আয়নার অপর পিঠে (পর্ব ৫ )
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে "আয়নার অপর পিঠে" গল্পটির পঞ্চম পর্ব রিভিউ দেব। তো ওই ঘটনার পরে সৌমিত্র একপ্রকার হাঁপাতে হাঁপাতে দৌড়ে গিয়ে পৌঁছায় রাইটার্স বিল্ডিংয়ে। ওখানে যাবতীয় পুরোনো নথিপত্র আছে, আরো ডিটেইলসে বিষয়গুলো জানার জন্য সেখানে চলে যায় সৌমিত্র। এখন ওখানে সেই জমিদার বাড়ির পুরোনো তথ্য সংগ্রহ করার জন্য খোঁজাখুঁজি করে। এখন এখানে আসলে শুধু একটা জমিদার বাড়ির নথিপত্র আছে তা না, এখানে মূলত অনেক জমিদারি বাড়ির পুরোনো তথ্য সংগ্রহ করে রাখা আছে। সৌমিত্র ওখানে একজন লাইব্রেরি কর্মীকে বললে সে একটা লাহিড়ী স্টেট্ নামের জমিদারি রেকর্ড এর খাতা বের করলেন। এখানে মূলত সেই রেকর্ডে দেখা যায়, ১৮৯১ সালের পরে ওই জমিদারি পরিবারে বহু মৃত্যু ঘটে এবং সব মৃত্যুই নাকি ছিল অস্বাভাবিক।
সেখানে একজন জমিদার লিখেছিলেন যে, ওই আয়নার সামনে মেয়েটা দাঁড়ানোর পরে হঠাৎ ঝাকুনি দিয়ে আলো নিভে গেলো এবং ওখানে আমি ছুটে যেয়ে দেখি শুধু আয়না, মেয়েটা আর নেই। আর প্রতিবিম্ব উল্টে গেছে। তখন ওই জমিদার বুঝতে পারে যে, সে ওখানে আর নেই, অন্যপারে চলে গিয়েছে এই আয়নার মাধ্যমে ( আয়নার অপর পিঠে )। এই জমিদারের ডায়েরি পড়ার পরে সৌমিত্রর গা যেন ছমছম করতে শুরু করে। সেখান থেকে সৌমিত্র বাড়ি ফিরে এসে দেখে ঘর অন্ধকার এবং বাড়িতে কেউ নেই। বাড়িতে বলতে তার মাইই থাকে এবং তিনি বাজারে চলে যান বাজার করতে। এখন সৌমিত্র দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে আয়নার সামনে বসে পড়লো। এরপর সে যে চাবিটা পেয়েছিলো, সেটা আয়নার কাঁচে ছুঁইয়ে দিলো।
এরপর শুরু হলো আবার সেই ঘটনা এবং এটা ছিল আগের থেকে অদ্ভুত। এক ঝলক আলোর সাথে সাথে তীব্র হাওয়া বইতে শুরু করলো। সৌমিত্র তখন পরিস্থিতি দেখে চিৎকার করতে চাইলো, কিন্তু তার গলা দিয়ে আর স্বর পৌঁছালো না কোথাও । তারপর আয়নার দিকে তাকাতেই দেখলো, কেমন যেন একটা অন্যরকম লাগছে, সৌমিত্র সাহস করে আয়নার গায়ে হাত দিতেই তার হাত যেন আয়নার অপারে চলে যাচ্ছে। এইবার সৌমিত্র এটা নিয়ে মহা দ্বিধায় পড়ে গেলো, সে ভাবতে লাগলো- এই দরজা কি তাহলে আমার জন্য?আমি যদি ঢুকি, তাহলে কি আর আমার জগতে ফিরে আসতে পারবো! এই দ্বিধার পরেও তার মন টানলো যে না, আরেকবার হাত দিয়ে দেখি। এইবার দিতে গিয়ে সৌমিত্র সম্পূর্ণ আয়নার ভিতরে ঢুকে পড়লো।
আয়নার ভিতরে সে যেন একটা আলাদা জগতে প্রবেশ করেছে। সেখানে চারিপাশে অন্ধকার, কোনো শব্দ নেই, যেন একদম শুনশান। সৌমিত্র সেখানে যাওয়ার পরে কত সময় যে পার হয়ে গিয়েছে, সেটা তার ধারণা নেই। তার আশেপাশে যেন হঠাৎ করে ঘন কুয়াশার মতো ধোঁয়া ধীরে ধীরে সরে গিয়ে পরিষ্কার হতে লাগলো। এরপর সে দেখতে পেলো, যে সে একটা ঘরের মধ্যে আছে। কিন্তু আসলে সেটা তার ঘরের মতো হলেও আবার তার ঘরের মতো না অর্থাৎ সবকিছু উল্টো দিকে। সবকিছু অবিকল থাকলেও শুধু প্রতিফলিত অবস্থায় আছে। সৌমিত্র ওখানে একটু কাঁপা স্বরে জিজ্ঞাসা করলো যে- এটা কি আয়নার দুনিয়া? এরপর সে ধীরে ধীরে দরোজার মুখের দিকে এগিয়ে গেলো এবং দরজাটা একপ্রকার খোলাই ছিল, শুধু ভজিয়ে দেওয়া ছিল।
দরোজা খুলে সৌমিত্র দেখলো যে, বাইরে পৃথিবীটা অন্যরকম দেখতে। শহরটাও যেন একদম কলকাতার মতো, কিন্তু চারিপাশে কেউই নেই। শহরটি যেন নীরবতা পালন করছে। সৌমিত্র কলকাতার রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কলেজ স্ট্রিটের দিকে এগিয়ে গেলো এবং সেখানে পুরোনো বইয়ের দোকানগুলো দেখলো একদম ধংস হয়ে গিয়েছে। তার আশেপাশে বিল্ডিংগুলো যেন বিবর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে, যেন বহু বছর এই শহরে কেউ বসবাস করে না, সবকিছুই পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর হঠাৎ শুনশান জায়গায় সৌমিত্রর পেছন থেকে একটা আওয়াজ ভেসে আসলো-......
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.