জেনারেল রাইটিং : জোর করে চুল কাটা।
শুভেচ্ছা সবাইকে।
কেমন আছেন সবাই? আশাকরি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।প্রত্যাশা করি সবাই সবসময় ভালো থাকেন-নিরাপদে থাকেন। আজ ১২ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শরৎকাল । ২৭শে সেপ্টেম্বর , ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ। আজ একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
প্রতিদিন অনেক ঘটনা ঘটে। ঘটনা প্রবাহে একটি ঘটনা আরেকটি ঘটনার পেক্ষিতে হারিয়ে যায়। অনেক ঘটনার ফলোআপ হয়না। কত ঘটনাই ঘটে বিচিত্র এই পৃথিবীতে। ভালো ঘটনা যেমন আছে খারাপ ঘটনাও আছে। ইতিবাচকের চেয়ে নেতিবাচক ঘটনা ভাইরাল হয় বেশি। ভাইরালের ক্ষেত্রে প্রচার মাধ্যম গুলোর প্রবাহ আছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব আছে সোস্যাল মিডিয়ার। সোস্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ভাইরাল অনেক কিছুই আমাদের গোচরীভূত হয়। বন্ধুরা,আমার বাংলা ব্লগে সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে, প্রতি সপ্তাহে একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করার চেষ্টা করি। তারেই অংশ হিসেবে আজকের আর্টিকল। আজকের আর্টিকেলের বিষয় সাধু-সন্ন্যাসী-পাগলের জোর করে চুল কাটা।
বর্তমানে সোশ্যাল হ্যান্ডেল গুলোতে জোর করে এক সাধুর চুল কাটা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে জোড়াল আলোচনা হচ্ছে। মানুষকে যেন সুন্দর ও পরিপাটি দেখা যায় এজন্য চুল কাটার প্রচলন শুরু হয়েছে। আমরা সবাই জন্মের পর থেকেই চুল কাটায় অভ্যস্ত। ফুটপাতের নাপিত থেকে নামি-দামি বাহারি সেলুন এখন পাড়া মহল্লায়। ফ্যাশনের পরিবর্তনে এসেছে বাহারি সব চুলের কাট। যার যেকাট পছন্দ, সে সেই কাট দিচ্ছে। কেউ টাক করছে,কেউ ছোট-মাঝারি আবার কেউ চুল বড় রাখছে। যার যেমন খুশি পছন্দ। কোন বাধা নেই। চুল কাটা ব্যক্তির স্বাধীনতা।ব্যক্তির উপর নির্ভর করবে সে কি রকম চুটের ছাট দিবে বা দিবে না!
সবাই স্বাভাবিক মানুষ নয়। আখড়া,আস্তানা, মাজার, মন্দির সহ রাস্তাঘাটে কিছু মানুষের দেখা পাই, যাদের বেশভূষা সাধারণের থেকে আলাদা। মানুষ মুলত এদের পাগল, সাধু ও সন্ন্যাসী হিসেবে চিনে। সেরকন এক সাধু ব্যক্তির জোর করে চুল কাটা নিয়ে চলছে আলোচনা। কে কেমন চুল রাখবে, চল কাটবে কিনা সেটা তার ব্যাপার কিন্তু জোর করে চুল কাটা অন্যায়। সেই অন্যায় কাজটি করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার আশায় মাহবুব ক্রিয়েশন ফোর নামে একটি অনলাইন গ্রুপ।ভিউ বাড়ানোর জন্য জোর করে এই অন্যায় কাজটি করেছে তারা। মাহবুব ক্রিয়েশন ফোর ভবঘুরে মানুষদের চুল কাটিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে। ভিউ বানিজ্যের পাশাপাশি তারা দেশ বিদেশের মানুষের কাছ থেকে অনুদান নেয়। এটা এক ধরণের ব্যবসা। আপনি ব্যবসা করেন সমস্যা নেই। কেউ আপনার কাছে স্বইচ্ছায় চুল কাটালে সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে আপনি জোর করে চুল কাটাতে পারে না। না মানে না। পাগল, সাধু -সন্নাসী, ভবঘুরে যেই হোক আপনি তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে চুল কাটতে পারেন না। এটি ক্রিমিনাল অফেন্স। আইনত দণ্ডনীয়। ব্যক্তির মানিবাধিকার লংঘন।
মানুষ যেই হোক সবার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা সম্মান থাকা জরুরি। ধনী -গবীর, পাগল, সন্নাসী, সাধু ও স্বাভাবিক মানুষ এখানে মুখ্য না মুখ্য হচ্ছে মানুষ। আইনের চোখে সব মানুষ সমান। সবার মানবাধিকার সমান। জোর করে মানবাধিকার লংঘন করার এখতিয়ার কারো নেই। ভিউ বানিজ্য, ভাইরাল ও ইনকামের ধান্দা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা মাহবুব ক্রিয়েশন ফোরের কার্যক্রম আমাদের নতুন করে দেখিয়ে দিল। এরকম অন্যায়-বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। আজ এই পর্যন্ত বন্ধুরা, আবার দেখা হবে নতুন কোন ব্লগ নিয়ে।শুভ রাত্রি।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেনী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @selina 75 |
তারিখ | ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ইং |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ। |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
https://x.com/selina_akh/status/1971957872385999037
Link
https://x.com/selina_akh/status/1971958846785736913
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই চুল কাটার বিষয়টি সত্যি অনেক আলোচনায় এসেছে। অনেকে সমালোচনা করছে অনেকে আবার বলছে তারা সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে। আসলে বিষয়গুলো অনেকটা মানবিক দিক বিবেচনা করে করা উচিত। তার নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছার মূল্য দেওয়া উচিত।
জোড় করে কারও চুল কাটা বড় অন্যায়। সেই সাথে মানবাধিকারের লংঘন।