হারিয়ে যাওয়া ব্যাগে ছিল, সবার ঈদের নতুন কাপড়।।
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে একটি ব্যাগ হারানোর গল্প শেয়ার করবো। আশা করি ঘটনাটি পড়লে আপনাদের ভবিষ্যৎ জীবনে কাজে লাগবে।
গত মাসের ২৮ তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার গ্রাম থেকে আমার শাশুড়ি ও ছোট শ্যালিকা আমার বাসায় বেড়াতে আসে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নারায়নগনঞ্জে বাস অথবা ট্রেনে চড়ে দুই ভাবেই আসা যায়।। জল পথে আসার রাস্তা থাকলেও কোন দিন আসা যাওয়া হয়নি। আমি অধিকাংশ সময় ট্রেনেই যাতায়ত করি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যে স্টেশন থেকে বাস ট্রেন ছেড়ে আসে,সেই স্টেশন থেকে আমার শশুর বাড়ি যেতে মাত্র দশ মিনিট সময় লাগে। ঐদিক দিয়ে যানবাহন ব্যবস্থা খুবই ভালো। চব্বিশ ঘন্টাই আসা যাওয়া করা যায়।
আমার শাশুড়ি আর শ্যালিকা বৃহস্পতিবার বিকাল চারটার সময় ভাদুঘর স্টেশন থেকে সোহাগ বাসে চড়ে ঢাকার উদ্যেশ্যে রওয়ানা করে। তারা মাত্র দুই জন মানুষ হলেও তাদের সাথে পাঁচ ছয়টা ব্যাগ ছিল। রমজান মাসে মা তার মেয়ের বাড়িতে আসতেছে,তাই সাথে করে অনেক কিছু নিয়ে এসেছে। এই সমস্ত ব্যাগ গুলো বাসের সাইট বক্সে করে নিয়ে এসেছে। আমার শ্যালিকার সাথে একটি স্কুল ব্যাগ ছিল। সেই ব্যাগের মধ্যে আমাদের বাবু ও আমার কিছু কাপড় সহ তারা দুই জনের কাপড় ছিল। শ্যালিকা এই স্কুল ব্যাগটি বাসের সাইট বক্সে না দিয়ে সাথে রেখেছে। ভৈরব স্টেশন আসার পরে বাসের হেলপার সেই ব্যাগটি দেখে বাসের সিটের উপরে সুটকেস বক্সে রেখে দিয়েছে।
তারা ভৈরব স্টেশন এসে ইফতার করে। ইফতার করার সময় বাসের হেলপারের সাথে তাদের কথা হয়। হেলপারকে ইফতারি করিয়ে শাশুড়ি বলে তাদেরকে যেন সাইনবোর্ড নামিয়ে দেয়। তো ইফতার করে শাশুড়ি আর শ্যালিকার তন্দ্রা চলে আসে। তারা সিটের মধ্যেই হালকা ঘুমিয়ে পড়ে। রাত নয়টার দিকে বাস এসে সাইনবোর্ড থামে। হেলপার তাদেরকে নামিয়ে সাইট বক্সের সব গুলো ব্যাগ নামিয়ে দিলেও বাসের ভিতরে কাপড়ের স্কুল ব্যাগটি রয়ে যায়। তারা বাস থেকে ব্যাগ গুনে অটোতে উঠানোর সময় দেখে স্কুল ব্যাগটি নেই। ততক্ষনে বাস সাইনবোর্ড অতিক্রম করে ঢাকার ভিতরে ঢুকে গেছে।
তাদের সাথে কোন মোবাইল ছিল না। যদি মোবাইল থাকতো আমি স্টেশনে গিয়ে তাদের রিসিপ করে আনতাম। যায়হোক তারা অটো নিয়ে বাসায় চলে আসে। বাসায় এসে আমাকে জানালে আমি সাথে সাথে অনলাইনে কমলাপুর স্টেশনে সোহাগ বাসের কাউন্টারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম। কিন্তুু কমলাপুর স্টেশনের কোন নাম্বার না পেয়ে সায়দাবাদ কাউন্টারের নাম্বারে ফোন দিলাম। তারা আমাকে জানায় তাদের কাউন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। আমি যেন সকাল বেলা এসে কমলাপুর সোহাগ বাসের কাউন্টারে গিয়ে যোগাযোগ করি।
আমি শুক্রবারে সেহরী খেয়ে ফজর নামাজ পড়ে আর ঘুমায়নি। সোজা চলে গেলাম কমলাপুর সোহাগ বাস কাউন্টারে। সেখানে গিয়ে বাসের টিকেট টি দেখিয়ে দায়িত্বরত স্টাফকে বিষয়টা জানালাম। তিনি সেই গাড়ির ড্রাইভার এবং হেলপারের নাম্বার দিলেন। আমার মোবাইল দিয়ে তাদের মোবাইলে কল দিয়ে সেই স্টাফকে ধরিয়ে দিলাম। প্রথমে হেলপার বলে যে, সে রাতে বাস চেকিং করেছে,বাসের ভিতরে কোন ব্যাগ পায়নি। আর তাদের বাসটি বর্তমানে নরসিংদী আছে,যাত্রী নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছে। বাসে ব্যাগ নেই সে কথা শুনে সাথে সাথে আমার টেনশন বেড়ে গেলো। আমি কিছুক্ষন সেই বাস কাউন্টারে বসে চিন্তা করলাম, এখন কি করা যায়।
