আয়নার অপর পিঠে (পর্ব ১ )
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করে নেবো। এই গল্পটি হলো "আয়নার অপর পিঠে"। এই গল্পটি একাধারে রোমাঞ্চকর, রহস্য এবং থ্রিলার। দুর্গানগরে সৌমিত্র নামের একটি ছেলে বসবাস করতো। আর সে কলকাতার একটি কলেজে পড়াশুনো করতো। আর তার বই পড়ার প্রতি আলাদা একটা নেশা ছিল, বিশেষ করে পুরোনো বইগুলোর উপরে। এমনিতে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে অসংখ্য পুরনো বইয়ের দোকান এদিকে-ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এই সব বইয়ের দোকানগুলোর মধ্যে একটা বিশেষ দোকান আছে, যেখানে বইয়ের সাথে সাথে পাওয়া যায় সময়ের চিহ্ন। এইসব পুরোনো বইয়ে আর ধুলোমাখা পাতাগুলো যেন ফিসফিসিয়ে কথা বলে। সৌমিত্র কলেজে পড়াশুনোর পাশাপাশি এই দোকানে পার্ট টাইম হিসেবে কাজ করতো।
কলেজে সে শেষ বর্ষের অর্থাৎ থার্ড ইয়ারের ছাত্র হয়েও তার একটা আলাদা নেশা আছে পুরোনো বই আর প্রাচীন জিনিসপত্রের উপরে। মানুষের যেমন কোনোকিছুর উপরে মায়া-মোহো জন্মে যায়, সৌমিত্রর ক্ষেত্রেও তাই এইসব বিষয়ে। সৌমিত্র এমনিতেই খুবই ঘরের ছেলে, তার বাবা অনেক আগেই মারা গিয়েছে, শুধু সে আর তার মা থাকে বাড়িতে। তার তেমন কোনো বন্ধু ছিল না কলেজের বাইরে, ফলে বাড়ির দিকে প্রায় সময় তার সময় কাটতো বইয়ের সঙ্গে, একপ্রকার তার নিত্যদিনের সঙ্গী ছিল বই। সব বিষয়ে জানার প্রতিও তার একটা আলাদা আকর্ষণ কাজ করতো মনের মধ্যে। সে এইসব পুরোনো বই পড়তে পড়তে ভাবতে লাগে যে, যদি পুরনো বই থেকে সত্যি কোনো অলৌকিক ঘটনা ঘটতো!
এইসব কল্পনা মাঝেমধ্যে তার মনের মধ্যে উঁকি মারতো। তবে একদিন এই কল্পনাই তাকে সেই অলৌকিক ঘটনার দিকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো, যা ছিল একপ্রকার ভয়ঙ্কর ব্যাপার। সৌমিত্র একদিন বিকেলে কলেজ শেষে তার দোকানে কাজে যায়। এইসময় দোকানে তার মালিক অনুপস্থিত ছিল, এবং সৌমিত্র এক কোনে একটা পুরনো কাঠের বাক্স দেখতে পায়। বাক্সটা দেখতে খুবই সাধারণ ছিল, তবে সৌমিত্র লক্ষ্য করে তার গায়ে কিছু খোদাই করে লেখা ছিল, শুধু একটা সাল-১৮৮৭। এটা দেখেই সৌমিত্রর মনে কৌতূহল বেড়ে গেলো, ভিতরে একপ্রকার বিষয়টা দেখতেই হবে যে কি আছে। সৌমিত্র আর বেশি দেরি না করে ঝটপট সেই বাক্সটার মুখ খুললো এবং তার মধ্যে সে দেখে একপ্রকার বিস্মিত হয়। কারণ তার মধ্যে একটা বহু প্রাচীন কাঠের ফ্রেমে বাঁধানো কাঁচের আয়না ছিল।
এরপর সৌমিত্র আয়নার উপরে হাত বুলায় এবং সাথে সাথে যেন একটা শীতলতা অনুভূতি হয় তার শরীরের ভিতরে। সৌমিত্র সেই আয়নাটা ওখানে না রেখে সোজা বাড়ি নিয়ে যায়, আর প্রাচীন পুরোনো আয়নার দিকে কেউ তেমন নজরও দেয়নি। সৌমিত্র নিজের রুমে খাটের এক পাশে ঝুলিয়ে রেখে দিলো। পরের দিন ছিল শুক্রবার আর সৌমিত্রর কোনো ক্লাস না থাকায় সে বই আর থ্রিলার কাহিনী ইউটিউবে দেখে সময় কাটিয়ে দেয়। ওইদিন রাতে অর্থাৎ রাত যত গভীর হচ্ছে, তার ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত অনুভূতি অনুভব করতে লাগে। রাত তখন গড়িয়ে ২ টার কাছাকাছি। বাইরে আবার আবহাওয়াও ভালো ছিল না, হালকা বৃষ্টিও পড়তে থাকে। ঘরের মধ্যে সবকিছু যেন একদম স্তব্ধ, চারিদিকে নীরবতায় ছেয়ে গেছে । এমনকি সে যে আয়নাটা এনেছিল, তার টিকটিক আওয়াজও যেন বন্ধ হয়ে গেছে।.....
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.