কক্সবাজার: পরিবারের সঙ্গে এক আবেগঘন যাত্রা
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই ? আশা করি আপনারা সবাই বেশ ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি নতুন এটি ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আজকে আমার ব্লগের বিষয় হলো ভ্রমণ। আসলে ভ্রমণ গুলোকে আমি ব্লগের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারলে ভীষণ ভালো লাগে। তাই আমি চেষ্টা করি সপ্তাহে কমপক্ষে ভ্রমণের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। ভ্রমণের পোস্টগুলো শেয়ার করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমি আশা করি আপনাদের সবার আজকের পোস্টে অনেক বেশি ভালো লাগবে। নিচে আমার ভ্রমণের পোস্টটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করা হলো। কেমন হয়েছে তা অবশ্যই জানাবেন।



আজকাল জীবনের ব্যস্ততা এতটাই বেশী যে মানসিকতা একদম ভালো রাখতে পারি না। অফিসের অযথা কাজের চাপ, সাংসারিক, পারিবারিক সব কিছু মিলিয়েই যেন জীবনটা হয়েগেছে দূর্বিসহ। এমন দূর্বিসহ জীবন কে যদি কিছুটা স্বস্থি দেওয়া যায় তাহলে কিন্তু জীবন ফিরে পায় কিছুটা শান্তি আর নতুন ঠিকানা। আর তেমন একটু স্বস্থি আর শান্তির জন্যই ঈদের ছুটিতে আজ পূর্বে নিয়ে রওনা দিলাম ঢাকা থেকে বহুদূর। সমুদ্রের স্রোতে নিজেকে একটু স্বস্তি দিতে। অবশ্যই! নিচে আপনার দেয়া অভিজ্ঞতা ও ঘটনার উপর ভিত্তি করে প্রায় ১০০০ শব্দের একটি আবেগঘন ও ভ্রমণভিত্তিক ব্লগ/স্টোরি ব্লক তৈরি করে দিচ্ছি। আপনি চাইলে এটিকে ইউটিউব ভিডিও স্ক্রিপ্ট, ব্লগ পোস্ট, অথবা ভয়েসওভার কনটেন্ট হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।

আজ বিকেলটা অন্যরকম। দিনভর উত্তেজনা, ব্যাগ গোছানো, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি—সবকিছুর মাঝেও একটা অদ্ভুত শান্তি। কারণ আজ আমাদের পরিবার একসাথে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। আমি, আমার হাজব্যান্ড, আর আমার আপুরা। জীবনের ব্যস্ততা থেকে একটু ছুটি নিয়ে, শহরের কোলাহল ছেড়ে, সমুদ্রের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা যেন আমাদের সবার জন্যই খুব দরকার ছিল। বিকেল ৬টা বাজতে না বাজতেই আমরা পৌঁছে যাই ঢাকার ফকিরাপুল শ্যামলী বাস কাউন্টারে। হালকা ট্রাফিক, ধূলিধূসর রাস্তাগুলো, আর বাস কাউন্টারের চারপাশের ছোটখাটো হোটেল, চায়ের দোকান, আর মানুষের ভিড়—সবকিছুই ছিল চেনা, কিন্তু আজকের আবেগে যেন সেগুলোও নতুন লাগছিল।

ফকিরাপুলে পৌঁছেই বাসের লোক আমাদের জানায় যে আমাদের মূল যাত্রা শুরু হবে সায়েদাবাদ থেকে—শ্যামলীর মূল কাউন্টার থেকে। সেই অনুযায়ী আমাদের শাটল বাসে করে সায়েদাবাদের দিকে রওনা হতে হয়। বিকেল তখনও শেষ হয়নি, সূর্য ধীরে ধীরে পশ্চিমে হেলে পড়ছে। ঢাকার চেনা রাস্তা, চেনা যানজটের মাঝেও একটা অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছিল। কারণ আজকে ঢাকা ছিল একেবারে নিরব এবং নিস্তব্ধ।সায়েদাবাদে পৌঁছাতে আমাদের বেশি সময় লাগেনি। সন্ধ্যার আলো আর কৃত্রিম আলোর মিশ্রণে পুরো এলাকা এক অদ্ভুত আবেশে ভরে উঠেছিল। সেখানে পৌঁছে আমরা বুঝি যে মূল বাস ছাড়তে এখনও কিছুটা সময় বাকি আছে। আর এই ফাঁকা সময়টাই যেন আমাদের জন্য একটুকরো প্রশান্তি হয়ে ধরা দিল। আমরা সবাই তখন হালকা ক্লান্ত, কিন্তু মনটা ছিল একেবারে ফুরফুরে। চারপাশে অনেক ভ্রমণপিপাসু মানুষের ভিড়—সবাই যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে, কেউ হয়তো বাড়ি, কেউ ঘুরতে, কেউ প্রিয়জনের কাছে। এর মাঝেও আমাদের নিজেদের ছোট্ট দলে ছিল এক অনন্য উচ্ছ্বাস।

