গল্প :- প্রেমেই প্রতারণা।

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমাদের আশেপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেই ঘটনা গুলো অনেক সময় শিক্ষনীয় হয়ে থাকে। কখনো কখনো দুর্ঘটনা, আবার কখনো মর্মান্তিক ঘটনা। এজন্য আজকে আবার ও একটা কাহিনী নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি আমার লেখাটা পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব বাস্তব একটি গল্প। আর এই গল্পটি হচ্ছে আমার শ্বশুরবাড়ির পাশে একটি লোকের জীবন কাহিনী। ছেলেটির নাম হচ্ছে রাসেল। রাসেল এক পরিবারে একটি মাত্র ছেলে। যদিও রাসেলের পাঁচটি বোন আছে। আর রাসেলের বাবা ছোট্ট একটি দোকান করে। তবে রাসেল পড়ালেখা খুব ভালো ছিল। এই কারণে তাকে মোটামুটি সবাই ভালো জানতেন। আর রাসেলের মধ্যে স্কুল জীবন থেকে লোভ ছিল অনেক। এই কারণে রাসেল যে কোন কিছু দেখলে একটু লোভ করতেন। আর এভাবে সেই পড়ালেখা করে বড় হয়েছে। এবং তাদের দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়র মেয়ের সাথে সেই প্রেমের সম্পর্ক গড়েছে।

মূলত রাসেলের এখানে উদ্দেশ্য ছিল খারাপ। ওই মেয়েটি তার বাবার পরিবারে একমাত্র মেয়ে ছিল। তাদের পরিবারে আর কোন ভাই বোন ছিল না। আর মেয়েটি কালো এবং পড়ালেখা তেমন করে নাই। তবে রাসেল চিন্তা করল ওই মেয়ের বাবার অনেক টাকা সম্পত্তি। এবং রাসেল যদি কোনমতে ওই মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে এবং মেয়েকে হাত করতে পারলে সেই টাকা পয়সা সব নিতে পারবে। এবং রাসেল পড়ালেখা অবস্থায় যখন মেয়েটির সাথে প্রেম করেছিল। তখন মেয়েটির থেকে সেই টাকা আনতেন এবং তার হাত খরচ চালাতেন। যদিও রাসেলের অন্তরে ছিল অন্য কিছু। আর যখন রাসেল পড়ালেখা করে প্রতিষ্ঠিত হলেন। তখন রাসেল মেয়েটিকে বলল সেই পড়ালেখা করার জন্য বিদেশ যাবে।

আর মেয়েটির বাবা থেকে কিছু টাকা তাকে নিয়ে দেওয়ার জন্য। যদিও মেয়েটির বাবা জানে রাসেলের বাবা প্রতারক রাসেল ও প্রতারক। আর রাসেল মেয়েটির সাথে এমন ভাবে কথা বলে মনে হয় পৃথিবীতে ওই মেয়ে ছাড়া রাসেল আর কেউ নেই। আর মেয়েটির রাসেলের কিন্তু মায়াজালে বন্দি হয়ে গেল। এই কারণে যখন রাসুল টাকা চাইলেন বিদেশ যাওয়ার জন্য এবং প্রতিষ্ঠিত হলে মেয়েকে বিয়ে করবে। মেয়েটির বাবা বলে দিলেন এই ছেলের কাছে তার মেয়েকে বিয়ে দেবে না এবং কোন টাকাও দেবে না। রাসেল বিয়ে করার জন্য টাকা চাই নাই। সেই বিদেশ যাওয়ার জন্য এবং প্রতিষ্ঠিত হলে মেয়েকে বিয়ে করবে। আর মেয়েটির বাবা বুঝতে পারলেন এখানে কোনো প্রতারণা আছে।

এরপর রাসেল মেয়েটিকে অনেক কৌশলে মেয়েটির থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করতে লাগলো। পরে মেয়েটি নিজের স্বর্ণ এবং তার মায়ের স্বর্ণগুলো রাসেলকে দিয়ে দিলেন বিদেশ যাওয়ার জন্য। রাসেল এই স্বর্ণ ও কিছু টাকা নিয়ে ঢাকায় চলে গেলেন। এবং কিছুদিনের মধ্যে সে বিদেশও চলে গেলেন পড়ালেখা করার জন্য। পরবর্তীতে জানতে পারলাম মেয়েটির টাকা এবং অনেকগুলো স্বর্ণের কারণে রাসেল বিদেশ যেতে পারল। আর বিদেশ যাওয়ার পর থেকে রাসেল কিন্তু তার ভালোবাসার মানুষটির সাথে আর দেখা বা ফোন করে নাই। আর মেয়েটির নাম হচ্ছে চুমকি। কালো হলেও খুব ভালো একটি মেয়ে ছিল।

এবং মেয়েটি রাসেল বিদেশ যাওয়ার পর অনেকদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করল রাসেল দেশে আসলে তাকে বিয়ে করবে। এবং রাসেলের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলেন এবং তাদের টাকা ও স্বর্ণগুলো দেওয়ার জন্য। এমন রাসেলের বাবা বলতে লাগলো এই ব্যাপারে কথা বললে তাদের সাথে ঝামেলা হবে। কারণ টাকাও স্বর্ণ দেওয়ার সময় তাদেরকে বলে দেয়নি এবং কোন সাক্ষী ও নাই। পরবর্তীতে মেয়েটি অনেক অনেক বছর অপেক্ষা করল ছেলেটির জন্য। কিন্তু রাসেল পড়ালেখা করার জন্য লন্ডন গেলেন। আর ওইখানে একটি প্রতিষ্ঠিত মেয়েকে বিয়ে করলেন। এইদিকে চুমকি জীবন একদম অন্ধকার হয়ে গেল। কারণ অনেক বছর চুমকির বিয়ে হয় নাই বিধায় পরবর্তীতে তার বিয়ে হতে অনেক কষ্ট হয়েছে। এই কারণে অতিরিক্ত কাউকে ভালবাসতে নেই এবং বিশ্বাস করতে নেই। আর রাসেল তার জীবনে এই জায়গা আসার বড় অবদান ছিল চুমকির। সত্যি বলতে এরকম প্রতারক গুলো চেনা খুব কষ্টকর। এ হচ্ছে প্রেমের প্রতারকের গল্প।

ধন্যবাদ সবাইকে