এপিজেনেটিক্স
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে বায়ো সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। বিষয়টা হচ্ছে এপিজেনেটিক্স, মূলত এটা আমাদের একটা জিনের প্রক্রিয়া। জিনের সাথেই মূলত এর একটা পরিবেশগত বিষয় লুকিয়ে আছে। মূলত আমাদের দেহের জিনগুলো কিভাবে পরিবেশের মাধ্যমে পরিবর্তন ঘটে। আমরা প্রত্যেকেই মোটামুটি এইটুকু ধারণা রাখি যে, আমাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য অনেকাংশ নির্ভর করে ডিএনএ এর উপরে, যা জিনের একটি অংশ। আপনারা অনেকেই খেয়াল করে দেখবেন যে, অনেকের জমজ বাচ্চা হয়ে থাকে, সেটা ছেলে হোক বা মেয়ে। তবে এদের এই ঘটনায় ডিএনএ একই থাকলেও কিন্তু যখন খুব বেশি বয়স আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে, তখন চেহারা আলাদা আলাদা দেখতে হয়।
এই বিষয়টা কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে কারো খুব দ্রুত হয় আবার দেরিতে। মানব জীবনে সবকিছুই জিনের কারণে এইসব পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও জীবনযাপন বা খাদ্যাভ্যাস এর ফলেও মানব শরীরের স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে থাকে। আমাদের মানব শরীরের সবকিছুর ভেতরে রয়েছে এক আশ্চর্য রহস্য, তেমনি এই এপিজেনেটিক্সও একটা আশ্চর্য জগত জিনের ক্ষেত্রে। এই বিষয়টা আসলে জিনের উপরে একধরণের নিয়ন্ত্রণমূলক কাজ হিসেবে ভূমিকা রেখে থাকে। আমাদের ডিএনএ এর যে জিন থাকে, তা সবই একই থাকে।
তবে এর মধ্যে যেসব জিন রয়েছে, তার মধ্যে কোনটা চালু থাকবে আর কোনটা বন্ধ হবে, তার পরিপূর্ণ নির্ভর করে এই এপিজেনেটিক্স এর উপরে। উদাহরণ হিসেবে যদি দেখা যায়, তাহলে কিছুটা ওই বইয়ের পাতা পড়ার মতো অর্থাৎ বই একই, কিন্তু আলাদা আলাদা অধ্যায় পড়ার মতো। এখন কথা হলো পরিবেশ কিভাবে আমাদের জিনকে প্রভাবিত করতে পারে! আমাদের শরীরে যেসব ডিএনএ থাকে, তা কিন্তু সবসময় অপরিবর্তনীয়, কিন্তু ডিএনএ এর উপরে যে এপিজেনেটিক্স আমাদের প্রত্যেকের নানা জীবনযাত্রার দ্বারা প্রভাবিত হয়।
এইগুলো কিন্তু আমাদের কমন কিছু জীবনযাপন এর মাধ্যমে ঘটে থাকে। যেমন- খাদ্যাভ্যাস একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয়, অস্বাস্থ্যকর জান্ক ফুড খেলে। এছাড়া মদ্যপান, ধূমপান ইত্যাদি। ঘুম আর মানসিক প্রভাব এর কারণেও প্রভাব পড়ে থাকে। এছাড়া পরিবেশের তো নানারকম দূষণের প্রভাব আছেই। একটা কমন বিষয়ের উপরে উদাহরণ হিসেবে যদি বলি, তাহলে- আমরা কিন্তু ধূমপান এর মতো একটা বিষয়কে খুব খারাপ দৃষ্টিতে দেখে থাকি। কিন্তু এই ধূমপান এর ফলে কিন্তু আবার অনেক ক্ষেত্রে উপকারী কাজ হয়ে থাকে। যেমন এখানে ধূমপান এর ফলে ফুসফুস এর কিছু জিন বন্ধ হয়ে যায় আর এইসব বন্ধ হয়ে যাওয়া জিন মূলত ক্যান্সার এর প্রতিরোধ করে থাকে।
তারপর এখানে ব্যায়াম এর ক্ষেত্রে যদি বলি, তাহলে কিন্তু এই ব্যায়াম এর কারণে আমাদের অনেক উপকারী জিন সক্রিয় হয়ে ওঠে, ফলে আমাদের দীর্ঘায়ুতে অনেক ভালো ভূমিকা রেখে থাকে। তবে এই এপিজেনেটিক্স বিষয়টা শুধুই আমাদের জীবনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না, এটি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে স্থানান্তর। এটি সব ক্ষেত্রে না হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। এইরকম অনেক ঘটনা দুর্ভিক্ষের সময়ে ঘটেছে। বহু আগে যেসব দেশে দুর্ভিক্ষের ছায়া পড়েছিলো, সেখানে ওই সময়ে জন্ম নেওয়া বহু শিশুদের মধ্যে ডিএনএ অপরিবর্তিত থাকলেও তাদের স্বাস্থ্যের দিক থেকে সমস্যা দেখা দিয়েছিলো। এইসব নিয়ে দিনের পর দিন রিসার্চ চলতেই আছে, শেষ নেই আসলে, কারণ এ এক চরম রহস্যময় ঘটনা। আসলে বাস্তবে কিন্তু এইসব খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা এবং পরিবেশের নানা প্রভাব আমাদের জিনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.