ছোট গল্প হাবিবের জীবন (পর্ব-০৭)।
গত সপ্তাহে ষষ্ঠ পর্ব শেয়ার করেছিলাম সেই ধারাবাহিকতায় এই সপ্তাহে সপ্তম পর্ব শেয়ার করেছি। হাবিবের বাবা-মা যখন হাবিবের খোঁজ পেল তখন থেকেই হাবিবের জন্য বিভোর হয়ে অপেক্ষা করছিল কখন তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তান হাবিব আবার বাড়িতে ফিরে আসবে।
সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়ে গেল তখনো হাবিব বাড়িতে ফিরতে পারেনি অবশ্য এলাকার লোকজন যারা হাবিবকে অনেক বেশি ভালোবাসতো তারা যেন হাবিবের জন্য অপেক্ষা করছিল মানসিক ভারসাম্যহীন হাবিব বাড়ি থেকে হারিয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন পরে আবার বাড়িতে আসছে সেই খুশিতে সবাই যেন অপেক্ষায় সময় পার করছে। দুপুর ঘনিয়ে বিকেল হয়ে গেল তখন তাদের স্থানীয় বাজারের এক ব্যক্তির সঙ্গে হাবিব বাড়িতে আসলো। আগে যে ছেলেটাকে হাবিব মনে করে বাড়িতে নিয়ে এসেছিল সে ছেলেটা প্রথমে চুপচাপ ছিল কিন্তু হাবিব বাড়িতে এসেই তার মায়ের কাছে গিয়ে মা বলে জড়িয়ে ধরল আর হাবিবের মা অঝোরে কাঁদতে থাকল।
হাবিব বাড়িতে এসেই তার মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল আর এই দৃশ্য দেখে সবাই তখন বলাবলি করছিল হাবিব ফিরে এসেছে আর আগে ভুল করে হাবিবের মত দেখতে যে ছেলেটাকে নিয়ে এসেছিল সে বাড়িতে আসার পরেই চুপচাপ ছিল আর এটাই আসল হাবিব তাই বাড়িতে এসেই প্রথমেই তার মাকে চিনতে পেরেছে আর মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করছে। হাবিবের বাবা এই দৃশ্য দেখে কাঁদতে শুরু করল হাবিবের বাবা তখন বুঝতে পারল আসলে তার ছেলে হাবিব ফিরে এসেছে। এলাকায় ছড়িয়ে পড়লো মানসিক ভারসাম্যহীন হাবিব হারিয়ে গিয়েছিল সে আবার বাড়িতে ফিরে এসেছে। এলাকার লোকজন হাবিবকে এতটাই ভালোবাসতো যে এই সংবাদ শোনার পর সবারই মন ভালো হয়ে গেল।
ঠিক একইভাবে দলে দলে সবাই হাবিবের বাড়িতে ভিড় জমাতে লাগলো সবাই হাবিবকে দেখতে আসছিল। হাবিবের পরিচিত সবাই হাবিবের সঙ্গে কথা বলছিল হাবিব ও সবার সাথে বেশ হাসিমুখী ভাবেই কথা বলছিল। সবাই বলাবলি করছিল যদি এলাকার নাপিত যদি হাবিবকে দেখতে না পেতো তাহলে হয়তো বা সে আর আসতে পারতো না। হাবিবের পরিবার হাবিবকে হারিয়ে প্রায় দিশেহারা হয়ে পড়েছিল অবশেষে হাবিবকে তারা ফিরে পেয়েছে। ধীরে ধীরে সময়ের সাথে সাথে হাবিবের পরিবারের সবার জীবন স্বাভাবিক হয়ে গেল সেই সাথে হাবিবুর আবার ঠিক আগের মতন চলাফেরা করতে লাগলো তবে হাবিবের বাবা-মা আগের থেকে এখন হাবিবকে একটু বেশি দেখাশোনা করে রাখে। হাবিব সকালবেলা বাজারে গেলে দুপুরবেলায় ঠিক সময় মেনে বাড়িতে ফিরে আসে যেন রুটিন অনুযায়ী চলাফেরা করে।
