ছোট গল্প হাবিবের জীবন (পর্ব-০৬)।
পঞ্চম পর্বের পর আজকে ষষ্ঠ পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। পঞ্চম পর্বে হাবিবের বাবা-মা ঠিক হুবহু হাবিবের মত দেখতে একটি ছেলের খোঁজ পায়। সেই ছেলেটিকে হাবিবের বাবা-মা বাড়িতে নিয়ে আসে আর হাবিব মনে করে যত্ন করতে থাকে কিন্তু ছেলেটির কথাবার্তা চলাফেরা কোন কিছুই হাবিবের মত ছিল না শুধু মুখের গঠনটা কিছুটা হাবিবের মত ছিল। হাবিবের বাবা-মা ভাবছিল হয়তোবা হাবিব দীর্ঘদিন তার বাবা-মাকে ছেড়ে দূরে ছিল নতুন পরিবেশে ছিল যার কারণে তার মানসিক চাপ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। যেহেতু হাবিব মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন সেহেতু পরিবার থেকে দূরে চলে যাওয়ায় মানসিক চাপে তার স্মৃতিশক্তি কিছুটা লোপ পেয়েছে। হাবিবের মা ছেলেটাকে হাবিব মনে করে অনেক বেশি যত্ন করত কারণ মায়ের মন সবসময় কোমল থাকে।
এভাবে এক সপ্তাহ পার হয়ে গেল কিন্তু ছেলেটার কোন পরিবর্তন হয় না এমনকি হাবিবের বাবা যখন ছেলেটাকে হাবিব মনে করে আদর করতে যায় তখন ছেলেটা হাবিবের বাবার হাতে কামড় বসিয়ে দেয়। আচরণগত দিক থেকে কোন কিছুই হাবিবের মত মনে হয় না তাই হাবিবের বাবার মনে ক্ষোভ বাড়তে থাকে তার ছেলে হারানোর দুঃখটা যেন কমছেই না। একইভাবে হাবিবের মা যখন ছেলেটাকে হাবিব মনে করে ভালোবাসা দিতে যায় তখন ছেলেটা দূরে সরে যায়। এভাবে এক সপ্তাহ পার হয়ে যায় হঠাৎ এলাকার থানায় খোঁজ আসে, হাবিব এর বাবা মামা হাবিব মনে করে যে ছেলেটিকে বাড়িতে এনে আদর যত্ন করছিল সেই ছেলের বাড়ির লোকজন চলে আসে। থানার পুলিশের সঙ্গে ছেলেটির বাবা-মা হাবিবের বাড়িতে চলে আসে। ছেলেটি যখনই তার বাবা-মাকে দেখে তখন কাছে চলে যায়। তখন হাবিবের বাবা মা বুঝতে পারে আসলে ছেলেটা হাবিবের মত দেখলেও আসলে সে হাবিব নয়।
এলাকার আরো কিছু লোকজন এক সাথে হয়ে পুরো বিষয়টা যাচাই-বাছাই করার পরে স্থানীয় থানার পুলিশের মাধ্যমে ছেলেটাকে আবার তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু মাঝ থেকে হাবিবের বাবা-মা আবারো হাবিবকে হারানোর সুখে পড়ে যায় তাদের মানসিক ভারসাম্যহীন সন্তান হাবিব কোথায় আছে সেটা কেউ জানে না আজ অব্দি বেঁচে আছে নাকি মারা গিয়েছে সেই খোঁজ কেউ দিতে পারেনি বিভিন্ন থানায় পত্রিকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় হাবিবের ছবি দিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হয় কিন্তু কোন পজেটিভ নিউজ তাদের কাছে আসে না। দিনের পর দিন যায় কিন্তু হাবিবের মা-বাবার ছেলে হারানোর টেনশন যেন কমে না। শেষ বয়সে হাবিবের বাবা হাবিবের টেনসনে দিনের পর দিন আরও অসুস্থ হয়ে যেতে লাগল। এভাবে প্রায় একটি মাস পার হয়ে গেল।
