প্রকৃতির বিষ্ময়কর রত্ন
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে উদ্ভিদ সম্পর্কে কিছু আলোচনা করবো। এই উদ্ভিদগুলো আসলে কোনো সাধারণ উদ্ভিদ নয়, সমগ্র পৃথিবী জুড়ে উদ্ভিদ আছে, যা খুবই বিরল। এক প্রকার বলা যায়, এই উদ্ভিদগুলো প্রকৃতির দান করা এক একটা রত্ন। প্রকৃতি যে কত রহস্যময়, তা আমাদের কল্পনার বাইরে। প্রকৃতির গভীরে অনেক অজানা রহস্য লুকিয়ে আছে, যা আমাদের অবাক করে জানার পরে। উদ্ভিদ তো অনেক প্রকারের আছে, যেমন- আমরা সাধারণত সেইসব উদ্ভিদ জানি, যারা আমাদের ফল, ফুল দেয় এবং ঔষধি উদ্ভিদ সম্পর্কেও জানি। কিন্তু এমন কিছু উদ্ভিদ আছে, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ অংশ। এই ফুল সবথেকে বড়ো আকৃতির হয়ে থাকে।
এইধরণের ফুল আমরা সাধারণত আমাদের এইসব দিকে কখনো দেখিনি। এই ফুলটি সাধারণত corpse flower নামে বেশি পরিচিত। এইসব ফুল বা উদ্ভিদ কোনো সাধারণ জায়গায় হয় না বা দেখতে পাওয়া যায় না। তবে এদের ইন্দোনেশিয়ার দিকে গভীর অরণ্যের মধ্যে দেখা যায়। এই ফুলের একটা বিশেষ পরিচিতি হলো একধরণের গন্ধ ছড়ায়, যা পঁচা মাংসের মতো লাগে। এই ফুলের আরো অবাক করা বিষয় হলো অর্থাৎ একপ্ৰকার চমকে যাওয়ার মতো। এই ফুলের ব্যাস ৩ ফুট পর্যন্ত হয় এবং এই একটা ফুলের ওজন হয়ে থাকে প্রায় ১১ কেজির উপরে। যা আমাদের কল্পনারও বাইরে, শুনলে অবাক হয়ে যাওয়ার মতো বিষয় বা রীতিমত ভাবনায় ফেলে দেবে, যে একটা ফুলের ওজন এতো হয়!
প্রকৃতির এক চমকপ্রদ দান। আর এই বিরল ফুলটি মাত্র কয়েকদিনের জন্য ফুটে থাকে। ফুটলেও সেটা বেশিদিন স্থায়ী না, তাহলে কতটা বিরল উদ্ভিদ এইসব। এরপরে মরুভূমির এক অদ্ভুত বিরল উদ্ভিদ আছে। এই উদ্ভিদটিকে Welwitschia mirabilis বলে। এই উদ্ভিদের নাম যেমন অদ্ভুত, তেমনি জটিল। তবে এইসব উদ্ভিদ আমাদের এইসব মরুভূমিতে পাওয়া যায় না, যেমন রাজস্থানের এইদিকে মরুভূমি অঞ্চল থাকা সত্বেও এই উদ্ভিদ এখানে নেই। এইগুলো নামিবিয়ার এক মরুভূমিতে পাওয়া যায়, যা খুবই বিরল এক উদ্ভিদ। সব থেকে মারাত্মক অদ্ভুত বিষয় হলো, এই উদ্ভিদের মাত্র দুটি পাতা হয়ে থাকে আর উদ্ভিদটি প্রায় ১ হাজার থেকে ২ হাজার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
আশ্চর্জনক এইসব উদ্ভিদ, যা ধারণারও বাইরে এইসব উদ্ভিদের পরিচয়। এরপরে আরো একটা বিরল উদ্ভিদ আছে, যার ফুল মারাত্মক দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে। বলা যায়, পৃথিবীতে এর মতো দুর্গন্ধযুক্ত ফুল আর একটাও নেই। আগের একটি ফুল বলেছিলাম মাংসের মতো গন্ধ, কিন্তু এই ফুলটি তার থেকে একদম আলাদা। এটিও ইন্দোনেশিয়ার দিকে পাওয়া যায়। তবে এই ফুলটির উচ্চতা আগেরটার থেকে আরো বেশি, কারণ এটি প্রায় ১০ ফুটের মতো লম্বা হয়। এর দুর্গন্ধটা মূলত ছড়ায় যখন ফুলের পাপড়িগুলো মেলে। তবে এই ফুলটি সহজে দেখতে পাওয়া যায় না, বেশ কয়েক বছর পরে মাত্র একবার ফুটে থাকে।
