আহসান মঞ্জিল জাদুঘর ভ্রমনের চতুর্থ পর্ব।।
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল আছি। মানুষের জীবনটা আর কয় দিনের। সকাল বেলা অফিসে এসেই একটি দুঃসংবাদ শুনলাম। আমাদের অফিসের মালামাল আনা নেওয়ার জন্য মামুন নামের একটি ছেলে গাড়ি ভাড়া দিতো। আজকে অফিসে এসে তার টাকা নেওয়ার কথা ছিল। সে না আসার কারনে স্যার সকাল বেলা তার মোবাইলে ফোন দিলো। ফোন রিসিপ করেই মামুন কান্না শুরু করে। স্যার তাকে জিঙ্গেস করে কি হয়েছে। সে বলে তার বড় ভাই গতকাল চট্রগ্রাম থেকে আসার পথে কুমিল্লা নেমে ইফতারি কিনে আবার গাড়িতে উঠবে এমন সময় একটি প্রাইভেটকার এসে সোজা তার ভাইয়ের উপরে তুলে দেয়। ঘনাস্থলে সাথে সাথে তার ভাই মারা যায়। ছেলেটা পাঁচ থেকে ছয় মাস হয়েছে নতুন বিয়ে করেছে। এই নিউসটা আমার আজকের পোষ্টের সাথে কিছুটা মিল রয়েছে। তাই উল্লেখ করলাম। চলুন এবার মূল বিষয়ের আলোচনা শুরু করা যাক।
আজকে আমি আপনাদের সাথে আহসান মঞ্জিল জাদুঘর ভ্রমনের চতুর্থ পর্ব শেয়ার করবো। আজকের পর্বেটা দেখলে আমার মত আপনাদের মনটাও নরম হয়ে যাবে। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, “মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নয়”।
মানবজীবনের সার্থকতা তার কর্মে প্রতিফলিত হয় । বয়স বা জীবনের স্থায়িত্ব দ্বারা মানুষের সাফল্য নির্ণয় করা হয় না। সময়ের অনন্ত প্রবাহে মানবজীবনের স্থায়িত্ব বেশি নয়। মানুষ খুব অল্প সময়ের জন্যই পৃথিবীতে আসে। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তাকে জীবনের র্কম বা কর্তব্য সম্পাদন করতে হয়। আর এই সম্পাদিত কর্ম দ্বারাই নির্ণীত হয় জীবনের সার্থকতা কিংবা ব্যর্থতা। যারা সময়কে কাজে লাগিয়ে জীবনের স্বল্প পরিসরে মহৎ কর্ম সাধন করতে পারেন, মানুষ ও মানবতার কল্যাণে। নিজেকে নিয়ােজিত রাখতে সমর্থ হন, তারা মৃত্যুর পরও মানুষের মন থেকে হারিয়ে যান না। তাঁদের কর্মের মাহাত্ম তাদের মানুষের মনে স্থায়ী আসন দান করে। যুগের পর যুগ মানুষ তাদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে। মরণ তাঁদেরকে ছিনিয়ে নিলেও তাদের কর্ম-কীর্তিকে ছিনিয়ে নিতে পারে না। কৃতী মানুষেরা তাদের কর্মগুণে বেঁচে থাকেন মানুষের অন্তরে। তাদের জীবনের সার্থকতা পরিমাপ করা হয় কর্ম দিয়ে। বয়সের হিসাবে তাঁদের জীবনের মেয়াদ নির্ণীত হয় না।
যারা দীর্ঘদিন বেঁচে থেকেও মহৎকর্ম সম্পাদন করতে পারেন না, তারা তাদের মৃত্যুর সাথে সাথে হাওয়ার মত চিরতরে হারিয়ে যায়। পৃথিবীর মানুষ তাদের সহজেই ভুলে যায় । তাদের বাঁচার হিসাব বয়স দ্বারা নির্ধারিত হয়। এসব মানুষের জীবন সময়ের অনন্ত স্রোতে তলিয়ে যায় । তাই সংক্ষিপ্ত মানবজীবনকে দীর্ঘায়িত করতে প্রয়ােজন মহৎ কর্মসম্পাদনা। কর্ম-গৌরব ছাড়া সংক্ষিপ্ত মানবজীবনকে মানুষের মাঝে বাচিঁয়ে রাখার আর বিকল্প উপায় নেই। যে সকল মনীষীর নাম আজও মানুষের মুখে মুখে পৃথিবীর দিকে দিকে উচ্চারিত হয়, যাদের আমরা পরম শ্রদ্ধাভরে আজও স্মরণ করি তাঁরা ছিলেন মহান কর্মবীর। কর্মগুণেই তারা মানুষের মনে বেঁচে আছেন ও বেঁচে থাকবেন। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক,হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী,নওয়াব সলিমুল্লাহ, খান বাহাদুর নওয়াব আলী চৌধুরী, মহাত্মা গান্ধী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, নেলসন ম্যান্ডেলা, সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবী প্রমুখ মনীষীগণের দৈহিক মৃত্যু তাঁদের মানুষের মন থেকে কেড়ে নিতে পারেনি। তারা তাদের জীবনের বয়সকে অতিক্রম করে আজও পৃথিবীতে বেঁচে আছেন।
এমনি হাজারো স্মৃতি বিজড়িত কিছু জিনিষ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। ফটোগ্রাফির সাথে সাথে নিচে বর্ণনা উপস্থাপন করছি।
উপরে ছবিতে যাদের দেখতে পাচ্ছেন তারা সবাই মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার সদস্য। তারা সবাই সম্মিলিত ভাবে ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। আজ তারা নেই তাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত দল বাংলার জমিনে রয়েগেছে। তারা আজও তাদের কর্মের মাধ্যমে মানুষের মাঝে বেচেঁ আছে।
এখানে দেখতে পাচ্ছেন বড় ছবিতে দেখানো হয়েছে খাজাঁ নওয়াব সলিমুল্লাহ ও তৎকালীন আমলে কয়েকজন ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় লর্ড কার্জন ও লর্ড বেন্টিংক। তাদের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় উপমহাদেশকে শাষন করেছেন।
