সৈয়দপুর শিল্প ও পণ্য মেলায় আমার একান্ত কিছু মুহূর্ত ।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে সৈয়দপুর মেলায় আমার একান্ত কিছু মুহূর্তের অনুভূতি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

জীবনের প্রতিদিনের ব্যস্ততা মাঝে হঠাৎ করে কোনো আনন্দঘন মুহূর্ত যদি এসে পড়ে, তা যেন একটুখানি প্রশান্তির ছায়া হয়ে ধরা দেয়। শহরের কোলাহল আর দায়িত্বের ভারে আমরা কখনও কখনও নিজেদের হারিয়ে ফেলি। ঠিক তখনই যদি একটা মেলার কথা কানে আসে, মনটা যেন আবার বাচ্চা হয়ে ওঠে।চোখে আনন্দের দীপ্তি, মনে ঘোরার তাগিদ। সৈয়দপুরে এক জরুরি কাজে গিয়ে এমনই এক আকস্মিক আনন্দের সাক্ষাৎ পাই।সৈয়দপুর শিল্প ও পণ্য মেলা।মেয়ে মানুষদের তো মেলার নাম শুনলেই মন নেচে ওঠে, আমিও তার ব্যতিক্রম নই। মনে হলো, একটুখানি ঘুরে দেখলে মন্দ হয় না।তাই কাজ শেষ হওয়ার পর, আর দেরি না করে একটা রিকশা ঠিক করে সরাসরি রওনা দিলাম মেলার উদ্দেশ্যে।

মেলার গেটের কাছে পৌঁছেই চোখে পড়ল রঙিন পোস্টার আর বড় সড় ব্যানার। সেখানে মেলার নানা তথ্য, আকর্ষণীয় শিল্পকর্মের ছবি, আর ছোটদের রাইডের ছবি দেখে মনটা আরও উৎসাহে ভরে গেল। গেটে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটলাম ।একখানা ছোট কাগজের টুকরো, কিন্তু তাতে ছিল আনন্দের এক নতুন জগতের চাবিকাঠি।ভিতরে পা রেখেই যেন রঙের বিস্ফোরণ। একপাশে বাহারি কৃত্রিম ফুলের দোকান, যা দেখে মনেই হয় না যে ফুলগুলো আসল না। তার পাশে সাজানো আছে হাতের কাজের হস্তশিল্প ।বাঁশের তৈরি ঝুড়ি, ট্রে, আর কত কী! সেগুলোর নিখুঁত কাজ দেখে একদম অবাক হয়ে গেলাম। হাতে হাতে ধরা হয়েছে সৃষ্টির শৈল্পিকতা, আর তাতে উঠে এসেছে আমাদের দেশের মাটির ঘ্রাণ।

আরেকপাশে ছিল বড় আকর্ষণ ফেরিস হুইল! নানা রঙের কেবিনে ঘুরছে ছোট-বড় সবাই। বাতাসে ভাসতে থাকা সে রাইড দেখে আমার ভেতরেও যেন ছোটবেলার আনন্দ ফিরে এলো। যদিও আমি উঠিনি, কিন্তু পাশ থেকে দাঁড়িয়ে শিশুদের খুশি মুখগুলো দেখে নিজের মুখেও একটা হাসি লেগেই রইল।মেলার ভেতরে হেঁটে হেঁটে চোখে পড়ল নানা দরকারি পণ্যের দোকান। কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস পছন্দও হলো, সেগুলো কিনে নিলাম। কোথাও ফুলের ঘ্রাণ, কোথাও হাসির শব্দ, কোথাও ছোটদের চিৎকার।সব মিলিয়ে এক প্রাণবন্ত পরিবেশ, যেন জীবনের কিছুটা শান্তি এনে দিল ব্যস্ত দিনের শেষে।

চারিদিকে ভালোভাবে ঘুরে, কিছু দরকারি ও পছন্দসই জিনিসপত্র নিয়ে মেলা থেকে বেরিয়ে পড়লাম বাড়ির পথে। সত্যি বলতে, ব্যস্ত জীবনের মাঝে এমন এক আকস্মিক আনন্দদায়ক ঘোরাফেরা মনকে হালকা করে দিল। হঠাৎ পাওয়া এই মেলার অভিজ্ঞতা যেন অনেকদিন পরে পাওয়া একটি সুন্দর উপহার শুধু নিজের জন্য।এই ছোট্ট সফর, এই অপ্রত্যাশিত আনন্দ, আমাকে উপহার দিল এক অমলিন স্মৃতি।

মেলার প্রতিটি মুহূর্তে ছিল একধরনের নির্মল আনন্দ।রঙিন আলো, মানুষের ভিড়, আর চারদিকে হাসির শব্দে যেন মন জুড়িয়ে গেল।চোখে পড়া প্রতিটি জিনিসেই ছিল সৃজনশীলতার ছোঁয়া।অনেকদিন পর এমন আনন্দে ভরা একটা দিন কাটালাম।সবশেষে প্রিয় মুহূর্তটা ক্যামেরা বন্দি করলাম। বোরকা পরা অবস্থায় নিজের একটা ছবি তুললাম রাইডের পেছনে দাঁড়িয়ে। চোখে ছিল তৃপ্তি, মনে ছিল আনন্দের ছোঁয়া। সেই ছবি আমার স্মৃতির অ্যালবামে সবচেয়ে রঙিন পাতার একটি হয়ে থাকবে।এই স্মৃতিগুলো হয়তো সময়ের সঙ্গে মুছে যাবে,তবুও ছবিগুলো থেকে যাবে মনে হাসি ফোটানোর মতো করে।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।