শুধু হাবিবের পরিবারের লোকজন নয় এলাকার লোকজন হাবিবকে অনেকটা চোখে চোখে রাখে। এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকে হাবিবের জীবন আগের থেকে অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যায়। তাছাড়া হাবিবের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার বোধজ্ঞ জ্ঞান আরো কিছুটা প্রসারিত হয়। আগের থেকে হাবিবের ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা বাড়ে। একসময় ছিল হাবিব কারো থেকে টাকা-পয়সা নিত না কেউ টাকা পয়সা দিলেও হাবিব সেটা ফিরিয়ে দিত কিন্তু কেউ যদি কোন খাবার দিত তাহলে সেটা হাসিমুখে গ্রহণ করত তবে হাবিব সবসময় তার পরিচিত মানুষদের থেকে সবকিছু গ্রহণ করত। যখন বয়স বেড়ে গেল তখন হাবিব ভালো-মন্দ বুঝতে শুরু করল তখন কেউ টাকা দিতে গেলে সেটা গ্রহণ করত এমনকি তার কোন প্রয়োজন হলে সেটা অন্যজনকে জানাত।
বাজারের একজন ধনী ব্যক্তি হাবিব কে বেশ ভালোবাসতো। মূলত সেই লোকটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেমেয়েদের কে দেখলে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করত। হাবিব সেই লোকটাকে বেশ পছন্দ করত আবার সেই লোকটার সঙ্গে বেশ গভীরভাবে মেলামেশা করত সেই লোকটার বাড়িতে গিয়েও খাওয়া দাওয়া করত এমনকি হাবিবকে যেন পরিবারের সদস্য মনে করত। হাবিবের বাবা-মা ভাই বোন সবাই জানত লোকটা হাবিবকে অনেক ভালোবাসে যেন আপন ছোট ভাইয়ের মতোই। এলাকার মানুষজন জানতো লোকটা হাবিবকে বেশ চোখে চোখে রাখে। হাবিবের যখন যেটা প্রয়োজন হতো তখন সেটা এই লোকটির কাছ থেকেই নিতো অর্থাৎ লোকটি এত ভাল ছিল যে পুরোপুরি হাবিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল বলা চলে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

এই পর্বে এসে হাবিব তার বাড়িতে ফিরে এসেছে। হারিয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন একজন মানুষ আবার তার আপন ঠিকানায় ফিরে আসতে পেরেছে গল্পটার এই অংশটা বেশ ভালো লেগেছে।
0.00 SBD,
0.55 STEEM,
0.55 SP
আমাদের সমাজে হাবিবের মত অনেক প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছে। আবার এমন ১০/২০ জন মানুষকে সহায়তা করার মানুষও আছে। সবাই মিলে যদি প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়েদের দিকে একটু নজর দেয়, তাহলে তারা খুবই সুন্দর একটি জীবন অতিবাহিত করতে পারে।
0.00 SBD,
0.54 STEEM,
0.54 SP
হাবিবের গল্প যেনো শেষ ই হচ্ছে না।আসলে শেষে হাবিবের কি হয় এটা জানতে আমি ভীষণ মরিয়া হয়ে উঠেছি।হাবিবকে ফিরে পেয়ে সবাই এখন স্বাভাবিক হয়েছে।এরপর এই ধনী লোকটির সাথে নতুন কি ঘটবে তাই এখন শোনার অপেক্ষায়........
অবশেষে হাবিব তার মা বাবার কাছে ফিরে গিয়েছে,এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। তাছাড়া সেই ধনী লোকটা যেহেতু হাবিবের দায়িত্ব নিয়েছে, আশা করি হাবিবের ভাগ্য ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে শুরু করবে। তখন হাবিব তার মা বাবার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে পারবে। হাবিবের জন্য শুভকামনা রইলো।