অভাবের সংসারে হাসি ফুটানোর চেষ্টা ❤️

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

1000028814.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আমি মাঝেমধ্যে খুব করে চেষ্টা করি আমার পোস্টের মধ্যে ভিন্নতা আনার। হয়তো অনেকের মত আঁকতে পারি না ডাই পোস্ট শেয়ার করতে পারিনা। আমি অনেক ভালো আঁকতে পারি বিশেষ করে যে কোনো ধরনের কাপড়ে পেইন্টিংটা খুব ভালো পারি কিন্তু সময়ের কারণে হয় না। একা হাতে সংসার সামলানো তারপর ছোট বাচ্চাকে একা দেখাশোনা করা মানুষ করা অনেকটা কষ্টকর। আর সবকিছু সামলিয়ে আর্ট করা কিংবা নতুন কিছু তৈরি করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তাই হাতের কাছে যা পাই তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করি। যাই হোক আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করছি গল্পটা আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

কাকলি বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। তার বাবার আর্থিক অবস্থা খুবই ভালো। তার বাবা-মা তাকে খুবই আদরে মানুষ করেছেন। কাকলি কলেজে পড়াশোনা করে। সেখানে তার সজীব নামের একটি ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সাজিব গরিব পরিবারের ছেলে। কোন মতো খেয়ে পড়ে জীবন চলে। এরমধ্যেই একদিন কাকলির বাবা মা তাদের সম্পর্কে জেনে যায় এবং খুবই আপত্তি করে। কিন্তু কাকলি সজীবকে মন থেকে ভালোবেসেছে তাই সজীবকে সে কোনভাবেই হারাতে চায়না। তাই সে বাবা মার অমতে গিয়ে সজীবের কাছে চলে যায় এরপর তারা বিয়ে করে।

এখনো তাদের পড়াশোনা শেষ হয়নি ।হঠাৎ করে কোন চাকরি ও তারা পাবে না। এদিকে তাদের সংসারে খুবই অভাব। কাকলির একটা ভালো গুণ ছিল সে খুব ভালো রান্না করতে পারত। একদিন তারা বসে গল্প করছিল তখন কাকলি সজীবকে বলে যে সে যেহেতু খুব ভালো রান্না করতে পারে তারা দুজনে মিলে ছোট একটা খাবারের দোকান দিতে পারে বাজারে। কিন্তু বাজারে দোকান নিতে গেলে অনেক টাকা-পয়সার দরকার সেই পরিমাণ টাকা তাদের কাছে নেই।

সজিব একদিন তার মায়ের সঙ্গে আলোচনা করে। তখন সজিবের মা তাদেরকে সাধুবাদ জানায়।তার মায়ের ব্যবহার করার জন্য তার কানে সোনার দুল ছিল। সজিবের মা সেই কানের দুল ছেলের হাতে দিয়ে বলল এটা বিক্রি করে তোরা একটা দোকান নে।সজিব প্রথমে কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না কিন্তু পরে তার মায়ের জোড়াজোড়িতে রাজি হয়ে যায়। এরপর সেই কানের দুল গুলো বিক্রি করে বেশ কিছু টাকা পায়। যে টাকা দিয়ে সে বাজারে একটি ছোট্ট দোকান নেয় এবং রান্নার জন্য যেসব প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র বাসনপএ দরকার সবকিছুই নেয়।

এরপর সজীবের মা এবং কাকলি ভেতরের রান্না ঘরে রান্না বান্না করে এবং সজীব সেই খাবার গুলো পরিবেশন করে।প্রথম দিকে খুব একটা সাড়া না পেলেও তাদের রান্নার মান ভালো এবং সুস্বাদু হওয়ায় পরবর্তীতে বেশ ভালো চলে তাদের খাবারের দোকানটি। তাদের হোটেলে ভাত থেকে শুরু করে সব ধরনের পাওয়া যেত বিধায় সব সময় লোকজনের ভিড় লেগে থাকতো। এদিকে কাকলির বাবা-মা কখনো কাকলির খবর নেয়নি।কাকলি বেশ কয়েকবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে কিন্তু তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। হয়তো এটা তাদের অভিমান কোন এক সময় ভেঙে যাবে।

