আয়নার অপর পিঠে (পর্ব ২ )
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে "আয়নার অপর পিঠে" গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করে নেবো। তো সৌমিত্র ওইদিন রাতে দেখলো তার বাড়িতে আনা সেই ঘড়িটার টিকটিক আওয়াজও বন্ধ হয়ে গেলো। সেই মুহূর্তে তার চোখ যায় আয়নার দর্পনের দিকে। ঘর তো একদিকে অন্ধকার হয়ে পড়ে আছে। ওই মুহূর্তে সে দেখলো আয়নার দর্পনে একটা অন্যরকম আলোর আভা পড়ে আছে। এর মধ্যে একটা অদ্ভুত এবং আশ্চর্যকর বিষয় হলো যে, এখানে সৌমিত্র তো খাটে শুয়ে আছে, কিন্তু আয়নার ভিতরে একজনকে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পেলো। যেন একটা প্রতিবিম্ব দেখতে পাচ্ছে এই আলোর রশ্নির মধ্যে। এখন এই ছায়ামূর্তিটি কি ছিল, সেটা এক বড়ো রহস্যের মতো বিষয়। কারণ সৌমিত্র এর প্রতিবিম্ব যদি হতো তাহলে তো তার শুয়ে থাকা অবস্থায় দেখাতো, কিন্তু সেই প্রতিবিম্বটি ছিল দাঁড়ানো অবস্থায়।
সৌমিত্রর প্রথমে একটু ভ্রম মতো মনে হলো, কারণ হয়তো ঘুম চোখে ভুল কিছু দেখতেও পারে। কিন্তু সে চোখ কুচলিয়েও দেখে একই প্রতিবিম্ব, এইবার তো সৌমিত্র এর মনের ভিতরে ভয়ের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে, তার শরীর যেন ভয়ে কাঁপার মতো পরিস্থিতি। দর্পনের ভিতরে যে ছায়ামূর্তিটি দাঁড়িয়ে ছিল, সে ধীরে ধীরে হাত তুললো এবং তার মুখে যেন একটা মৃদু হাসি ছিল। কিন্তু এই সৌমিত্র ছিল একদম স্তব্ধ আর হতভম্ব। সৌমিত্র তো নিজেই ভাবছে যে, এটা তার প্রতিবিম্ব, কিন্তু দুইজন দুইরকম এর পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে হঠাৎ করে একটা আওয়াজ হলো, যেন বাইরে জানালায় কেউ কিছু মেরেছে। সৌমিত্র দৌড়ে সেদিকে গেলো, কিন্তু সেখানে কাউকেই দেখতে পেলো না।
সেখান থেকে তার রুমে ফিরে দেখে সেই প্রতিবিম্বটি আর নেই, অন্ধকার ময় এক অবস্থা আর সেখান থেকে ঘন কালো ধোঁয়ার মতো আভাস। এই রাতটা কোনোমতে কেটে গেলো, কিন্তু সৌমিত্র রাতের কোনো ঘটনা কিছুতেই আর মনে করতে পারছে না, শুধু অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছে তার মধ্যে। আয়নার দিকে তাকাতেই যেন তার মন অস্বস্তিতে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। সৌমিত্র মনে মনে ভাবতে লাগলো যে, এটা তার কি মনের ভিতরে জন্ম নেওয়া কোনো কল্পনার আভাস, না কি সত্যিই এই আয়নার ভিতরে কিছু একটা ছিল! সেই ওইদিন কলেজে চলে গেলো এবং তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে বিষয়টা খুলে বললো, কিন্তু তার বন্ধু বিষয়টা তেমন গুরুত্ব দেয়নি। কারণ সে জানে যে সৌমিত্র একটু বেশি হরর মুভি এইসব দেখে।
ফলে তার মনের ভিতরে এইসব একটা কল্পনার প্রতিফলন। কিন্তু সৌমিত্রর কাছে নিছক এটা কোনো কল্পনা ছিল না। সৌমিত্র দুদিন যাবত আয়নার দিকে না তাকানোর সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু তাও বারবার তার চোখ না চাইতেও আয়নার দিকে চলে যেত। এই ঘটনা আবারো এক রাতে পুনরায় ঘটলো এবং সেই ছায়ামূর্তিটি এইবার কথা বললো অর্থাৎ সে সৌমিত্রকে বলছে, চাবি চাই...দরজা খুলে দাও। সৌমিত্র একটা আচ্ছা ঝামেলায় আটকে গেলো। সে এই আয়নার রহস্য উদ্ঘাটন করেই ছাড়বে বলে চিন্তা করলো। পরেরদিন সে সেই পুরোনো দোকানে চলে গেলো এবং মালিককে এই আয়নার বিষয়ে বিস্তারিত বলতে বললো। কিন্তু মালিক রাজি হয় না এই আয়নার বিষয়ে বলতে, কিন্তু সৌমিত্রও নাছোড়বান্দার মতো তার পিছনে লেগেছে, বারবার বলার পরে শেষে বলতে রাজি হলো- এই আয়নাটা মূলত ভারতের উত্তরবঙ্গের এক জমিদার বাড়ি থেকে এসেছে।
কথিত আছে প্রায় ১৮৯০ সালের দিকে এই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এক মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। সেখান থেকে সবাই বলাবলি করে যে এই আয়নার ভিতরে কিছু একটা অলৌকিক শক্তি আছে। তারপরের থেকে বাক্সে আটকে এই আয়নাটা সরিয়ে রাখা হয়। সৌমিত্র তখন ভাবছে, যে সে এই আয়নাটা কি তাহলে ঘরে এনে ভুল করলো! সবকিছু শুনে বাড়িতে এসে এক মনে সেই আয়নাটার সামনে বসে রইলো অনেক্ষন যাবত। এই মুহূর্তে সেই আয়নার ভিতর থেকে এক ঝলক বিদ্যুতের মতো অনুভূতি যেন সৌমিত্রের শরীর জুড়ে ছড়িয়ে পড়লো। এরপর আবারো সেই আয়নার দর্পনে সেই ছায়ামূর্তি, সেই চোখ আর হাসি......
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Un saludo mi preciado esta historia es digna de una pelicula, la verdad que el suspenso alrededor de aquella entidad detras del espejo me mantuvo muy pendiente del giro que fuera a tomar la historia, excelente escrito.
আয়নার অপর পিঠে পর্ব এক ঝটপট পড়ে আসলাম।আয়নার মধ্যে বেশ রহস্য লুকিয়ে রয়েছে মনে হচ্ছে।বেশ মজার রহস্য মনে হচ্ছে, পরের পর্বে জানা যাবে।সুন্দর রিভিউ করেছেন,ধন্যবাদ দাদা।