ট্রাভেল পোস্ট- "মাওয়াঘাট ও পদ্মার পাড় ভ্রমনের ৫ম পর্ব " II written by @maksudakawsarII
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই ? আশা করি আপনারা সবাই বেশ ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি নতুন এটি ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আজকে আমার ব্লগের বিষয় হলো ভ্রমণ। আসলে ভ্রমণ গুলোকে আমি ব্লগের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারলে ভীষণ ভালো লাগে। তাই আমি চেষ্টা করি সপ্তাহে কমপক্ষে ভ্রমণের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। ভ্রমণের পোস্টগুলো শেয়ার করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমি আশা করি আপনাদের সবার আজকের পোস্টে অনেক বেশি ভালো লাগবে। নিচে আমার ভ্রমণের পোস্টটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করা হলো। কেমন হয়েছে তা অবশ্যই জানাবেন।
.png)

আজকাল জীবনের ব্যস্ততা এতটাই বেশী যে মানসিকতা একদম ভালো রাখতে পারি না। অফিসের অযথা কাজের চাপ, সাংসারিক, পারিবারিক সব কিছু মিলিয়েই যেন জীবনটা হয়েগেছে দূর্বিসহ। এমন দূর্বিসহ জীবন কে যদি কিছুটা স্বস্থি দেওয়া যায় তাহলে কিন্তু জীবন ফিরে পায় কিছুটা শান্তি আর নতুন ঠিকানা। আর তেমন একটু স্বস্থি আর শান্তির জন্যই কিছুদিন আগে পরিবারের সকল কে নিয়ে বেড়িয়ে ছিলাম একটি ডে ট্যুরে। মানে ঢাকার কাছেই মাওয়া ঘাট আর পদ্মার পাড়ে সারাটা দিন সবাই মিলে ঘুরে বেডিয়ে ছিলাম কিছুটা আনন্দ নিয়ে। আজ সেই ঘুরে আশার গল্পই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। হয়তো পুরো গল্প শেষ করতে করতে ১০০ পর্ব ও লেগে যেতে পারে। তাতে কিন্তু আমার কোন দোষ নেই। তাহলে চলূন আজ আমরা মাওয়া ঘাট আর পদ্মা নদীর পাড়ে ঘুরে আসার চতুর্থ পর্ব দেখে আসি।

পিচঢালা রাস্তা ছেড়ে আমরা নামলাম নিচে। জায়গাটা একটু কাদা আর পিচ্ছিল হলেও আমরা সাবধানে পা ফেলতে লাগলাম। চারপাশে শুধু সবুজ আর সবুজ। ধান গাছের সরু পথ বেয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনে হচ্ছিল, যেন এক নতুন জগতে প্রবেশ করছি। বাতাসে ধানের গন্ধ, পাশে কোথাও কোথাও পাখির ডাক, আর সামনে পদ্মার নরম ঢেউ। এইভাবে হাঁটতে হাঁটতে আমরা পৌঁছে গেলাম সেই চরের পাড়ে। পদ্মা এখানে আরও বিশাল, আরও গভীর। তখনই চোখে পড়ল, একটি ভ্যানে করে প্রায় দশ-বারো জন তরুণ এসেছে গোসল করতে। তারা বন্ধুবান্ধব, হাসছে, গল্প করছে, জামা কাপড় খুলে পানিতে ঝাঁপ দিচ্ছে। তাদের মধ্যে সেই মুহূর্তে যে আনন্দ, তা ছড়িয়ে পড়ছিল পুরো পরিবেশে। আমরা কিছুটা দূরে বসে এই দৃশ্য উপভোগ করছিলাম। সেই বন্ধুরা নদীতে খেলছে, পানির মধ্যে দাপাদাপি করছে, আর কেউ একজন মোবাইল বের করে ভিডিও তুলছে। তাদের প্রাণচঞ্চলতা দেখেই যেন বোঝা যাচ্ছিল—পদ্মা শুধু একটি নদী নয়, এটি একটি অনুভব, একটি মিলনের জায়গা, যেখানে জীবনের ব্যস্ততা হারিয়ে যায় কিছু সময়ের জন্য। এই সময়টুকু আমাদের জন্যও ছিল একদম স্পেশাল। আমি নিজের মতো করে সেই ভ্যান গাড়িতেই বসে কয়েকটি সেলফি তুললাম। ব্যাকগ্রাউন্ডে পদ্মার চর, বন্ধুরা গোসল করছে, আর আমি বসে আছি হালকা বাতাসে মোবাইল হাতে। এমন মুহূর্ত জীবনে সবসময় আসে না।

