শীতের রাতে হাতিরঝিলে ঘুরে বেড়ানো অনুভূতি- প্রথম পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই ? আশা করি আপনারা সবাই বেশ ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি নতুন এটি ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আজকে আমার ব্লগের বিষয় হলো ভ্রমণ। ভ্রমন করতে আমি বেশ পছন্দ করি। যদিও ব্যস্ততার কারনে সময় হয়ে উঠে না কোথাও বেড়াতে যাওয়ার। তবুও এরই ফাঁকে যতটুকু সময় পাই তখনই চেষ্টা করি কোথাও না কোথা বেড়াতে যাওয়ার। কারন ভ্রমন করলে যেমন মনটা শান্ত হয়ে যায় তেমন করে ভ্রমন করলে আবার প্রকৃতির কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখা যায়। আর এই জন্যই আমাদের সবার উচিত মাঝে মাঝে ভ্রমনে বেড়িয়ে পড়া। আর তাই তো ভাবছি আমার ভ্রমনের ইতিহাস গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো।

আজকাল যেন জীবনটা একঘেয়ে হয়ে গেছে। যে কারনে মাঝে মাঝে আমাদের দম বন্ধ হয়ে আসে। জীবনটা মনে হয় একই গোলক ধাঁধার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিস যাওয়া থেকে শুরু করে সারা দিন, এমন কি সারা সপ্তাহ ব্যস্ততায় কেটে যায়। আর সে জন্যই তো মাঝে মাঝে মনে হয়, জীবনে শুধু কাজ আর দায়িত্ব নয়, কিছুটা শান্তি ও মুক্তিরও প্রয়োজন আছে। তাই তো কোন সুযোগ পেলেই চেষ্টা করি কোথাও না কোথা বেড়াতে যেতে।

এইতো গত শীতে ঘুরতে গিয়েছিলাম হাতিরঝিলের প্রকৃতি দেখার জন্য। বেশ ইচ্ছে হচ্ছিলো দুজনে মিলে শীতের হাতিরঝিলের রাতের দৃশ্য কে দেখে আসতে। তাই তো দুজনে মিলে শীতের এক কুয়াশা ঘেরা সন্ধ্যায় ছুটে গিয়েছিলাম হাতিরঝিলের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য। সেই সাথে কিছুটা সময় মনের মাঝে সুখ খুঁজে বেড়াতে। শীত মানেই কিন্তু এক অন্য রকমের অনুভূতি। ঠান্ডা হাওয়া, চারদিকে হালকা কুয়াশা আর শীতের আকাশের রং বদল, সব কিছুই যেন অন্য রকমের অনুভূতি। আমরা যখন হাতিরঝিলে পৌঁছালাম তখন মনে হলো শহরের ভেতরেই আরেকটি নতুন পৃথিবীতে ঢুকে পড়েছি। চারপাশের ঝকঝকে আলো পানিতে প্রতিফলিত হয়ে এক যেন এক অনন্য সৌন্দর্য তৈরি করেছিল। বাতাসে শীতের ঠান্ডা ছোঁয়া মনকে আরও প্রশান্ত করে দিচ্ছিল।

হাতিরঝিলের সেই রাতের দৃশ্য আজও যখন মনে পড়ে বেশ আনন্দ পাই। চারদিকে বেশ হট্রগোল থাকলেও সেদিন হাতিরঝিলের পরিবেশে যেন নিস্তব্দতায় ভরা ছিল। সেদিন ছিল শুক্রবার। তাই মানুষের উপস্থিতিও ছিল বেশি। কেউ হাঁটছিল, কেউ গল্প করছিল, কেউবা গরম চায়ের কাপ হাতে বসে ছিল। ছোট ছোট চায়ের দোকানগুলোতে ভিড় জমেছিল। কুয়াশার ভেতর গরম ধোঁয়া উড়তে দেখে মনে হচ্ছিল যেন শীতকে পরাজিত করার চেষ্টা করছে সবাই। আমরা দুজনেও কিন্তু সেদিন গরম গরম চা খেয়েছিলাম শীত কে কমানোর জন্য।

হাতিরঝিলে কিন্তু বেশ সুন্দর প্রকৃতির ছোঁয়া পাওয়া যায়। আলো ঝলমলে লেকের পাশে বসে থাকলে মনে হয় সময় যেন থেমে গেছে, আর যেন উঠতে মনে চায় না। আমরা যখন ব্রিজের ওপরে হাঁটছিলাম তখন দেখছিলাম অনেকেই ছবি তুলছে। আবার কেউ একা বসে নিজের মতো করে সময় কাটাচ্ছে। আসলেই আমাদের জীবনের চাপ, দুশ্চিন্তা, কাজের ব্যস্ততা এসব থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে এমন পরিবেশে সময় কাটানো সত্যিই প্রয়োজন। যাই হোক সেদিন কিন্তু আমরা হাতিরঝিলের যে লঞ্চগুলো সেগুলো উঠতে একদম ভুল করিনি।


রাতের হাতিরঝিল আর কুয়াশা মাখা বাতাস সব কিছু যেন আমাদের কে এক অন্য রকমের আনন্দ দিয়েছিল। আমার স্ত্রী সেদিন লঞ্চে উঠেই জানালার পাশে বসে পড়লো। আর বার বার বলতে লাগলো তুমি ফটোগ্রাফি করও আর আমি ভিডিওগ্রাফি করি। কারন এমন সুন্দর দৃশ্য তো প্রিয় কমিউনিটিতে একটু শেয়ার করতেই হয়। লঞ্চে বসে শীতের বাতাস উপভোগ করতে কিন্তু একদম খারাপ লাগেনি। ঘড়ির কাটায় তখন বাজে রাত আটটা। আমরা লঞ্চে করে হাতিরঝিলের আর এক প্রান্তে পৌঁছে গেলাম। শুধু আমরা নয় আরও অনেক মানুষ ছিল সেদিন। তো আমরা সে রাতে হাতির ঝিলের অপর প্রান্তি পৌঁছে কি করেছিলাম তা না হয় পরের পর্বে বলবো।


সত্যি বলতে হাতিরঝিলের শীতের রাত কিন্তু একবার দেখলে ভুলে থাকা সম্ভব নয়। তাই তো আমাদের প্রত্যেকের উচিত আমাদের ক্লান্ত মনকে নতুন করে শক্তিশালী করার জন্য একবার হলেও হাতিরঝিলের শীতের রাত উপভোগ করা প্রয়োজন।
জানিনা আমার আজকের ভ্রমন পোস্টটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ভ্রমন পোস্ট |
---|---|
ক্যামেরা | Vivo y22s |
পোস্ট তৈরি | @kawsar7731 |
লোকেশন | ঢাকা , বাংলাদেশ |
পরিচিতি
আমি কাউছার আহমেদ। আমার ইউজার নাম @kawsar7731। আমি পেশায় একজন চাকুরী জীবি। ঘুরে বেড়াতে আর প্রিয় মানুষের সাথে হাসি মুখে কথা বলতে আমি বেশ পছন্দ করি। তবে সেই সাথে বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে এবং গল্প করতে। নতুন কে আবিস্কার করা এবং নতুন কে নিয়ে এগিয়ে চলতেও আমি বেশ পছন্দ করি।
.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
