গল্প: মামা ও ভাগ্নে। পর্ব: ১১ || তাং: ২৫/০৩/২০২৩ ইং।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ শনিবার। ২৫ ই মার্চ, ২০২৩ ইং।




আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের নিকট আমার লেখা একটি গল্প শেয়ার করছি। আমার গল্পের নাম- 'মামা ও ভাগ্নে', পর্ব-১১। আমি আশা করি আমার লেখা গল্পের পর্ব-১১ আপনাদের নিকট অনেক অনেক ভালো লাগবে।


sunset-g5f78888ca_1280.jpg

Source



গল্পের দশম পর্বটি পড়ার লিঙ্ক



সুজন ছয়টি মদের বোতল বাদে সব কয়টি মদের বোতল ভেঙ্গে ফেলল। তারপর সুজন এবং হৃদয় ছয়টি মদের বোতল বাক্সের মধ্যে ঢুকিয়ে বাক্সটি তালা দিয়ে দিল। তারপর মাদক ব্যবসায়ীরা যেভাবে ভুট্টা ক্ষেতের ভিতরে পুঁতে রেখেছিল ঠিক সে ভাবে তারা বাক্সটি পুতে রাখল। তারপর সুজন এবং হৃদয় ভেঙ্গে ফেলা কাচের বোতলগুলো কুড়িয়ে নিরাপদ জায়গায় ফেলে দিল। তারপরে তারা দু'জন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। বাড়িতে যাওয়ার সময় তমা'র কথা হৃদয়ের খুবই মনে পড়ছিল। তাই হৃদয় একটু সাহস করে তার প্রেমিকা তমা'র কথা তার মামার কাছে বললো। সুজন তার ভাগ্নের প্রেমিকার কথা শুনে বললো, ভাগ্নে এখন এ বিষয়ে নিয়ে কোন কথা বলো না। এখন আমরা একটি চরম মুহূর্তে অবস্থান করছি। তবে আমি যেভাবেই হোক তমা'র সাথে তোমার শুভ বিবাহ করিয়ে দেব।


তারপর তারা দু'জন বাড়িতে পৌঁছে ঝটফট গোসল করে নিল। তারপর তারা নিজেদেরকে প্রস্তুত করে থানার দিকে রওনা হলো। থানাতে পৌঁছে যখন সুজন এবং হৃদয় থানার ভিতরে ঢুকবে তখন সুজনের মাথায় নতুন একটি বুদ্ধি এলো। সুজন থানায় না ঢুকে হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে তাদের জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হল। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পৌঁছে যখন সুজন এবং হৃদয় পুলিশ সুপারের অফিসে ঢুকবে তখন তারা দেখতে পেল যে, পুলিশ সুপার অফিস ত্যাগ করে চলে যাচ্ছে। সুজন তাড়াহুড়া করে পুলিশ সুপারকে ডাকার চেষ্টা করল। কিন্তু পাশের কনস্টেবলদের বাধা প্রাপ্ত হয়। কিন্তু সুজন কনস্টেবলদের সাথে যখন একটু জোরালো আচরণ করলো, তখন কনস্টেবলরা খুবই রাগান্বিত হলো এবং তাকে জোরে ধমক দিল। এমন সময় পুলিশ সুপার সুজনের দিকে তাকালো। তখন সুজন পুলিশ সুপারের দিকে হাত নেড়ে ইশারা করলো।


soldier-g8097927c6_1280.jpg

Source

পুলিশ সুপার বুঝতে পারল যে ছেলেটা আমাকে কিছু বলতে চাইছে। তাই পুলিশ সুপার কনস্টেবল এর মাধ্যমে সুজন এবং হৃদয়কে পুনরায় তার অফিসে নিয়ে গেল। তারপর সুজন এবং হৃদয়ের নিকট থেকে পুলিশ সুপার সম্পূর্ণ কাহিনীটি শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল। সুজন কোন ধরনের কথা না ঢেকে সবকিছু খুলে বলেছিল। সুজন যে একজন ছিচকে চোর সেটাও সে স্বীকারোক্তি দিয়েছে পুলিশ সুপারের নিকট। পুলিশ সুপার সবকিছু শুনে সুজন কে বলল যে, মাদক ব্যবসায়ীরা তোমাদেরকে চিনতে পারিনি তো? উত্তরে সুজন বলল, না। তারপর পুলিশ সুপার বললো, তোমাদের তথ্য যদি সঠিক হয় তাহলে তোমাদের পরিচয় সম্পূর্ণ রূপে গোপন রাখা হবে এবং পরবর্তীতে তোমাদেরকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা হবে। কিন্তু সুজন পুরস্কারের কথা শুনে বলল, আমাদের পুরস্কার লাগবে না স্যার এবং আমাদের কথা কাউকে বলা লাগবে না স্যার। আপনি শুধু দেশের এই শত্রুদেরকে নির্মূল করেন।


