শীতের রাতে খেজুরের রস চুরি করতে গিয়ে ভয়ানক অভিজ্ঞতা
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
শীতের রাত। গ্রামের চারদিক কুয়াশায় ঢেকে গেছে। হিমেল হাওয়া গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। দূরে বাঁশঝাড়ের ফাঁক দিয়ে চাঁদের মলিন আলো পড়ে গ্রামের পথটাকে এক অদ্ভুত নীরবতায় মুড়ে রেখেছে। এমন এক রাতে আমরা,আমি, রানা, সোহেল আর মাসুম,নির্ধারণ করলাম খেজুরের রস চুরি করব।আমাদের গ্রামের পাশের জমিতে গফুর কাকুর অনেক খেজুর গাছ। তিনি সকালে রস নামান, তাই রাতে টিনের হাঁড়িতে রস জমে থাকে। আমরা আগেও কয়েকবার চুরি করে খেয়েছি, কিন্তু সেদিনের রাতটা ছিল অন্যরকম। গ্রামের প্রবীণরা প্রায়ই বলত, ওই বাগানে নাকি রাতে এক বৃদ্ধ আত্মা ঘুরে বেড়ায়। আমরা তখন এসব শুনে হাসতাম, কিন্তু সেদিন সেই হাসিটাই গলায় আটকে গিয়েছিল।
রাত প্রায় দুইটা। গ্রামের সবাই তখন ঘুমে অচেতন। আমরা চারজন টর্চের আলো নিভিয়ে নিঃশব্দে গফুর কাকুর বাগানে ঢুকলাম। ঠান্ডা এমন যে নিশ্বাস ফেললেই ধোঁয়া উঠছে। গাছের মাথায় বাঁধা কলসিগুলো অন্ধকারে যেন ভূতের মুখের মতো ঝুলছে। মাসুম ফিসফিস করে বলল, দোস্ত, ওইটা দেখি ভরা মনে হচ্ছে। আমি চুপচাপ এগিয়ে গিয়ে গাছে বাঁধা কলসিটা নামালাম। গরম রসের মিষ্টি গন্ধে মুখে জল এসে গেল।
ঠিক তখনই, পিছন থেকে হুঁউউ… করে এক ভয়ানক আওয়াজ ভেসে এলো। মনে হলো কেউ যেন দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলছে। আমরা সবাই জমে গেলাম। টর্চ জ্বালাতেই দেখি, দূরের গাছটার গোড়ায় কেউ দাঁড়িয়ে আছে,একজন বৃদ্ধ, সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরা, মাথায় টুপি, কিন্তু মুখটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না।
রানা কাঁপা গলায় বলল, কে আছেন?কোনো উত্তর এল না। বৃদ্ধটা ধীরে ধীরে আমাদের দিকে এগোতে শুরু করল। তার হাঁটার শব্দও শোনা যাচ্ছিল না, যেন মাটিতে ভেসে আসছে। সোহেল দৌড় দিতে যাবে, এমন সময় বাতাসে এক ঠান্ডা ঝাপটা এসে গেল, আর কলসিটার ভেতরের রস মাটিতে পড়ে গেল ঝপাঝপ শব্দে।
আমরা চারজন আর দেরি করিনি,প্রাণভয়ে বাগান ছেড়ে ছুটে গ্রামের দিকে দৌড় দিলাম। পিছনে তাকিয়ে দেখি, সেই বৃদ্ধ গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছে, তার চোখে লালচে আলো জ্বলছে।বাড়ি ফিরে দরজা বন্ধ করে সবাই হাঁপাতে হাঁপাতে বসে পড়লাম। কেউ কিছু বলতে পারছিল না। কিছুক্ষণ পর দূর থেকে কুকুরের হাহাকার শোনা গেল। মনে হচ্ছিল, কেউ যেন আমাদের পিছু নিচ্ছে।
পরদিন সকালে গফুর কাকুর বাগানে গিয়ে দেখি, সেই গাছটার নিচে বড় বড় পায়ের ছাপ,কিন্তু মানুষের মতো নয়, যেন পায়ের আঙুল উল্টো দিকে ঘোরানো! গফুর কাকু বললেন, “আমি তো তোমাদের বলেছিলাম, রাতে ওই গাছে যেও না। ওইখানে আমার বাবার আত্মা ঘুরে বেড়ায়। তাঁর মৃত্যুর পর থেকে ওই গাছের রস কেউ নিতে পারে না।
আমরা সবাই নির্বাক হয়ে গেলাম। তারপর থেকে কেউ আর সেই বাগানের দিকে যায়নি। যতবার ঠান্ডা শীতের রাত আসে, আর খেজুরের রসের গন্ধ পাই, আমার মনে পড়ে যায় সেই রাতটার কথা,সেই লালচে চোখওয়ালা বৃদ্ধের ছায়া এখনো যেন কুয়াশার ভেতর আমাকে চেয়ে থাকে…
🙏🤲🙏
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
🎉 Congratulations!
Your post has been upvoted by the SteemX Team! 🚀
SteemX is a modern, user-friendly and powerful platform built for the Steem community.
🔗 Visit us: www.steemx.org
✅ Support our work — Vote for our witness: bountyking5