আলু, কুমড়ো এবং পুঁইশাক দিয়ে চিংড়ির মজাদার রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন । সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো । আজকে আমি তিন প্রকার সবজি দিয়ে চিংড়ির একটা মজাদার রেসিপি তৈরী করেছি । এই রেসিপিটা খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল । এই রেসিপিটা মূলত আলু, কুমড়ো এবং পুঁইশাক দিয়ে করেছিলাম। কুমড়োটা ভালোই মিষ্টি ছিল, ফলে তরকারিটা বেশি মজেছিল । তাছাড়া পুঁইশাক এর ডাঁটার একটা সুগন্ধ ব্যাপার আছে যেটা তরকারিকে মজাদার করে তুলতে অনেক কার্যকারি ভূমিকা রাখে । এই রেসিপিটা মাছ ছাড়াও অনেক ভালো লাগে নিরামিষ হিসেবে। আমি এইটার আগে নিরামিষ ঘন্ট হিসেবে খেয়েছি, ভালো টেস্টি লাগে, তবে তাতে বড়ি দিয়েছিলাম। সয়াবিন বড়ি দিয়েও অনেক ভালো লাগে নিরামিষ হিসেবে রান্না করলে। শরীরে পুষ্টি যোগানের জন্য কুমড়ো একটা সর্বোত্তম সবজি। যাইহোক এই তরকারিটার ঝোল অনেক কমিয়ে দিয়েছিলাম, প্রায় বলতে গেলে আঁটো আঁটো করেছিলাম। চিংড়ি এমনিতেই শুধু কুমড়ো দিয়ে রান্না করলে কত সুস্বাদু লাগে সেটা আমরা জানি কিন্তু সাথে এই পুঁইশাক এর ডাঁটা চাবাতে বেশ লাগছিল । যাইহোক, এখন এই রেসিপিটার মূল বিষয়ের দিকে চলে যাবো।


☫প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☫

✦উপকরণ
পরিমাণ✦
চিংড়ি
১০০ গ্রাম
কুমড়ো
৫০০ গ্রাম
আলু
২ টি
পুঁইশাকের ডাঁটা
পরিমাণমতো
পেঁয়াজ
১ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
১৪ টি
গোটা জিরা
পরিমাণমতো
সর্ষের তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


কুমড়ো, আলু, পুঁইশাকের ডাঁটা, পেঁয়াজ, রসুন


কাঁচা লঙ্কা, সর্ষের তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


❣এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


☬প্রস্তুত প্রণালী:☬


➤চিংড়িগুলো কেটে রাখা ছিল, আমি একবার ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর কুমড়োটিকে কেটে তিন খণ্ড করেছিলাম এবং পরে খোসা ছালিয়ে নিয়ে কেটে ছোটো ছোটো পিচ করার পরে জল দিয়ে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤আলু দুটির খোসা ভালোভাবে ছালিয়ে নিয়ে কেটে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।

➤পুঁইশাকের ডাঁটা থেকে পাতাগুলো ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে ডাঁটা কেটে নিয়ে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে কেটে নিয়েছিলাম এবং সাথে রসুন এর খোসাও ছালিয়ে নিয়ে রেখেছিলাম। কাঁচা লঙ্কাগুলো সব কেটে নিয়েছিলাম।

➤ধুয়ে রাখা চিংড়িগুলোতে ১ চামচ করে লবন এবং হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর গায়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।

➤একটি প্যানে তেল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তেলটা একটু গরম হলে তাতে চিংড়ি সব দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালোভাবে ভাজা হয়ে গেলে তুলে নিয়েছিলাম।

➤চিংড়ি ভাজা হয়ে গেলে ওই একই তেলে আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং লাল লাল ভাজা হয়ে আসলে তুলে নিয়েছিলাম।

➤আলু ভাজার পরে আরেকটু তেল দিয়ে তাতে কুমড়োর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে ভাজা হয়ে গেলে তুলে নিয়েছিলাম।

➤কুমড়ো ভাজা হয়ে গেলে তাতে পেঁয়াজ-রসুন দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤সব ভাজা হয়ে গেলে পরে প্যানে তেল দিয়ে তাতে পরিমাণমতো গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। জিরা একটু ভাজা হয়ে এলে তাতে ভেজে রাখা কুমড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤কুমড়ো দেওয়ার পরে তাতে পুঁইশাকের ডাঁটা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভাজা আলুর পিচ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং সাথে লঙ্কা দিয়েছিলাম।

➤লঙ্কা দেওয়ার পরে তাতে ভাজা চিংড়ি আর ভাজা পেঁয়াজ-রসুন দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে স্বাদ মত লবন- হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤মশলাগুলো ভালোভাবে মিক্স করে নেওয়ার পরে তাতে জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤জল দেওয়ার পরে ঢেকে রেখেছিলাম কিছুক্ষণ, যাতে সব ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে আসে। সিদ্ধ হয়ে আসলে ঢাকনা তুলে নিয়েছিলাম এবং ঝোলটা আরো কমিয়ে আনার জন্য আরো কিছুক্ষণ জ্বাল দিয়েছিলাম।