যাই হোক এভাবে তাদের খাবারের হোটেলটি খুব ভালোভাবে চলছিল এবং তারা খুব তাড়াতাড়ি অভাব কাটিয়ে স্বচ্ছল একটি পরিবার হিসেবে গড়ে উঠে।এর মধ্যে তাদের পড়াশোনাও শেষ হয়েছে। তারা দুজনেই চাকরির পরীক্ষা দিয়েছে। সৃষ্টিকর্তা চাইলে হয়তো তাদের খুব ভালো একটি ভবিষ্যৎ তৈরি হতে পারে। আর করা যায় ততদিনে কাকলির বাবা মান অভিমানের পালা শেষ হবে।

এই ছিল আমার আজকের গল্প। আশা করছি গল্পটা আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। ইচ্ছে বা চেষ্টা করলে সবকিছুই সম্ভব। যেটা কাকলি এবং সজীব দেখিয়ে দিল।হয়তো কাকলি তার বাবা মায়ের মনে কষ্ট দিয়েছে কিন্তু তার ভালবাসা কেউ সে বিসর্জন দেয়নি। যাইহোক আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে পরবর্তীতে।

সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

1000006402.png

1000006406.png

1000006401.gif

Sort:  
 last year 

ঘটনা বহুল সুন্দর এ পোস্ট আমার অনেক ভালো লাগলো। অবশ্য মানুষের জীবনে এমন অনেক মুহূর্ত আসে যে সময় জীবন বড় সংগ্রামীময় হয়ে ওঠে। যাই হোক মায়ের সোনার কানের দুল গুলো বিক্রয়ের মধ্য দিয়ে হোটেল দেয়ার পর থেকে তাদের জীবনে সুন্দর একটা পর্যায়ে ফিরে আসে। খাবারের মান ভালো হওয়ায় হোটেলে সব সময় লোকজন আসতে থাকে আর এভাবেই তাদের সংসারটা পুনরায় ভালো পর্যায়ে গুছিয়ে যায়। হয়তো কাকলির পিতা মাতার ভুল ভাঙবে একদিন অভিমান ভুলে তার সন্তানের খবর নেবে।

 last year 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 last year 

কোন কিছু করার ইচ্ছা থাকলে তাতে সফল হওয়া যায়। শুধু দরকার একটু ধৈর্য আর চেষ্টা। কাকলি এবং কাকলি হাসবেন্ড সেই কাজটি করে দেখিয়েছে। দুজন ধৈর্য নিয়ে খাবারের ব্যবসাটি শুরু করেছে শুরুতে সারা না পেলেও একসময় বেশ ভালো পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আশা করি তাদের চাকরি হয়ে যাক এবং কাকলির পরিবার থেকেও মেনে নিক। ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে।

 last year 

এটা ঠিক আপু ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলে সব কিছুই করা সম্ভব। যেটা কাকলি এবং তার স্বামী করে দেখিয়েছে।গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

যেকোনো কাজ যদি আমরা মন থেকে করি এবং পরিশ্রমের সাহায্যে করি, তাহলে তাতে অবশ্যই সফলতা অর্জন করতে পারব। তেমনি সজীব এবং কাকলি একে অপরকে অনেক বেশি ভালবাসতো। তাই পালিয়ে বিয়ে করেছিল। আর তারা একটা খাবারের দোকান দিয়েছিল আর তাতে সফল হয়েছিল। এর পরবর্তীতে তারা পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য চেষ্টা করছে এটা দেখে খুবই ভালো লেগেছে। আশা করছি সবশেষে কাকলির বাবা মায়ের অভিমান ভেঙে যাবে। পুরো গল্পটা ভালো লেগেছে পড়ে।

 last year 

মন থেকে চাইলে আর পরিশ্রম করলে যে কোন কাজে সফলতা আসবেই।শুধু কাকলি আর সজীব না আমাদেরও উচিত যে কোন কাজের পিছনে লেগে থাকা তাহলে আমরাও অবশ্যই সফলতা অর্জন করতে পারব। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