এইসব খুবই বিরল জাতের, যা ইচ্ছা করলেও যখন তখন দেখা যায় না। এরপরে ghost orchid নামের একধরণের অদৃশ্য ফুল আছে, যা খুবই বিরল। এই ফুলগুলো সাধারণত কিউবা, ফ্লোরিডা ও বাহামায় পাওয়া যায়। এই orchid এর ফুলগুলো সাধারণত হাওয়ায় ভেসে থাকার মতো দেখায়, তাই একে ghost orchid হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এইগুলো প্রকৃতিতে বিরল, তবে এইগুলো প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে থাকে। এই ফুলের সৌন্দর্য অসাধারণ এক কথায়। এরপরে মাছের নামে একধরণের উদ্ভিদ আছে। মাছের নামে বললাম, কারণ এর নাম হলো jellyfish tree . তবে এটি বর্তমানে সমীক্ষায় দেখা গেছেন বিলুপ্তির পথে। এটি সেশেল নামের এক দ্বীপপুঞ্জে পাওয়া যায়।
এই উদ্ভিদটিকে একসময় বিলুপ্ত উদ্ভিদ হিসেবে ধরা হতো, কিন্তু পরে এই উদ্ভিদের কয়েকটি জাত পাওয়া যায়। এই উদ্ভিদটি পৃথিবীতে সবথেকে দুর্লভ, কারণ এটির ফল ও বীজ পাওয়া দুষ্কর, তাই নতুন উদ্ভিদ জন্মানো কঠিন একপ্রকার। এরপরে একধরণের অদ্ভুত বিরল উদ্ভিদ আছে, যার আকার বিশাল। তবে এই উদ্ভিদটি জল ধরে রাখার জন্য খুবই বিখ্যাত, তাই একে অনেকে একটা গাছ না বলে ট্যাংক হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকে। আফ্রিকার দিকে পাওয়া যায় এই উদ্ভিদটি।
এটি baobab tree নামে পরিচিত আফ্রিকার দিকে, তবে এইসব উদ্ভিদের বয়স অনেক বেশি হয়ে থাকে, প্রায় হাজার হাজার বছর। আর এইসব গাছের গুঁড়িগুলোতে প্রচুর জল সংরক্ষণ করে রাখার ধারণ ক্ষমতা আছে। আর ওখানকার খরার মৌসুমে কাজে লাগে। আসলে এইসব বিরল উদ্ভিদ এর অনেক কিছুতে অনেক অবদান আছে। কিন্তু এমনিতেই সমগ্র পৃথিবীতে এইসব উদ্ভিদ বিরল, তারপরে বন উজাড়ের ফলে এইসব আরো বিলুপ্তের পথে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
corpse flower এই ফুল বিষয় প্রথম জানতে পারলাম আপনার পোষ্টের মাধ্যমে। তার থেকেও বেশি অবাক হলাম এই ফুলের ওজনের কথা শুনে। এরপরেও মরুভূমির আরও এক অজানা ফুলের কথা শেয়ার করেছেন। সব মিলিয়ে বেশ তথ্যসম্পন্ন ছিল আপনার আজকের পোস্টটি।
প্রকৃতি সত্যিই অনন্য! আপনার পোস্টে প্রকৃতির সৌন্দর্য এমন সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে যে মনে হচ্ছে চোখ বন্ধ করলেই সব দেখতে পাচ্ছি।আপনার পোস্টটি খুবই চমৎকার।প্রকৃতির সবচেয়ে অবাক করা রত্ন কোনটি বলে আপনি মনে করেন? আমার মতে, অরোরা বোরিয়ালিস সত্যিই মায়াবী!