➤জ্বাল দিতে দিতে ঝোল অনেকটা কমে এসেছিল এবং আমি পরে তাতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

আজকে দাদা আপনি খুবই মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। আলু কুমড়ো এবং পুঁইশাক দিয়ে মজাদার চিংড়ি মাছের রেসিপি। চিংড়ি মাছ আমার খুব প্রিয়। আমি আজকে চিংড়ি মাছের রেসিপি তৈরি করেছিলাম। তবে আমি আলু এবং বেগুন দিয়ে চিংড়ি মাছের রেসিপি তৈরি করেছিলাম। আর রেসিপিটি খেতেও অনেক সুস্বাদু লেগেছে। আপনার আলু পুঁইশাক কুমড়ক দিয়ে চিংড়ি মাছের রেসিপি তৈরি দেখে খুবি সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আপনার রেসিপি ভালোভাবে দেখে শিখে নিলাম। পরবর্তীতে তৈরি করব। এতো মজাদার রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

কুমড়াটা বেশ লাল ছিল। লাল কুমড়াগুলো অনেক বেশি মিষ্টি হয়। যে সব কুমড়ায় মিষ্টি যত বেশি সেই তরকারি স্বাদ তত বেশি হয়। তাছাড়া ঠিকই বলেছেন দাদা চিংড়ি দিয়ে কুমড়া রান্না করলে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে। পুঁইশাকের ডাটা চিবোতে বেশ ভালই লাগে। কিন্তু এভাবে কুমড়ো এবং আলুর সঙ্গে মিক্স করে কখনো রান্না করা হয়নি। দাদা সব কিছুই ভেজে রান্না করেন সব সময়। কাঁচা কোন সবজি রান্না করেন না দেখছি। অনেক ধৈর্য নিয়ে রান্না করেন আপনি দেখেই বোঝা যায়। আমি রান্না করে করতে গেলে তাড়াহুড়ো করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করি। আপনি অনেক সময় নিয়ে এক একটা সবজি আলাদা আলাদা ভেজে তুলেন এর ফলে রিসিপির সাহায্যে আরো অনেক গুন বেড়ে যায় তা দেখেই বোঝা যায় । তাছাড়া ঝোল না রেখে আটো আটো করার কারণে মনে হয় খেতে আরো বেশি সুস্বাদু হয়। রেসিপিটির কালার দেখে মুখে পানি চলে এসেছে। বেশ লোভনীয় লাগছে।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন দাদা পুঁইশাকের ডাটাগুলোর চিবিয়ে খেতে আমার কাছেও খুবই ভালো লাগে যখনই পুঁইশাক রান্না করা হয়। ডাটাগুলো আমি আলাদা করে বেছে বেছে খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁইশাক রান্না করে এবং মিষ্টি কুমড়া রান্না করে খাওয়া হয়েছে। তবে এরকম তিন রকম সবজি একসাথে রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই মজা হয়েছে আসলে যে সবজিতে চিংড়ি মাছ দেওয়া হয় সেটা খেতে খুবই ভালো লাগে। রেসিপিটি আমার কাছে ইউনিক লেগেছে এভাবে একদিন আমি রান্না করে খেয়ে দেখব। ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

শীতের এই পড়ন্ত বিকেলে আশাকরি ভাল আছেন দাদা।আজকের রেসিপি খুব মজার রেসিপি। এই রেসিপি আমি নিজেই করি, খেতে বেশ দারুন লাগে। আপনি পুঁইশাকের ডাটা, মিষ্টি কুমড়া আর আলু দিয়ে রান্না করলেন সাথে চিংড়ি মাছ দিয়ে, খেতে অসাধারণ লাগে।আমি আমার শ্বাশুড়ির কাছ থেকে এই রান্না শিখেছি। কিন্তু আপনি ভেজে নিলেন মাছ আর মিষ্টি কুমড়া, আলু। আমি ভেজে করিনা। ভেজে নেয়ার কারনে এর টেস্ট আরো বেড়ে গেল দাদা। পুঁইশাকের ডাটা,লাউ শাকের ডাটা কিংবা ডাটা এর সবগুলোই আমার ভাল লাগে খেতে। আমি খুব সবজি পছন্দ করি।আপনি রান্নার পর ভাজা জিরার গুড়া ছিটিয়ে দিলেন,তাতে খাবারের স্বাদ আরো বেড়ে গেল।আর এই তরকারিটা মাখা মাখাই ভাল লাগে খেতে।মজার এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা। অনেক অভিনন্দন রইলো আপনার জন্য। ধন্যবাদ

