধন্যবাদ আপনাকেও।
ঠিক বলেছেন আপু কোথাও ঘুরতে গেলে বৃষ্টি হলে ট্যুর টাই মাটি হয়ে যায়। যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার জলপাইগুড়ি টু গ্যাংটক এর জার্নিটা পড়ে বেশ ভালো লাগল। বেশ একটা অ্যাডভেঞ্চার ছিল। পাহাড়ের সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠান্ডা পরিবেশ অনূভূত হওয়া সবকিছুই ছিল চমৎকার। পাশাপাশি আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো ছিল দারুণ। সব কাগজ দেখিয়ে মোটামুটি সাতদিন থাকার অনুমতি পেয়েছিলেন সময় টা একেবারে কম না। এবং বানর ও বানরের বাচ্চার ফটোগ্রাফি টা বেশ লাগছে। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে পোস্ট টা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য আপু।।
জি ভাইয়া পরবর্তীতে আরো অ্যাডভেঞ্চার আছে। সঙ্গেই থাকবেন। পোস্টগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাদের জার্নির সাথি হলাম আপু.... মনে হচ্ছিলো আমিও ফ্লাশব্যাকে চলে গিয়েছি। এই রাস্তা, এই তিস্তা নদী, সিকিম শহরের প্রবেশদ্বার সবকিছুই আমার খুবই পরিচিত। আপনার পোষ্ট এর মাধ্যমে আবারো চোখের সামনে ভেসে উঠলো সব।আপনাকে ধন্যবাদ আপু
পরবর্তী পর্বগুলো পড়লে আপনার স্মৃতিগুলো ভালোমতো মনে করতে পারবেন। ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।
আপনি জলপাইগুড়ি থেকে গাংটক পৌঁছানো এবং আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভবন করলে অনেক কিছু দেখা যায় অনেক কিছু শেখা যায়। তবে এই তৃষ্ণা নদীর অনেক নাম শুনেছি কখনো সামনে থেকে দেখিনি। তবে একটি জিনিস জেনে জেনে অবাক হয়ে গেলাম। বানরগুলো গাড়ি দেখলে সামনে এসে খাওয়ার জন্য। হয়তো আপনারা জানেন না বিধায় বানরগুলোর জন্য খাবার নেন নাই। যাই হোক আপনার পোষ্টটি পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। আপনার ভুবন শুভ হোক এবং সবাই ভালো থাকুন ধন্যবাদ।
আপু এটি তৃষ্ণা নদী নয়, তিস্তা নদী। যার পানি আমাদেরকে দিদি দেয় না। যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
তিস্তা নদী তো মনে হচ্ছে আসলেই আপনাদের সাথে সাথেই গিয়েছিল। কারণ অনেক গুলো ফটোগ্রাফিতে তিস্তা নদী দেখতে পাচ্ছি। তবে ফটোগ্রাফি গুলো জাস্ট অসাধারণ হয়েছে আপু। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক পৌঁছাতে তাহলে ৫/৬ ঘন্টার মতো সময় লাগে। যাইহোক গ্যাংটকের অভিজ্ঞতা জানার অপেক্ষায় রইলাম আপু। আশা করি খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন।
জ্বী ভাইয়া প্রায় ৬ ঘন্টার মত সময় লেগেছিল আমাদের। অবশ্যই পরবর্তী পর্ব দেখলে আরো অনেক কিছু জানতে পারবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।