সেই স্টাফকে আমি জিঙ্গেস করলাম ভাইয়া এখন ব্যাগটা পাবো কোথায়। তিনি আমাকের জানায় যে সাইনবোর্ড থেকে কমলাপুর আসতে বাস বেশ কয়েক জাগায় থামে, আর যাত্রীও নামে। সুতরাং কোন যাত্রী ব্যাগটি নিয়ে নেমে গেছে সেটা তো আমরা বলতে পারি না। আপনি যদি আগে আমাদের ইনফর্ম করতেন, তাহলে আমরা রাতেই সেই ব্যাগের খুঁজ নিতাম। আমি বললাম রাতের বেলা আমি কল দিছিলাম,আপনাদের কাউন্টার বন্ধ হয়ে গেছিলো। তাই সকাল সকাল আসলাম। ভেবেছিলাম আমি এসে বাসটি পাবো,দুঃখের বিষয় হলো আমি আসার আগেই বাস আবার যাত্রী নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যেশ্যে চলে গেছে।
সেই স্টাফ আমাকে বললো হেলপার হয়তো আমাদের ভয়ে মিথ্যা বলতে পারে। সে গাড়ি চেক না করেই বলছে,গাড়ি চেক দিয়েছে। আপনি কোন টেনশন করবেন না। হেলপার আর ড্রাইভারের নাম্বার নিয়ে যান। দুপুর একটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার পরে ফোন দিয়ে হেলপারকে বলবেন ভাই, ভুলে হয়তো ব্যাগটি কোথাও থাকতে পারে। আপনি দয়া করে আরেকবার চেক করে দেখেন। যদি ভাগ্য ভালো থাকে,তাহলে ব্যাগটি পেতে পারেন। শুরু হলো অপেক্ষার পালা, বাসায় গিয়ে দুপুর একটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে লাগলাম।
বন্ধুরা আজকে আর বাড়াবো না। এর পরে কি হলো সেটা পরের পর্বে শেয়ার করবো। পরের পর্বে জানতে পারবেন,ব্যাগটি পেলাম কি না। আজকে এখান থেকেই বিদায় নিলাম। আগামীকাল আবার দেখা হবে,ইনশাআল্লাহ।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | হারিয়ে যাওয়া ব্যাগে ছিল, সবার ঈদের নতুন কাপড়।। |
স্থান | কমলাপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২৯ /০৩ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে দুইজন মানুষের এত গুলো ব্যাগ হলে তো মুশকিল ই বটে৷ আর কিছু করারও নেই। কারণ মায়েদের মন এমনই। মেয়ের বাড়ি আসতে গেলে তারা যা পায়, সবই যেন মেয়ের জন্য নিয়ে আসতে চান! আমার মায়ের ক্ষেত্রেও একই জিনিস আমি লক্ষ্য করেছি এবং অনেকবার মানা করার পরেও মা কে মানানো যায় নি। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করবো ব্যাগটি আপনারা ফেরত পাবেন।
জী আপু দুই জন মানুষ এত গুলো ব্যাগ না আনলেও পারতো। মানা করেও কোন লাভ হয় না। ধন্যবাদ।
এরকম ভুল আমারও হয়। ব্যাগ রেখে চলে আসি।আমার বরও একবার রেশনের তেল,আটা,ডালও যাবতীয় জিনিসপত্র রেখে অন্যকারো বস্তা দিয়েছে হেলপার তা নিয়ে চলে এসেছিলো।পরবর্তীতে পেলেন কি না ব্যাগটি তা জানার অপেক্ষায় রইলা।
জী আপু মাঝে মাঝে এমন ভুল হয়। তবে সৎ মানুষের হাতে পড়লে পাওয়া যায়। ধন্যবাদ।
একেবারে ফ্লিমি স্টাইলে লিখেছেন। আবার শেষে একটু সাসপেনশনও রেখে দিয়েছেন। যাতে পাবলিক আগামী পর্ব পড়তে আগ্রহী হয়ে উঠে। যাই হোক ব্যাগ তো আর কোন যাত্রী নিয়ে পালাবে না। আবার নিতেও পারে। আসলে কি হয়েছে সেটার জন্যই তো অপেক্ষার প্রহর গুনছি। বেশ দারুন ছিল আজকের লেখা।
ধন্যবাদ আপু,পরের পর্বে জানতে পারবেন মূল ঘটনা। ধন্যবাদ।