ছোট্ট ভুলের মাশুল

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই সুস্থ আছেন। ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। দেখতে দেখতে শীতের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে।শীত কমাতে বেশ ভালোই লাগছে। হালকা ঠান্ডা হালকা গরম এই আবহাওয়া টা আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। মনের মধ্যে ড্রেস পড়া যায়। ঘোরাফেরা করা যায়। বাচ্চাদেরকে নিয়ে অত চিন্তা থাকে না। বাচ্চারাও মনের আনন্দে ঘোরাফেরা করতে পারে।
প্রতিদিনের মত আজ আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করব। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার একটি ছোট্ট ভুলের কারণে অনেক বড় ভোগান্তিতে পরেছিলাম সেই বিষয়টি।

আমার আর একটি ভুলের কারণে আমার জাতীয় পরিচয় পত্রটি চুরি হয়েছিল। ভুল বললেও ভুল হবে বিশ্বাসঘাতকতা করে একজন আমার ব্যাগ সহ চুরি করেছিল। পার্সে আমার অনেক দরকারি কাগজপত্র ছিল তার সাথে জাতীয় পরিচয় পত্র এবং অনেকগুলো টাকা ও ছিল। চুরি হওয়ার পরে আমি আসলে লজ্জায় কাউকে কিছু বলতে পারেনি। মনে মনে সবাই আমাকে বোকা বলবে।কিন্তু তারপরও আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে চুরি হয়ে যাওয়ার কথাটা আমার পরিবারের সবার সাথে শেয়ার করি। তখন সবাই বলে দু-একদিনের মধ্যে থানায় জিডি করার জন্য তা না হলে জাতীয় পরিচয় পত্রটির পাওয়া যাবে না। আর জাতীয় পরিচয়পত্রটি না পেলে যে কত ভোগান্তি হয় তার কথা আর না বলি।জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়া তো এখন চলাফেরা করা যায় প্রায় সবকিছুতে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হয়। আমি খুব বেশি দেরি না করে আমার হাজব্যান্ড কে দিয়ে থানায় জিডি করাই। আমি ভেবেছিলাম জিডি করার পরপরই হয়তো এটি আমি ফেরত পাব।কিন্তু তা তো নয় এই এক জাতীয় পরিচয় পত্র পেতে আমার প্রায় আড়াই বছর সময় লেগে গেছে। জিডি করার পরে জানতে পারি আবার অনলাইনে একটি আবেদন করতে হবে। কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে অনলাইনে টাকা জমা দিয়ে আবেদনটি করে ফেলি এবং তারপর ওরা বলে যে ফোনে একটি মেসেজ এলে আমি যেন জাতীয় পরিচয়পত্রটি আমার নির্বাচনী অফিস থেকে সংগ্রহ করে নেই। তার কিছুদিন পর প্রথমত ফোনে এটি মেসেজ আসার পর নির্বাচন অফিসে গেলে তারা জানায় জাতীয় পরিচয় পত্র টি এখন পাবো না অনলাইন থেকে যেন একটি কপি বের করে নেই। নির্বাচন অফিস থেকে আমাকে জানায় যে দু'বছর যাবত কোন জাতীয় পরিচয় পত্র আসেনি তাই যেন আমি অনলাইন থেকে একটি কপি বের করে নেই এবং এবং ফটোকপির মতো ওই কপি দিয়ে যেন আমি সব কাজ চালাই। কিন্তু এতে তো আমার কাছে একটুও ভালো লাগছিল না মনের মধ্যে খুঁতখুঁত করছিল আমি মেইন কপিটা হারিয়ে ফেলার কারণে কি এখন শুধু ফটোকপি দিয়ে সব জায়গায় কাজ চালানো যাবে। এটি নিয়ে অনেক চিন্তায় ছিলাম। তারপর অনলাইনে এসে আবারো চেষ্টা করি অনলাইন থেকে একটি কপি বের করে নিয়ে আপাতত চালাতে পারি কিন্তু সেগুরে বালি অনলাইন থেকে কোন ভাবে কপি ও বের হচ্ছিল না। আবার অফিস থেকেও আমাকে কোন কপি দিচ্ছিল না। এটা নিয়ে আমার যে কত কষ্ট হয়েছে কত চিন্তায় পড়ে গেছিলাম। আমি তো আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম যে আর কখনো হয়তো আমি আমার জাতীয় পরিচয় পত্র পাবো না।

সব সময় তো নির্বাচন অফিসে যাওয়া সম্ভব না কারণ আমি তো গোবিন্দগঞ্জে থাকি আর নির্বাচন অফিস গাইবান্ধায়। তাই গাইবান্ধায় সবসময় যাওয়াও হয় না আর নির্বাচন অফিসে যাওয়া হয়ে ওঠে না। আর এটি খোঁজখবরও কারো মাধ্যমে পাচ্ছিলাম না। কিছুদিন আগে গাইবান্ধা যাওয়ার সময় আমি মনে মনে স্থির করে গিয়েছিলাম এবার যত কষ্টই হোক আমি নির্বাচন অফিসে যাব। কারণ আমি আমার জরুরী কাজের সময় এটি যদি না পাই তখন অনেক খারাপ লাগবে। তাই আমার কথার মত আমি গাইবান্ধায় গিয়ে পরের দিনে নির্বাচন অফিসে গিয়েছি।আল্লাহর রহমতে যাওয়ার সাথে আমাকে আমি জানতে পারি যে আমার জাতীয় পরিচয় পত্র টি এসেছে। আর শুনে আমার মনটা অনেক ভালো হয়ে গেল। কিন্তু তারপরও ওনারা দিতে চাচ্ছিলেন না জিডির কপি অনেক কাগজপত্র চাচ্ছিলেন তবে আমি সঙ্গে করে সব কাগজ নিয়ে যাওয়াতে অনেক কষ্টের পরে আমি আমার জাতীয় পরিচয় পত্র থেকে ফিরে পেয়েছিলাম। আমার কি আনন্দ হচ্ছিল মনে হচ্ছিল আমি আমার রেজাল্ট বেরিয়েছে। ছোট ভুলের আড়াই বছর পর মুক্তি পেলাম।

আজকের বিদায় নিচ্ছি। ধন্যবাদ সবাইকে।

Posted using SteemPro Mobile