বেশ সুন্দর ছিল গল্পটা আপু। অভাবের মধ্যে থেকে নিজের গুণ কে কাজে লাগিয়ে সেই অভাব দূর করা পাশাপাশি লেখাপড়াও শেষ করা কাকলী এবং সজীবের ব‍্যাপার টা আমার অনেক ভালো লেগেছে। এভাবে চেষ্টা করলে কেউই কখনো হেরে যাবে না। অনেক সুন্দর ছিল আপনার পোস্ট টা আপু। এবং বেশ শিক্ষনীয়ও ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সঙ্গে পোস্ট টা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

জ্বী ভাইয়া তারা অভাবের মধ্যে থেকেও নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে আবার পড়াশোনা শেষ করেছে। আর সৎ ভাবে যেকোনো কাজের জন্য কষ্ট করলে চেষ্টা করলে অবশ্যই সফলতা আসে। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

দুজন দুজনকে অনেক বেশি ভালোবাসতো যার কারণে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। কাকলির মা বাবা যদি প্রথম থেকে মেনে নিত তাহলে তাদেরকে পালিয়ে বিয়ে করতে হতো না। যদিও এখনো পর্যন্ত তাদের অভিমান ভাঙ্গেনি। কিন্তু দুইজনে খাবারের দোকান দিয়ে পড়াশোনা শেষ করেছে এবং পরিবারের অভাব-অনটন দূর করেছে। আশা করছি তাদের চাকরি ও হয়ে যাবে। অনেক সুন্দর করে লিখেছেন পুরো গল্পটা।

 last year 

পুরো গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

খুব সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন আপনি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। কাকলি সজীবকে পছন্দ করে যদি তাদের মা বাবা মেনে নিত তাহলে হয়তো তাদের পালিয়ে আর বিয়ে করতে হতো না। যাইহোক তারা খাবারের দোকান দিয়ে নিজের পড়াশুনা চালিয়েছে এবং তাদের পরিবার একটু সচ্ছল হয়েছে। আশা করছি দুজনে ভালো চাকরিও পেয়ে যাবে। এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 last year 

হ্যাঁ আপু যদি কাকলির বাবা-মা তাদের ভালোবাসা মেনে নিত তাহলে তারা পালিয়ে বিয়ে করত না। পরিবার না মানলেও তারা একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল এবং তাদের অভাবের জীবনকে সচ্ছল করেছিল। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

 last year 

আসলে আপু আপনি ঠিকই বলেছেন ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কোন কিছুই করা সম্ভব হয়। যার কারণে কাকলি এবং সজিব বেশ ভাল অবস্থানে গিয়েছে । আশা করছি তাদের দুজনের চাকরিটাও হয়ে যাবে। পরবর্তীতে তারা আরো ভালো অবস্থানে যেতে পারবে এবং তার বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্কটা ভালো হবে।বেশ ভালো লাগলো আপনার গল্পটি পড়ে ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

তাদের ভালো চাকরি হবে তাদের বাবা মা সম্পর্কটা মেনে নিবে এই আশায় তারা আছে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়া যায়। আর ইচ্ছা করলেই তা সম্ভব হয়।আপনি আজ চমৎকার একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। খুবই ভালো লেগেছে। আসলে কাকলি আর সজিব নিজেদেরকে একটি ভালো অবস্থানে নিতে সক্ষম হয়েছে চেষ্টা দ্বারা।আশাকরি তাদের চাকরিও হয়ে যাবে। বাবা-মায়ের সাথে সম্পর্কের ও উন্নতি হবে।

 last year 

জ্বি আপু পরিশ্রম করলে যে কোন কাজেই সফলতা অর্জন করা যায়। সেটা কাকলিদের দেখেই বুঝা যাচ্ছে। তারা কঠোর পরিশ্রম করে সামান্য একটা হোটেল দিয়ে আজ তারা সচ্ছল হয়েছে।যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটা মন্তব্যের জন্য।

 last year 

একা হাতে ছোটবাবু সহ পরিবার সামলে আসলেই চাইলেও অনেক কিছু করা হয়ে উঠে না আপু। তারপরেও তো অনেক কিছুই করেন। অসুস্থতার মাঝেও কমিউনিটি তে সময় দেন। আপনার আজকের গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো আপু। আপনি বেশ সহজ ভাষায় সুন্দর লেখেন।

Posted using SteemPro Mobile