হঠাৎ একদিন দুপুরবেলায় বাজার থেকে খোজ আসলো হাবিবের বাড়িতে, হাবিবকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এই খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই হাবিবের বাবা মা সবাই একসঙ্গে বাজারে চলে আসল। বাজারের যে লোকটি হাবিবকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসত সেই লোকটির মাধ্যমে খোঁজ পেল যে যশোর রেলওয়ে স্টেশনে হাবিবের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বাজারের একজন নাপিতের শ্বশুরবাড়ি যশোরে, তারা যখন যশোর স্টেশনে নামে তখনই হাবিব তাদেরকে দেখে দৌড়ে ছুটে আসে আর তারাও হাবিবকে সহজেই চিনতে পারে। হাবিবের খোঁজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই লোকটি বাজারে ফোন করে হাবিবের খোঁজ জানিয়ে দেয়। হাবিব বারবার লোকটির কাছে শুধু তার বাবা আর মায়ের কথা বলছিল। লোকটি হাবিবকে বলছিল আচ্ছা আমি এখনই তোকে বাড়িতে নিয়ে যাব।
হাবিব খুব খুশি তার গ্রামের পরিচিত লোক পেয়েছে কয়েক মাস ধরে অপরিচিত সব লোকেদের মাঝে থেকে হাবিব যেন অনেকটা মানসিক চাপে ছিল। মানসিক ভারসাম্যহীন একটা ছেলে চেনা নেই জানা নেই অজানা একটা এলাকায় এসে অপরিচিত সব মানুষের মধ্যে থাকতে গেলে কতটা মানসিক চাপ তৈরি হয় সেটা আর কারো বোঝার বাকি নেই। লোকটা প্রথমে হাবিবকে নিয়ে গিয়ে একটা হোটেলে বসিয়ে পেটপুরে ভাত খাওয়ালো তারপরে হাবিবের এলাকার ট্রেনে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হল। হাবিবের খুঁজে পাওয়ার ঘটনা আবার এলাকায় ছড়িয়ে গেল এবার যে আসল হাবিবকে খুঁজে পেয়েছে সেই সংবাদটা এলাকায় ছড়িয়ে যাওয়ায় সবাই আবার হাবিবের বাড়িতে ভিড় জমালো সেই সাথে হাবিবের বাবা-মায়ের চোখে মুখে যেন স্বস্তির হাসি। সবাই অপেক্ষা করছিল কখন হাবিব বাড়িতে পৌঁছাবে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

তাহলে অবশেষে আসল হাবিবের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এখন হাবিবের বাড়ি ফিরে আসার পালা। প্রত্যেকটি পর্ব পড়েছি ভালো লেগেছে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
0.00 SBD,
0.68 STEEM,
0.68 SP
অবশেষে হাবিবকে পাওয়া গেলো। খুবই ভালো লাগছে জেনে।কতটা অসহায় একটি ছেলে মা-বাবাকে ছেড়ে এতোটা দিন।যাক মা-বাবা ও এখন স্বস্তি পাবে।
0.00 SBD,
0.67 STEEM,
0.67 SP
নকল হাবিবকে তাহলে তার মা বাবা নিয়ে গিয়েছে। যাইহোক অবশেষে তাহলে হাবিবকে খুঁজে পাওয়া গেলো। ব্যাপারটা জেনে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। এই গল্পের প্রতিটি পর্ব পড়তে খুব ভালো লাগছে। এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
0.00 SBD,
0.65 STEEM,
0.65 SP
যদিও হাবীব বেশ কিছু দিন অপরিচিত জাগায় অচেনা মানুষের মাঝে ছিল একটু খারাপ লাগাটা স্বাভাবিক। শেষে হাবিব তার প্রিয় জনদের কাছে ফিরে এসেছে শুনে খুশি হয়েছি।
0.00 SBD,
0.64 STEEM,
0.64 SP
এইবার যেহেতু হাবিব নিজে থেকেই এগিয়ে এসেছে নিজের এলাকার মানুষকে দেখে তাহলে আগেরবারের মতো ধোকা হবে না।এখন তার বাবা মায়ের কাছে পৌঁছানোর অপেক্ষা শুধু,যাইহোক শেষ পর্বে জানা যাবে।ধন্যবাদ দাদা
0.00 SBD,
0.62 STEEM,
0.62 SP