এখানে দেখানো হয়েছে নবাবদের কিছু পান পাত্র। এগুলো কয়েক শত বছরের পুরনো। আগের দিনের জিনিষ গুলোর মধ্যে সব কিছু নিখুঁত ছিল। যার জন্য এত বছর পরেও এগুলোর কিছু হয় নি।
এই পোল খেলার জায়গাটা দেখে আমার মনটা অনেক নরম হয়ে গেছে। জায়গাটা দেখে আমার মনে হচ্ছে হয়তো কিছুক্ষণ আগে তারা পোল খেলে গেছে। আমি মনের চোখ দিয়ে দেখতেছি চেয়ার গুলোতে মানুষ বসে আছে খেলার জন্য। নবাবরা আজকে নেই কিন্তুু তাদের খেলার ঘরটা আজও তাদের স্মৃতি ধারন করে আছে। খুব নিস্তব্দ নিরব লাগছে জায়গাটা।
এখানে দেওয়ালে কিছু মহিষের মাথা লাগানো আছে। নবাবরা হরিণ শিকার করে মাথা গুলো প্রমান স্বরুপ এখানে রেখে দিয়েছে। তাদের পরবর্তি প্রজন্মকে দেখানোর জন্য। নবাবদের কোন প্রজন্ম এখনো বেচেঁ আছে কিনা সেটা আমি জানি না।
এগলো হলো নবাবদের সিন্দুক। নাবাবরা খাজনা আদায় করে এসব সিন্দুুকে জমা রাখতেন। সিন্দুক গুলো লোহার তৈরী অনেক মজবুত। এরকম সিন্দুুক এখন আর তেমন দেখা যায় না।
বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই। আহসান মঞ্জিলের ভিতরে যা কিছু দেখলাম আজকে সেগুলোর অল্প কিছু শেয়ার করলাম। কেমন হলো আজকের পোষ্ট অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। আবার দেখা নতুন কিছু বিষয়ের আপডেট নিয়ে।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
জাদুঘরের নাম | আহসান মঞ্জিল জাদুঘর |
স্থান | আহসানুল্লাহ রোড,নওয়াব বাড়ি, ঢাকা । |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
তারিখ | ২১-০২-২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মের মধ্যে বয়সের মধ্যে নয়। আপনার পোস্টের মাধ্যমে আজ আমরা তাই উপলব্ধি করতে পারলাম । আহসান মঞ্জিল ভ্রমণ করে আপনি যারা ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করে গেছে তাদের ছবি শেয়ার করেছেন ।আসলেই তাদের অবদানে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। এসব ইতিহাস আমাদের জানা দরকার।
জী আপু যারা মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেছে আজকে তাদের কোন খবর নাই। ধন্যবাদ আপু।
জি ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন মানুষ কর্মের মাধ্যমে তার স্থান করে নেয়। ভাইইয়া আপনি হাসান মঞ্জিল জাদুঘরের খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। লোহার তৈরি সিন্দুক গুলো খুবই সুন্দর লাগছে। দেখে বোঝার উপায় নাই যে এগুলো লোহার তৈরি মনে হয় কাঠের তৈরি। খুবই খারাপ লাগলো মামুনের বড় ভাইয়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর কাহিনী শুনে।
জী আপু মামুনের ভাইয়ের জন্য আমারও অনেক খারাপ লেগেছে।
আপনাদের অফিসে গাড়ি ভাড়া দেয়া মামুনের ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা পড়ে খুব খারাপ লেগেছে। আল্লাহ যেন তার ভাইয়ের আত্মার মাগফেরাত দান করেন। আপনি আহসান মঞ্জিলের কিছু নিদর্শন অনেক সুন্দরভাবে বর্ণনা এবং ছবির মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। আমিও আহসান মঞ্জিল কয়েকবার গিয়েছি তবে এত ডিটেইলস জানা হয়নি। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক তথ্য পেয়েছি ।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া আরেকবার গেলে জাদুঘরের ভিতর থেকে সব কিছু জেনে আসবেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ঠিক বলছেন ভাইয়া মানুষের জীবন বড় অনিশ্চিত এই ছোট্ট জীবনে মানুষের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে যায় যা সবকিছু ঠিকমতো করে চলে যেতে হয় মানুষকে। তবে এই ছোট্ট জীবন অনেকেই সফলতা অর্জন করে আবার অনেকে ব্যর্থ জীবন নিয়ে চলে যাই। আহসান মঞ্জিলের সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন আপনি আজকে আজকের পর্বটি আমার অসাধারণ লেগেছে। আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে তৎকালীন মুসলিম লীগ গঠনের পুরো সদস্য কমিটিকে দেখতে পেলাম। এছাড়াও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি ছিল যা দেখার মতো ছিল।
জী আপু ঠিক বলেছেন। ছোট এই জীবনে কর্মই মানুষকে বাচিয়ে রাখে। ধন্যবাদ আপু।
কোথায় আছে ভাইয়া মানুষ বাঁচে তার কর্মের মাধ্যমে বয়সের মাধ্যমে নয়। অনেক কৃতিমান মানুষ আমাদের মাঝে এখনো রয়ে গেছে যারা তাদের কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন। ভ্রমণের মহূর্ত পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া।
জী আপু আমাদের মাঝে অনেক মানুষ রয়েছে যারা কর্মের মাধ্যেমে বেচেঁ আছে। ধন্যবাদ আপু।