প্রকৃতির নিঃশব্দ রক্ষক
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে আমাদের উদ্ভিদের পরিবেশগত দিক নিয়ে আলোচনা করবো। এই উদ্ভিদ আমাদের এক কথায় বলা যায় "প্রকৃতির নিঃশব্দ রক্ষক"। আমরা সবাই জানি আমাদের জীবনে উদ্ভিদের গুরুত্ত্ব কতটা, তাছাড়া প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এক অনবদ্য অবদান রেখে থাকে। উদ্ভিদ যে শুধু আমাদের পরিবেশের ভৌগোলিক দিক থেকে ভারসাম্য টিকিয়ে রাখে তা নয়, এটি এমন একটি ন্যাচারাল শক্তি যে, নিরলসভাবে সব ধরণের প্রাণীদের খাদ্য এবং বাসস্থানের জন্য যোগ্য করে তুলছে। আর সেটা শহরের কংক্রিটের মধ্যে হোক বা গ্রামের সবুজতার মধ্যে হোক। বর্তমানে তো বলতে গেলে শহরের দিকে উদ্ভিদের ধংসলীলা শুরু হয়েছে, এতো পরিমানে উদ্ভিদ কাটা পড়ছে যে, দিন দিন পরিবেশগত দিক দিয়ে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ছে।
একমাত্র গ্রামের সবুজতার মাঝেই প্রকৃত সবকিছু খুঁজে পাওয়া যায়। এইজন্য আমরা যারা শহরে থাকি, সবারই প্রায় গ্রামের সবুজতার দিকে মন আকৃষ্ট হয়ে থাকে। আমরা নিজেরাও সময় পেলে বা এখন প্রায় প্রতিদিন গ্রামের দিকে চলে যাই ঘুরতে। তো যাইহোক, আসলে সব কথার এক কথা হলো-উদ্ভিদ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। উদ্ভিদ আমাদের যত কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রক্রিয়া আছে, সব গ্রহণ করে অক্সিজেন প্রদান করে থাকে। আর এই প্রক্রিয়াটা ন্যাচারাল ভাবে ফটোসিনথেসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটিয়ে থাকে। আর অক্সিজেন যে আমাদের জীবনে বেঁচে থাকার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা বলতে বাকি থাকে না, আমাদের জীবনের মূল আধার এটা।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য রক্ষায়ও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া উদ্ভিদ মাটির ক্ষয়রোধ করে যেমন ভারসাম্য টিকিয়ে রাখে, তেমনি জলের ধারণ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। এই প্রক্রিয়াটি হয়ে থাকে- যেকোনো উদ্ভিদের শিকড় কিন্তু মাটিকেই আঁকড়ে ধরে রাখে, ফলে যখন বৃষ্টি হয়, তখন মাটির ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাছাড়া মাটির ভেতরে যে একটা আদ্রতা থাকে, সেটা এই উদ্ভিদের উপস্থিতির কারণেই সম্ভব হয়। আর যদি এই উদ্ভিদ না থাকতো, তাহলে আদ্রতাও থাকতো না আর তার অভাবে কৃষিকাজেও ব্যাহত হতো। তারপর এই উদ্ভিদের মাধ্যমে প্রাণীদের খাদ্যের ভূমিকাটাও অপরিসীম। এখানে প্রত্যেক বাস্তুতন্ত্র হলো উদ্ভিদের খাদ্যশৃঙ্খলের প্রাথমিক স্তর।
আর এরা এই প্রক্রিয়াটি করে থাকে সরাসরি সূর্যালোকের মাধ্যমে। সূর্যালোকের মাধ্যমে যে খাদ্য তৈরি করে, তা সরাসরি প্রাণীদের জীবিকা নির্বাহে ভূমিকা রাখে। আজ উদ্ভিদ আছেই বলে প্রাণীকুলের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে, নাহলে এই পৃথিবীতে কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব টিকে থাকতো না। তারপরেও বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বন উজাড়ের ফলে, অনেক প্রজাতির প্রাণীই খাদ্যের বা বাসস্থানের অভাবে ধংসের পথে এগিয়ে চলেছে। আর এই উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ফলেই পরিবেশে জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষিত আছে। জলবায়ু নিয়ন্ত্রণেও উদ্ভিদের ভূমিকাও অনেক। কারণ উদ্ভিদ বায়ুতে আদ্রতা বাড়ায় এবং বৃষ্টিপাতের পরিমানের ফলে ভারসাম্য বজায় থাকে আর সেই সাথে তাপমাত্রার পরিমানটাও ঠিক রাখে।
গ্রিনহাউস গ্যাস বলে একটা বিষয় আছে, যেটা এই উদ্ভিদ কমাতে সাহায্য করে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে একটি প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকা রাখে। বর্তমানে এই যে এতো হাজারে হাজারে গাছ কাটা পড়ছে, তাতে যেমন ভারসাম্য প্রাকৃতিক হারাচ্ছে, তেমন প্রাণীকুলের অস্তিত্বও এই পৃথিবীতে টিকে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়ছে। উদ্ভিদ যেমন আমাদের চোখের দৃষ্টিতে অনেক সৌন্দর্যমন্ডিত, তেমনি আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় একটি মূল স্তম্ভ রূপে কাজ করে। একটা উদ্ভিদ অনেক প্রাণীর জীবনের রক্ষক হিসেবে কাজ করে। আর তাই উদ্ভিদ যত ধংস হবে, অক্সিজেনের মাত্রাও তত ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। আর প্রকৃতিও তার নিয়ন্ত্রণ রেখা ভেঙে প্রলয়ের সৃষ্টি করবে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.