 2 years ago 

আবারো চিংড়ি মাছের খনি পেলেন নাকি দাদা🤪? চিংড়ি মাছের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে করে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখতেই হয়। মিষ্টি কুমড়া দিয়ে চিংড়ি মাছ খেতে বেশ ভালো লাগে। তবে কখনো পুঁইশাকের ডাটা দিয়ে খাওয়া হয়নি। পুঁইশাকের ডাটা গুলো খেতে অনেক মজার হয়। চিংড়ি মাছের সাথে পুঁইশাকের ডাটা খেতে বেশ ভালো লাগে। তবে মিষ্টি কুমড়া আর পুঁইশাকের ডাটা দিয়ে কখনো চিংড়ি মাছ খাওয়া হয়নি। আলু দেওয়াতে নিশ্চয়ই খেতে আরও বেশি মজার হয়েছে। এভাবে একদিন রান্না করে খেয়ে দেখতে হবে। চিংড়ি মাছের খুবই মজার একটি রেসিপি তৈরি করে আমাদের সকলের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

 2 years ago 

হ্যাঁ দাদা ঠিকই বলেছেন আলু, কুমড়ো ও পুঁইশাক এই তিনটা দিয়ে নিরামিষ করলে খেতে দারুন মজা লাগে। আমি অনেকবার খেয়েছি বিশেষ করে গরম গরম খেতে বেশি মজা লাগে। আপনি চিংড়ি মাছ দিয়ে খুব সুন্দর একটা রেসিপি করেছেন যেটার স্বাদ বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেক ভালো লাগলো আপনার রেসিপি তৈরি।

 2 years ago 

বাহ দাদা দারুন রেসিপি তৈরি করেছেন তো। আলু, কুমড়ো তার সাথে আবার পুঁইশাক ব্যাপারটা একদম অবাক লাগলো আমার কাছে। কারণ কখনোই আমরা পুঁইশাকের সাথে কুমড়ো দিয়ে রান্না করিনি। আজকে একদম নতুন রেসিপি দেখলাম আপনার কাছে। আর সবসময় কুমড়ো চিংড়ি দিয়ে খেতে ভালো লাগে। চিংড়ি মাছ আর কুমড়োর রেসিপি যেন অমৃত লাগে। যদি কুমড়া মিষ্টি হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। যাই হোক, রেসিপিটি আমার কাছে বেশ দারুন লাগছে। একটা কথা ঠিক বলেছেন দাদা,
পুঁইশাক এর ডাটা খেতে কিন্তু মজা লাগে। আর এর সুগন্ধাটাও তরকারির স্বাদটা অন্যরকম করে দেয়। সর্বোপরি আমার কাছে একদম ইউনিক লাগল রেসিপিটি। যদিও মিষ্টি কুমড়ো নেই কিন্তু রেসিপিটি খাবার খুব ইচ্ছা রইলো। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 2 years ago 

শরীরের পুষ্টির জন্য কুমড়ো যে সর্বোত্তম সবজি এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। মিষ্টি কুমড়ো আমি এমনিতেই খুব ভালো খাই। এই মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে তৈরি কোন রেসিপি একটু মিষ্টি মিষ্টি লাগার কারণে আমার বেশ ভালই লাগে। আজকের রেসিপিটি অসাধারণভাবে উপস্থাপন করেছেন খুব ভালো লাগলো তা দেখে।

 2 years ago 

দাদা পুই শাকের এই ডাটার একটা আলাদা স্বাদ রয়েছে। আমি তো এটা রান্না করলে তরকারি থেকে উঠিয়ে নিয়ে খাওয়া শুরু করি। আর এর সাথে মিষ্টি কুমড়া আর চিংড়ি মাছ দিলে তো কথাই নেই। ভীষণ সুস্বাদু হয়েছে তরকারিটা বোঝাই যাচ্ছে। আর পুষ্টিগুনের কথা কি বলবো, এটা পুষ্টিকর নিঃসন্দেহে। দাদা আমিও ইদানিং আপনাকে দেখে বাজারে গেলে কিছুটা হলেও চিংড়ি মাছ কিনে নিয়ে আসি, যদিও দাম অনেক বেশি। গতকাল আমিও চিংড়ি মাছ দিয়ে একটা রেসিপি করেছিলাম 🤗

ধন্যবাদ দাদা স্বাদের রেসিপি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য।

 2 years ago 

দাদা,আজকের রেসিপিটা খুবই সুন্দর ও লোভনীয় হয়েছে।আসলে আলু ও পুঁইশাক আমার খুবই পছন্দের।আর মিষ্টি কুমড়া মিষ্টি হলেই তরকারি বেশি সুস্বাদু খেতে হয়।এই তিন প্রকার সবজি দিয়ে আপনি রেসিপি তৈরি করেছেন এটা নিঃসন্দেহে বেশ পুষ্টিকর।আমার তো শীতের সময় এই ধরনের ডাটা চিবাতে বেশ মজা লাগে।এমনিতেই এটি নিরামিষ খেতে ভালো লাগে আর আপনি চিংড়ি দিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো।চিংড়ি মাছের খোসা ফেলে দিয়ে রান্না করেছেন এতে চিংড়িগুলি বেশ ছোট ছোট লাগলেও খেতে বেশ সুস্বাদু হয়।ধন্যবাদ দাদা।