ভ্রমণ পোস্ট: লালমনিরহাট তিস্তা ব্যারেজ ভ্রমণ ( প্রথম পর্ব)
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
সোমবার, ০৭ ই জুলাই ২০২৫ ইং
অনেকদিন ধরেই ইচ্ছে ছিল তিস্তা ব্যারেজ ঘুরে দেখব। অবশেষে সুযোগ এল এক সকালে। আমি আর আমার এক বন্ধু মিলে বাসে উঠে পড়লাম লালমনিরহাটের দিকে। রংপুর শহর থেকে তিস্তা ব্যারেজের দূরত্ব প্রায় ৭০-৮০ কিলোমিটার। সকালটা ছিল মেঘলা, একটু ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা বাতাস বইছিল। রাস্তার দুপাশে সবুজ ক্ষেত, মাঝেমধ্যে সরু খাল আর গ্রামের মাটির গন্ধ যেন আমাদের আরও বেশি করে আনন্দ দিচ্ছিল। আসলে বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেক টা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে আকাশের সৌন্দর্য আমাকে অনেক বেশি আকৃষ্ট করে তুলছিলো। এছাড়া ও রাস্তার চার পাশে ছিল সবুজ শ্যামল প্রকৃতি।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর আমরা পৌঁছালাম তিস্তা ব্যারেজ, যা ডালিয়া ব্যারাজ নামেও পরিচিত। এখানে পৌঁছেই চোখ আটকে গেল বিশাল বাঁধ আর প্রচণ্ড স্রোতের পানির দিকে। ব্যারেজের গেটগুলো দিয়ে পানি নামছিল তীব্র গতিতে, আর সেই শব্দ যেন নদীরই ভাষা শান্ত, অথচ গম্ভীর। আমরা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য দেখছিলাম। নদীর স্রোত, বাতাস আর নীল আকাশ একসাথে মিলে এক অনবদ্য পরিবেশ তৈরি করেছিল। নদীতে বেশ ভালোই পানি ছিল। পানির স্রোতের চাপ ও ছিল অনেক বেশি।সব মিলিয়ে দারুন একটি দৃশ্য। সেদিন দর্শকদের ও উপচে পড়া ভিড় জমেছিল। কেননা, সেদিন দিন টা ছিল অনেকটা ঠান্ডা।
ব্যারেজের আশপাশে অনেক মানুষ ঘুরতে এসেছে। কেউ পরিবার নিয়ে পিকনিক করছে, কেউ ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে খেলছে, আবার অনেকে শুধু নদীর পাশে দাঁড়িয়ে থাকছে চুপচাপ। আমাদের মতো তরুণরাও ছবি তুলছিল, গল্প করছিল, কেউ কেউ ভিডিও বানাচ্ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য।আমরাও ছবি তুললাম, নদীর ধারে হাঁটলাম, কিছু পাথরের ওপর বসে স্রোতের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। তিস্তার পানি এত পরিষ্কার আর টলমল করছে দেখে মুগ্ধ না হয়ে উপায় ছিল না। নদীর ওপারে বিস্তীর্ণ চর দেখা যাচ্ছিল, আর মাঝে মাঝে কিছু পাখি উড়ে বেড়াচ্ছিল আকাশে।
ব্যারেজের পাশে কিছু ছোট দোকান রয়েছে যেখানে পানি, চা, স্ন্যাকস আর সাধারণ দেশি খাবার মেলে। আমরা এক দোকানে ঢুকে গরম গরম ভাত, আলুভর্তা, ডাল আর ডিম ভাজি খেলাম। খাবার খুবই সাধারণ, কিন্তু এখানে বসে খাওয়ার আনন্দ একদম আলাদা। মনে হচ্ছিল প্রকৃতির মাঝেই বসে খাচ্ছি, কোন তাড়া নেই, কোন শব্দ নেই শুধু নদীর ঢেউ আর বাতাসের শব্দ।খাওয়া শেষে নদীর পাড়ে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম। চারপাশের দৃশ্য এত সুন্দর লাগছিল যে সময় যেন থেমে গিয়েছিল। বন্ধুর সঙ্গে জীবনের নানা কথা হলো, অনেক পুরনো স্মৃতিও ঝালাই করে নিলাম।বিকেলের দিকে সূর্য একটু একটু করে নিচে নামছিল। তখন নদীর জলে সূর্যের আলো পড়ে তৈরি হচ্ছিল সোনালী ঝিলিক।
সেই দৃশ্য দেখে মনটা আরও বেশি শান্ত হয়ে গেল। শেষবারের মতো নদীর ধারে দাঁড়িয়ে একটু সময় কাটিয়ে আমরা একটি রিকশায় চেপে রওনা দিলাম ফিরতি পথের দিকে।ফেরার সময় মনে হচ্ছিল, যেন কোথাও খুব আপন একটা জায়গা রেখে যাচ্ছি। তিস্তা ব্যারেজ আমাদের শুধু প্রকৃতি দেখায়নি, মনটাকেও অনেক হালকা করে দিয়েছে।এই ভ্রমণ আমাদের জন্য ছিল একদিনের স্বস্তি, ভালো লাগা আর নিজের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ। শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে এসে প্রকৃতির এই শান্ত পরিবেশ সত্যিই ভুলে যাওয়ার মতো নয়।
যদি তুমি নদী ভালোবাসো, প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে চাও, আর কিছুক্ষণের জন্য হলেও নিজের মনের কথা শুনতে চাও, তবে তিস্তা ব্যারেজ একবার ঘুরে আসতেই হবে।
তিস্তার জল যেমন বয়ে চলে দূরের পথে, তেমনি এই ভ্রমণের স্মৃতিও রয়ে যাবে আমাদের মনে অনেক দিন।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Daily task
https://x.com/Riyadx2P/status/1942165267062329437?t=jRULfk0zqdj9G_navGyCng&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1942165459111203097?t=jRULfk0zqdj9G_navGyCng&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1942165627013345700?t=jRULfk0zqdj9G_navGyCng&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1942166009441558612?t=jRULfk0zqdj9G_navGyCng&s=19
লালমনিহাট তিস্তা ব্যারেজ ভ্রমণের অনেক সুন্দর মুহূর্ত তুলে ধরেছেন। জায়গাটি সত্যি অনেক সুন্দর। আমার কাছে তো ভীষণ ভালো লেগেছে ভাইয়া।