তারপরে পুলিশ সুপার বলল, এই অপারেশনে আমি নিজেই সেখানে উপস্থিত থাকবো। তবে তার আগে সে জায়গাটি আমাদেরকে নির্দিষ্ট ভাবে চিনতে হবে। তারপর সুজন ও হৃদয়ের সাথে পুলিশ সুপার কয়েকজন দারোগ পাঠিয়ে দিল। তারপর দুইজন দারোগা কৃষক সেজে সুজন এবং হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে ভুট্টা ক্ষেতের সেই জায়গাটি দেখে আসলো। সন্ধ্যার পরেই পুলিশ সুপারসহ অনেকগুলো পুলিশ সাধারণ পোশাকে সুজনদের গ্রামে চলে এলো। তারপর পুলিশ সুপার সুজনকে ডেকে বলল তোমাদের সেখানে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু সুজন নাছোড়বান্দা, সে পুলিশদের সাথে যাবেই। যাহোক শেষ পর্যন্ত পুলিশ সুপার তাদেরকে সাথে নিতে রাজি হল। রাত সাড়ে দশটার পরে পুলিশ সুপারসহ এক ঝাঁক পুলিশ এবং সাথে সুজন ও হৃদয়, সাধারণ শীতের পোশাক পরিধান করে সকলেই ভুট্টা ক্ষেতের আশপাশে চলে গেল। পুলিশ সুপারসহ প্রত্যেকটি দারোগা নিজ নিজ অবস্থান নিয়ে তারা পুরো ভুট্টো ক্ষেত ঘিরে ফেললো।


corn-field-g2a8a2c4e4_1280.jpg

Source

পুলিশ সুপার সহ সকলেই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে শিকারির মতো করে তাকিয়ে রইল এবং প্রত্যেকে চুপ হয়ে থাকলো। এদিকে তালেব আলী গাজর চোর ধরার জন্য তার দল-বল নিয়ে মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা হল। কিছুক্ষণ পরে তালেব আলী তার গাজর ক্ষেতে পৌঁছানো এবং চোর ধরার পজিশন নিয়ে অবস্থান করতে লাগলো। রাত পৌনে বারোটার দিকে হঠাৎ যেন ভুট্টা ক্ষেতের মাঝখানে আলো জ্বলে উঠলো। পুলিশ সুপার সহ সকলেই আশ্চর্য হয়ে গেল। তারপর পুলিশ সুপার সবাইকে মেসেজ দিয়ে চুপ থাকতে বলল এবং সাবধানতার সাথে ঘটনাটি বোঝার চেষ্টা করতে বললো। পুলিশদের সাহায্য করার জন্য সুজন এবং হৃদয় এগিয়ে এলো। সুজন পুলিশ সুপারকে সবকিছু স্বচক্ষে দেখানোর জন্য সামনের দিকে এগোতে লাগলো। এদিকে হৃদয় ভয়ে থরথর করে কাঁপতে শুরু করল।


[গল্পটি চলমান থাকবে]



১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ ।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 
 2 years ago 

গত পর্বটা পড়েছিলাম ভাই ভালই লেগেছিল। অবশেষে তাহলে সুজন আর হৃদয় পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে সম্পূর্ণ ঘটনা টা বলেছে এবং পুলিশ সুপার সেটি নিজ হাতে সমাপ্তি করবেন বলে হৃদয় সহ গিয়েছেন।কিন্তু হঠাৎ করে ভুট্টা খেতে আলো জ্বলে ওঠায় সবাই চমকে গেল।যাইহোক ভাই পরবর্তী পর্ব পড়ব আশা করি।

 2 years ago 

দারুন একটি চমক আছে ভাই এখানে। আসছে আগামী পর্বে অপেক্ষায় থাকুন।

 2 years ago 

আপনার লেখা মামা ও ভাগ্নে গল্পের আগের পর্ব গুলো আমার পড়া নেই। তবে পর্ব -১১ টা পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো। সুজন একজন ছিচকে চোর হলেও সে দেশের শত্রুদের নির্মূল করার জন্য সহযোগিতা করলেও কোনো পুরষ্কার নিল না । এটা তার একটা মহৎ দিক। হৃদয় আর তমার পরবর্তীতে কি হবে সেটা জানার অপেক্ষায় থাকলাম আর এর পরবর্তী পর্বটি পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

পরবর্তী পর্বটি খুব শীঘ্রই আসছে,গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।