বৃষ্টির গান( দ্বিতীয় পর্ব )।।

in আমার বাংলা ব্লগ7 days ago


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ শনিবার, ৭ ই জুন ,২০২৫।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000581183.png


প্রথম পর্বের পর



সব ডকুমেন্টস সেটাপ করে সব ফর্মালিটি শেষ করতে করতে প্রায় সাড়ে তিনটা বেজে গেল। তবে ঝামেলা হলেও কাজ শেষ হয়েছে। যদিও পুরো ক্রেডিট টাই শফিক ভাইয়ের। আদিত‍্যের এসব সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। পুরো কাজটাই করেছে শফিক ভাই। কাজ শেষে দুজন লাঞ্চ করার জন্য চলে গেল পাশের একটা রেস্টুরেন্টে। যদিও তখন লাঞ্চ টাইম প্রায় শেষ। খাবার অর্ডার করে দুজন বসে আছে এমন সময় শফিক ভাই বলল

আদিত‍্য ফুফু চইলা গ‍্যাছে কয়েকমাস। এতদিন তোরে কিছু কইনাই ভাবছিলাম সময় গেলে ঠিক হইয়া যাইব। কিন্তু তার তো লক্ষণ দেখতাছি না। তুই এহন কী করতে চাস?চাকরিটাও ছাইড়া দিলি। এভাবে কী দিন যাইব।

কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো আদিত‍্য। তারপর বলল ভাই আমার কিছু ভালা লাগেনা। আমি ঠিক কার জন্য এতোকিছু করমু কন। এরচেয়ে ভালা যেভাবে দিন যাচ্ছে যাক না। আমি আর কোন কিছু ভাববার পারি না।

সবই বুঝছি। কিন্তু এমন করলে তো হইবো না ভাই। আমি আব্বার লগে কথা কইছি। আব্বা একটা সিদ্ধান্ত নিছে। তোরে আর এভাবে থাকতে দিবো না। আব্বা তোর লাইগা মাইয়া দেখতাছে।

কথাটা শুনে কি বলবে বুঝতে পারে না আদিত‍্য। খাবার আসলে খাওয়া শুরু করে দুজন। খাওয়ার একপর্যায়ে আদিত‍্য বলে ভাই আমি এহন আর মায়া বাড়াইবার চাই না। এইসব বিয়া টিয়া আমার দ্বারা হইবো না। আমি ওহন এভাবেই থাকবার চাই। আপনারা আমার লাইগা মাইয়া দেইখেন না। আমি বিয়া টিয়া করমু না। মায়া খুবই খারাপ জিনিস ভাই। এইটা মানসের জীবনে দুঃখ কষ্ট নিয়া আহে।

আদিত‍্যের কথা শুনে আর কিছু বলল না শফিক ভাই। খাওয়া শেষে বিলটা শফিক ভাই নিজে থেকেই দিলো। এটা নিয়ে কোন প্রতিবাদ করল না আদিত‍্য। সে এতটা বড় এখনও হয়ে যায়নি শফিক ভাইয়ের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বিলটা নিজে দেবে। সেইরকম অতিরঞ্জিত কিছু করার ছেলে কোনদিন আদিত‍্য ছিলোও না।

বাইরে বের হয়ে আদিত‍্য দেখে ঝুম বৃষ্টি। সারাদিন ব‍্যাংকে থাকার জন্য বাইরে কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারেনি আদিত‍্য। কিন্তু এখন দেখে অবস্থা খারাপ। রাস্তায় পানি আরও বেশি জমে গিয়েছে। নিজের ব‍্যাগে হাত দিয়ে দেখে ছাতাটা নেই। তখন আদিত‍্যের মনে পড়ে হ‍্যা সকালে দ্রুত বের হয়ে আসার সময় ছাতাটা আনতেই সে ভুলে গিয়েছে। এখন কী করার। ভিজে যেতে হবে এছাড়া কোন উপায় নেই। কিন্তু ডকুমেন্টস গুলোর জন্য সেটাও করতে পারবে না। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে আদিত‍্য।

এরইমধ‍্যে কয়েকজন রিক্সাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করেছে আদিত‍্য এই মামা যাইবা। এরমধ্যে অধিকাংশ সরাসরি না বলেছে। যে কয়েকজন হ‍্যা বলেছে তারা যে ভাড়াটা চেয়েছে সেটা আরও বেশি। সকালের চেয়েও বেশি। সুতরাং ঐভাবেই দাঁড়িয়ে আছে আদিত‍্য। হঠাৎ আদিত‍্যের পাশে কেউ একজন এসে দাঁড়ায়। ম্রিয়মান কন্ঠে বলে উঠে আদিত‍্য কেমন আছেন? মাথার উপরে ছাতা থাকার দরুন প্রথম মুখ দেখেনি আদিত‍্য। তবে পরবর্তীতে ছাতা সরিয়ে দিতেই চিনতে পারে। অরুণা আদিত‍্যের সাবেক অফিস কলিক। এইতো ভালো আপনি কেমন আছেন।

আমি ভালো আছি। এখানে দাঁড়িয়ে কেন আপনি? আমি রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। আর বৃষ্টির জন্য ছাতা নিয়ে আসিনি এইজন্যই যেতেও পারছি না।

আচ্ছা আপাতত চলেন এই ছাতায় যায়। সামনে সিএনজি স্ট‍্যান্ড থেকে সিএনজি নেওয়া যাবে। কোন আপওি করল না আদিত‍্য। সিএনজি স্ট‍্যান্ডে গিয়ে একটা সিএনজি ঠিক করলো দুজনে। ভাড়া সাড়ে চারশো টাকা। দুজনের বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা একই তবে আলাদা এলাকা আর কী।

সিএনজিতে উঠে পড়লো দুজন।ঢাকার বৃষ্টির জমাট বাঁধা পানির মধ্যে দিয়ে নৌকার মতো সিএনজি টা চলতে শুরু করল।


চলবে.....



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png


1000561739.png