এই সময়টায় আমরা পাশাপাশি বসে গল্প করতে থাকি। আপুরা তাদের অফিসের গল্প করে, আমি আর আমার হাজব্যান্ড নিজেদের ছোট ছোট স্মৃতিগুলো ভাগ করি। মাঝে মাঝে কেউ একজন হালকা ঠাট্টা করে, আর বাকিরা হেসে ওঠে। এমন সময় গরম গরম সিঙ্গারা আর এক কাপ চা নিয়ে বসে যাই সবাই। ছোট্ট এই মুহূর্তগুলোই জীবনের বড় প্রাপ্তি হয়ে থাকে—যা একসময় হয়ে ওঠে মনের খোরাক।বসে থাকতে থাকতে আমরা লক্ষ্য করছিলাম, চারপাশে যাত্রীদের মুখে কত রকম অভিব্যক্তি—উৎসাহ, ক্লান্তি, ভালোবাসা, বিচ্ছেদের হালকা ছায়া—সব মিলে যেন এক জীবন্ত গল্পের বই খুলে বসে আছে। কোনো এক দম্পতি শিশুকে নিয়ে যাচ্ছে ঘুরতে, আবার কোনো এক বৃদ্ধ বাবা-মা হয়তো সন্তানদের কাছে যাচ্ছেন গ্রামে। আর আমরা? আমরা যাচ্ছি কক্সবাজারে—সমুদ্রের কাছে, মুক্ত হাওয়ার কাছে, ভালোবাসার কাছে।

কিছুক্ষণ পর বাস প্রস্তুত হয়। আমাদের সিট নম্বর নিশ্চিত করে আমরা উঠে যাই ভেতরে। ছিমছাম বাস, জানালার পাশে বসে চোখ রাখতেই রাতের ঢাকা নতুনভাবে ধরা দেয়। ইঞ্জিন চালু হলে হালকা কম্পনে শরীর কেঁপে ওঠে, ঠিক তখনই যাত্রার শুরু। অন্ধকারের মধ্যে আলো ছুটছে দ্রুত, আর আমাদেরও মন ছুটে চলেছে।এই যাত্রার একটা মধুর আবেশ থাকে সবসময়। পরিবারের সঙ্গে এমন রাতের সফর মানে শুধু গন্তব্য নয়, বরং পথটাই হয়ে ওঠে স্মৃতিময়। আমরা একে অপরকে নিয়ে, আমাদের সম্পর্কগুলো নিয়ে, জীবনের নানা বাঁক নিয়ে ভাবছিলাম। হয়তো কক্সবাজারে পা রাখার পর আমরা আরও অনেক আনন্দে মেতে উঠব, কিন্তু এই কয়েক ঘণ্টার পথ—এই রাস্তার গল্পটাই আমাদের জীবনের সেরা স্মৃতিগুলোর একটি হয়ে থাকবে।

বাস যখন ধীরে ধীরে ঢাকা শহরের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে, তখন মনে হচ্ছিল—আমরা কেবল একটি জায়গায় যাচ্ছি না, বরং শহরের চাপ, ক্লান্তি, মানসিক জটিলতা—সব কিছুই পেছনে ফেলে রেখে এগিয়ে চলেছি নতুন আলো, নতুন অনুভবের দিকে।
আজকের এই রাত, এই যাত্রা, এই পরিবার—সবকিছু একসঙ্গে মিলেই একটা অনুভব তৈরি করেছে, যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। মনে হচ্ছে, জীবনের ব্যস্ত রুটিন থেকে ছিঁড়ে নিয়ে এই কয়েকটা মুহূর্ত আমাদের অনেক কিছু ফিরিয়ে দিচ্ছে—স্মৃতি, ভালোবাসা, শান্তি।
যাত্রা সবসময়ই একটা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হয়। কিন্তু কিছু কিছু যাত্রা থাকে, যেগুলো গন্তব্যের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়। আজকের এই বিকেল ছয়টার রওনা, শ্যামলীর কাউন্টার থেকে শুরু হওয়া সেই ছোট্ট সময়, আর রাতের আঁধারে ছুটে চলা বাসের গল্প—এসবই একদিন মনে পড়বে গভীর ভালোবাসায়, নরম স্মৃতির মতো।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ভ্রমণ |
---|---|
ক্যামেরা | Vivo y18 |
পোস্ট তৈরি | @maksudakawsar |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমার পরিচিতি
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy

💦💥2️⃣0️⃣2️⃣5️⃣ This is a manual curation from the @tipu Curation Project
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 4/7) Get profit votes with @tipU :)