পদ্মার পাড়ে বসে আমরা আরও কিছুক্ষণ কাটালাম। নদীর ঢেউয়ের শব্দ, সেই বাতাস, আর চারপাশের জীবনের গতি—সব মিলে যেন একটা আলাদা বাস্তবতা তৈরি হচ্ছিল। সময় যেন আটকে ছিল। তবে আমরা খুব বেশিক্ষণ সেখানে থাকতে পারিনি। জোহরের নামাজের সময় হয়ে যাচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের ফিরে আসতে হলো। নামাজ পড়তে হবে, আবার দুপুরের খাবারও খাওয়া হয়নি। এছাড়া আমাদের ভ্রমণ এখানেই শেষ ছিল না, আরও কয়েকটি জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তাই মন চাইলেও পদ্মার পাড়ে বিকাল পর্যন্ত বসে থাকা সম্ভব হয়নি। ফেরার পথে ধান খেতের সেই সরু রাস্তায় আবার হাঁটলাম। এবার আর আগের মতো উত্তেজনা নয়, বরং এক ধরনের প্রশান্তি। সেই পথের প্রতিটি ধূলিকণা যেন আমাদের শরীরে লেগে রইল, পদ্মার বাতাস যেন হৃদয়ের গভীরে জায়গা করে নিল। জায়গাটা ছেড়ে আসার সময় মনটা ভার হয়ে উঠেছিল। এই কিছুক্ষণের সময়টুকু আমাদের মাঝে এমন ছাপ রেখে গেল, যা সহজে মুছে যাওয়ার নয়। ছোট ছোট মুহূর্ত, হালকা হাওয়া, মানুষের হাসি, নদীর ঢেউ—সবকিছু একসাথে মিলে গড়ে তুলেছিল এক অনন্য অভিজ্ঞতা।


এই ভ্রমণটা ছিল শুধু একটা যাত্রা নয়—এটা ছিল জীবনের প্রতি এক ধরনের উপলব্ধি। পদ্মার তীরে বসে আমরা দেখেছি কীভাবে মানুষ হাসে, আনন্দ করে, জীবনকে উপভোগ করে। সেই বন্ধুদের ভ্যানে আসা, গোসল করা, আমাদের সেলফি তোলা, ধান খেত পেরিয়ে নদীর পাড়ে যাওয়া—সব মিলে এটি হয়ে উঠেছিল এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা। যদিও আমরা বিকাল অবধি থাকতে পারিনি, তবু সেই অল্প সময়ের অভিজ্ঞতাও আমাদের মনের গভীরে গেঁথে গেছে। আগামী দিনে হয়তো আবার কখনো যাবো পদ্মার পাড়ে, কিন্তু এই দিনের কথা, এই হাসি, এই সেলফিগুলো থাকবে আমাদের স্মৃতির অ্যালবামে। এরপর আমরা খোঁজ করতে লাগলাম দুপুরের খাবারের জন্য সুন্দর একটি জায়গা। যেখানে কম দামে ভালো মানের ইলিশ পাওয়া যায়। আমরা কি সেদিন কম দামে ইলিশ খেতে পেরেছিলাম? জানার জন্য চোখ রাখুন আমার পোস্টে।


আশা করি আগামী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারবো যে আমরা কত টাকা ভাড়া দিয়ে কেমন করে সেই স্বপ্নের মাওয়া ঘাটে পৌঁছেছিলাম। আর মাওয়া ঘাটে পৌঁছে সেদিন কি কি করেছিলাম। সে পর্যন্ত আমার সাথেই থাকুন।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ভ্রমণ |
---|---|
ক্যামেরা | Vivo y18 |
পোস্ট তৈরি | @maksudakawsar |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমার পরিচিতি
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
