শান্তিনিকেতন ভ্রমন ( পর্ব ১২ )

in আমার বাংলা ব্লগlast month
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

Photo by @winkles

আজকে আপনাদের সাথে শান্তিনিকেতন ভ্রমণ এর আরো কিছু আলোকচিত্র শেয়ার করে নেবো। গতকাল কিছু আর্ট জাতীয় ভাস্কর্য শেয়ার করেছিলাম, আজকেও এইরকমই কিছু ভাস্কর্য থাকবে। এই দৃশ্যে আপনারা প্রথমে মুখোশধারী একটি কাঠের তৈরি ভাস্কর্য দেখতে পাচ্ছেন। এটি একপ্রকার আদিবাসীদের অদ্ভুত একটা ভাস্কর্য। এটিও তাদের কোনো একটা বিশেষ প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে তাদের সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি অনুযায়ী। তবে এই ভাস্কর্যটা দেখে কোনো শিকারী প্রতিমূর্তি এর মতো লাগছে। এর চোখ আর মুখের খোদাই এতো নিঁখুত হয়েছে যে, বিষয়টা দারুন ফুটে উঠেছে। তবে এই ভাস্কর্যটা খুবই অদ্ভুত প্রকৃতির। যাইহোক, এরপরে আপনারা দেখতে পাবেন কিছু অসাধারন ভাস্কর্য। এখানে "HEUN COCONUT SHELL TODDLY CONTAINER" হলো একধরণের পাত্র।

Photo by @winkles

এটি নারিকেলের খোলস দিয়ে তৈরি করে থাকে। আর এই ধরণের পাত্রে তারা জল সংগ্রহ করে রাখতো। এই ধরণের পাত্রগুলো যেমন একদম প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হয়ে থাকে, তেমন গ্রামীণ অঞ্চল সমূহের দিকে এইসব খুবই প্রচলিত ব্যাবহারের ক্ষেত্রে। এরপর "KUN TAFAL" নামের একটি পাত্র, যেটিও একধরণের পাত্র। এটিও নারকেলের অংশ দিয়ে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হয়ে থাকে। তবে এটি নারিকেলের একদম খোলের ভিতরে যে অংশ থাকে, সেটি দিয়েই করা হয়ে থাকে। আর এটি দিয়ে ছোট ছোট কৌটা এবং বাটি তৈরি করা হয়ে থাকে। আর এই পাত্রের মাধ্যমে যেমন জল রাখা হয়, তেমনি আবার বিভিন্ন তরল জাতীয় খাবারও রাখা হয়ে থাকে। এরপরে আরো একটা ভাস্কর্য হলো "TANIOYO", এটি দিয়েও প্রাকৃতিক ভাবে একধরণের টুপি জাতীয় ঢাকনা তৈরি হয়।

Photo by @winkles

এটি মূলত এই নারিকেলের যে উপরের অংশ থাকে, সেটি দিয়েই তৈরি করা হয়। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক আর ঢাকনার কাজে ব্যবহার করা হয় থাকে। এরপরে আপনারা ভাস্কর্য হিসেবে একধরণের ঘরের দৃশ্য দেখতে পাবেন। এটিকে সাধারণত আদিবাসীদের ভাষায় chanvi বা Beehive House বলে থাকে। এই ঘর অনেকটা মৌচাকের আকৃতির মতো দেখতে হয়ে থাকে। এইগুলো নরমালি ছাউনি হিসেবে খড় আর কাঠামো হিসেবে বাঁশ এর ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে এই ঘরগুলো উঁচু খুঁটির সাহায্যে এমনভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে যে, এখানে কোনো বন্য প্রাণীর আক্রমণ এবং বন্যার জল উঠলেও সহজে কিছু না হয়। এরপরে আরো কিছু ভাস্কর্য আছে, যেমন-এখানে আপনারা একটা গ্রামীণ দৃশ্যের পটভূমি দেখতে পাবেন, এখানে মূলত এটি একটি আর্ট এর মাধ্যমে বিষয়টা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে। এখানে মূল বিষয়টা হলো একটা লোক কাঠের গুঁড়িটিকে খোদাই এর মাধ্যমে একটি ঐতিহ্যবাহী নৌকার রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এছাড়াও এই দৃশ্যে আরো কিছু বিষয় ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এখানে একটি উপকূলবর্তী গ্রাম হিসেবে বিষয়টাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যেখানে ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা করছে আবার গ্রামের মহিলারা বসে তাদের কাজ করছেন। এখানে সবমিলিয়ে একটি গ্রামীণ জীবনযাপনের দৃশ্যের বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে। এরপরের দৃশ্যে আপনারা একধরণের হাঁড়ির দৃশ্য দেখতে পাবেন। তবে এটি শুধু একটি সাধারণ হাঁড়ি না, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী কামারুপী হাঁড়ি। সাধারণত এই হাঁড়িটির গায়ের কালার কালো বর্ণের, তাই এর নাম সম্ভবত এইরকম রাখা হয়েছে। এছাড়া এই হাঁড়ি ভারতের কামরূপ অঞ্চল থেকে সংগৃহিত এবং ওখানকার ঐতিহ্যবাহী হিসেবে তাদের প্রত্যহ জীবনের একটি অংশ হিসেবে ব্যবহার হতো। এইধরণের হাঁড়িতে জল, দুধ সহ বিভিন্ন ধরণের খাবার সংগ্রহ করা হতো। ফলে এই ধরণের হাঁড়ি ওখানকার সংস্কৃতি অনুযায়ী অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.