বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ কেড়ে নিয়েছে আবেগ।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশাকরি সবাই নিরাপদে ও ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ ২৩শে বৈশাখ,গ্রীষ্মকাল, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ. ৬ই মে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ। প্রতি সপ্তাহের ন্যায় আজ একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। আশাকরি বরাবরের মত সাথেই থাকবেন।
আমরা স্কুলে থাকাকালীন কম বেশি সবাই যে রচনাটি পড়েছি তা হলো বিজ্ঞান আশির্বাদ না অভিশাপ। আমরা প্রত্যকে লিখেছি বিজ্ঞান হলো আশির্বাদ. যদিও কিছু ক্ষেত্রে তা অভিশাপে রুপ নিয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞান ছাড়া আমদের পক্ষে চলা অসম্ভব। যেমন ধরুণ, একবেলা ভাত না খেলে চলে কিন্তু মোবাইল ছাড়া এক মুহুর্ত চলে না। আমাদের আষ্টেপিষ্টে বেঁধে ফেলেছে প্রযুক্তি।ঘুম থেকে উঠার পর থেকে ঘুমানো পর্যন্ত আমরা কোন না কোন ডিভাইস দ্বারা চালিত হচ্ছি। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিস্কার আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলছে। এক্ষত্রে একটি প্রবাদ বাক্যের কথা মনে পড়ে গেল," বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ কেড়ে নিয়েছে আবেগ"। এই প্রবাদ বাক্যের সাথে দ্বিমত হওয়ার সুযোগ কম মানুষের আছে।মানুষ এখন রোবটের মত চলছে। বন্ধুরা, আমি আজ বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিস্কারের লিস্টি দিতে আসেনি এসেছি একটি বিষয় নিয়ে আলোকপাত করতে আর তাহলো বিজ্সৃঞান শুধু আবেগ কেড়ে নেয়নি মানুষের জনশীলতাও প্রযুক্তি নির্ভর করে তুলেছে।
একটি মোবাইল হাতে থাকলেই এখন মানুষ সবজান্তা। নিজের বুদ্ধি খাটাতে হয় না। এর মাধ্যমে মুহূর্তেই আমরা সমগ্র বিশ্ব ঘুরে আসতে পারি। সেই সাথে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে থাকে ব্যক্তির সাথে যেমন কথা বলতে পারি, তেমনই পারি।বিশ্বের কোথায় কি হচ্ছে সহজেই জেনে নিতে । জিনিস পত্রের দাম কোন দেশে কেমন,বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবন যাত্রা কেমন তাও জেনে নেয়া সহজ হয়েছে এই মোবাইল এর কল্যানে। যা মোবাইল আবিস্কারের আগে সম্ভব ছিল না। সমগ্র বিশ্ব এখন আমাদের হাতের নাগালে। কিন্তু মোবাইল আমার মনে হয় আমদের সৃজন শীলতাকে কিছুটা হলেও ধবংস করছে। এটা সম্পূর্ণ আমার মত। অন্য কেউ আমার মতের বিরোধীতাও করতে পারেন
সৃজনশীলতা বলতে আমরা যা বুঝি তাহলো মানুষ তার নিজের চিন্তা চেতনাকে কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু তৈরি করা। আর এই নতুন কিছু কেবল তখনই মানুষ সৃষ্টি করতে পারবে যখন সে চিন্তা করতে পারবে। কিন্তু আমরা এখন চিন্তা করাই ছেড়ে দিয়েছি। যেখানে এক টিপেই আমি আমার চিন্তার বিষয় সহজেই পেয়ে যেতে পারি। গুগুল, ইউটিউব,পিন্টারস্ট সহ আরও অনেক সামাজিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। যেমন আমার কথাই বলি কোন কিছুর জানার প্রয়োজন হলেই ঢুকে পরি ইউটিউব,গুগল বা অন্য কোন সাইটে। যা জানার জন্য আমরা আগে বিভিন্ন বই ঘেটে বের করতাম। বা যে বিষয়টি সম্পর্কে ভালো জানে তার কাছ থেকে শিখে নিতাম।কিন্তু এখন আমরা আর তা করি না ঢুকে পরি সামাজিক বিভিন্ন সাইটে। আর সেই কাজ আরও সহজ করে দিয়েছে Ai প্রোগ্রাম। যেখানে আমার চাহিদা লিখার সাথে সাথে সেই চাহিদা মোতাবেক জিনিস তৈরি করে দেবে সে। সেক্ষেত্রে আমাদের আর চিন্তা করার দরকার কি? আর এভাবেই মানুষ তার সৃজনশীলতাকে দিন দিন দূর্বল করে দিচ্ছে। আর এর ফলে মানুষ আজকাল বই পড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। সবাই ডিভাইস নির্ভর হতে চলছে।সবাই আজকাল সহজেই যে কোন কিছু পাওয়ার প্রতি ঝুকছি। কষ্ট বা ধৈর্য দিন দিন কমে যাচ্ছে মানুষের। তাই কমে যাচ্ছে নতুন কিছু সৃস্টি করার তাগিদ।এক্ষেত্র জেন-জি প্রজন্ম এগিয়ে আছে সবচেয়ে বেশি। তবে সৃজনশীলতা কমলেও একথা শিকার করতেই হবে প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা কিন্তু মানুষের দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । এটাই সর্বশেষ আশার কথা। বন্ধুরা, আজ এই পর্যন্তই। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগ নিয়ে। সবাই ভালো থাকুন-নিরাপদে থাকুন। শুভ রাত্রি।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেনী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @selina 75 |
তারিখ | ৬ইএপ্রিল, ২০২৫ ইং |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Link
https://x.com/selina_akh/status/1919790508861514167
https://x.com/selina_akh/status/1919789997122593128
https://x.com/selina_akh/status/1919824019999936662
বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে সহজতর করেছে ঠিকই, কিন্তু সেই সহজতার পেছনে আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের মানবিকতা, আবেগ ও সৃজনশীলতা। প্রযুক্তি মানুষকে বিশ্বজয়ী করেছে, কিন্তু নিজের ভেতরের জগত অনেক সময় অন্ধকারে রেখেছে। এখন সময় এসেছে প্রযুক্তির ব্যবহারকে ভারসাম্যপূর্ণ করার—যাতে আমরা মানুষ হয়েই থাকি, যন্ত্রে পরিণত না হই।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া দিন দিন আমরা যান্ত্রিক হয়ে উঠছি। ধন্যবাদ ভাইয়া।