গল্প-আবার হলো দেখা||

in আমার বাংলা ব্লগ5 days ago

আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার


আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। গল্প লিখতে অনেক ভালো লাগে। তাই যখনই সময় পাই গল্প লেখার চেষ্টা করি। আজকে আমি একটি গল্প লিখে আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।


আবার হলো দেখা:

sea-164989_1280.jpg

Source


তোমাকে পাবার সুপ্ত বাসনা আজও মনে রয়ে গেছে। কিন্তু সময়টা বদলে গেছে। তবুও কেন জানি অপেক্ষায় থাকি। হয়তো ফিরবে তুমি। কিংবা বুঝবে আমায়। কথাগুলো ভাবছিল আর চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছিল নন্দিতা। নন্দিতা সুদীপ্তকে ভালোবেসেছিল। কিন্তু ভালোবাসা আঁকড়ে ধরে বাঁচতে পারেনি। কিংবা তাকে আঁকড়ে ধরে ঘর বাঁধতে পারেনি। সুদীপ্ত বড্ড বেশি রগ চটা। দুজনের সম্পর্কের মাঝে কোথাও যেন অপূর্ণতা রয়ে গিয়েছিল।


নন্দিতা যখন কলেজে পড়ে তখন থেকেই সুদীপ্তর সাথে পরিচয় হয়। দুজনে দুজনকে ভালোবেসেছিল। কিন্তু সুদীপ্ত কেন জানি সব সময় নন্দিতাকে সন্দেহের চোখে দেখতো। তার সন্দেহ নন্দিতাতে বিশাল কষ্ট দিত। নন্দিতা সুদীপ্তকে ভালোবাসতো তাই তার সবকিছুই মেনে নিত। কিন্তু ভেতর ভেতর চাপা কষ্টটাকে তিল তিল করে শেষ করে দিত। এভাবেই দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল। নন্দিতা সব সময় সুদীপ্তকে বোঝাত। কিন্তু সুদীপ্তর সেই রক্তটা স্বভাবের কারণে তাদের সম্পর্কটা ধীরে ধীরে খারাপ হতে শুরু করে।


নন্দিতা আর সুদীপ্তর মাঝে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। নন্দিতা সুদীপ্তকে অনেক বুঝিয়েছে। কিন্তু কোন কিছুতেই যেন কাজ হয়নি। নন্দিতা বড্ড বেশি ভালোবেসে ছিল তাকে। তাই ছেড়ে আসতে পারছিল না। একদিন হঠাৎ করে নন্দিতা জানতে পারে সুদীপ্ত পরিবারের পছন্দের মেয়েকেও বিয়ে করে ফেলেছে। নন্দিতা সেদিন ভীষণ কষ্ট পেয়েছিল। অনেক কেঁদেছিল।


সুদীপ্ত আর নন্দিতার জীবন আলাদা হয়ে গেল। নন্দিতা সুদীপ্তকে তখনো ভীষণ ভালোবাসতো। কিন্তু তাদের মাঝে দেয়াল তৈরি হয়েছে। কারণ সে অন্য কাউকে তার জীবনে জড়িয়েছে। নন্দিতার সাথে সুদীপ্তর কথা হয় না। হয়তো মনের ভুলেও সুদীপ্ত তাকে মনে করে না। কিন্তু নন্দিতা তাকে ভুলতে পারেনি। দেখতে দেখতে কেটে যায় বেশ কয়েক বছর। নন্দিতা এখনো নিজেকে একা রেখেছে। কাউকে তার জীবনের সাথে জড়াতে চায় না সে।


অন্যদিকে সুদীপ্তর স্ত্রী সন্তান সম্ভবা ছিলেন। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যান তিনি। সুদীপ্ত একা হয়ে পড়ে। যদিও এই একাকিত্বের মাঝে সময় গুলো খুবই খারাপ ভাবে কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু তার ছোট্ট সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সব দুঃখগুলো ভুলতে চাইছিল। হঠাৎ একদিন নন্দিতার সাথে তার দেখা হয়ে যায়। নন্দিতা একটি স্কুলে চাকরি নিয়েছে। আর সেই স্কুলেই সুদীপ্ত তার মেয়েকে ভর্তি করেছে। সেখান থেকে আবারও নন্দিতার সাথে তার একটু একটু আলাপের সূচনা হয়। শেষ পর্যন্ত তাদের অভিমান ভেঙে যায়। কিন্তু ভালোবাসাটা আর প্রকাশ করা হয়ে ওঠে না। হয়তো দুজনের মনের ভালোবাসা অপূর্ণই থেকে যায়। কারণ জীবনের বাস্তবতা ভালোবাসাকে শেষ করে দেয়।



আমার পরিচয়

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।