শান্তিনিকেতন ভ্রমন ( পর্ব ২৩ )

in আমার বাংলা ব্লগ2 days ago
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

আজকে আপনাদের সাথে শান্তিনিকেতন ভ্রমণ এর আরো কিছু আলোকচিত্র শেয়ার করে নেবো। এখানে আপনারা শঙ্খা আকৃতির ভেতরে একটি গণেশ মূর্তির দৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন। এখানে এটি একটি অনন্য ভাস্কর্য বলতে গেলে। এই শঙ্খা আকৃতির কাঠামোটি মোটামুটি বেশ বড়ো আছে, আর এই গণেশের যে ভাস্কর্যটি এটি মূলত একটি পাথরের মাধ্যমে ডিজাইন করা। এই কাঠামোর মাধ্যমে অর্থাৎ শ্রী গণেশের যে ভঙ্গিমাটি এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা শিল্পের সূক্ষ্মতা ও ভালোবাসার সৃজনশীলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এছাড়া এখানে রয়েছে পাথরের গড়া গণেশ ও কৃষ্ণ মূর্তি। তবে এখানে একে শালগ্রাম নামেও বলা যায়। এখানে দুটি ভাস্কর্যই আলাদা আলাদা ভঙ্গিমায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

গণেশের মূর্তিটিও যেমন এখানে তার ভঙ্গিমায় গড়া হয়েছে, তেমন এখানে কৃষ্ণের বাঁশি বাজানোর মাধ্যমেও এই বিষয়টা গঠিত করা হয়েছে। তাছাড়া এই দুটি মূর্তির কারুকার্যের যেমন নিখুঁত ভাবমূর্তি রয়েছে, তেমন এখানে গণেশের মূর্তির মধ্যে একটা শান্ত ভাব ফুটিয়ে তুলেছে এবং কৃষ্ণের মূর্তিতে সুরের নৃত্যের একটা ভাব ফুটিয়ে তুলেছে। এরপরে রয়েছে নারী-পুরুষের মূর্তি, যা আধুনিক লোকশিল্পের আদলে তৈরি করা। এখানে প্রতিটি মূর্তির গঠন আলাদা আলাদা ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যেমন-কোনোটা লম্বা গলা, সরু চোখ, রঙ্গিন পোশাকের মাধ্যমে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে সবগুলো মূর্তির গঠনের মাধ্যমে আদিবাসীদের চেহারার ভাবধারা তুলে ধরা হয়েছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এখানে মুখোমণ্ডলগুলোতে একটা হাস্যোজ্জ্বল ভাব এবং প্রাণবন্তের চিহ্ন বা প্রতীক তুলে ধরা হয়েছে। যেন একধরণের জীবন্ত গ্রামীণ নাট্যশিল্পের বিষয়টা এখানে ফুটিয়ে তুলেছে কারুকার্যের মাধ্যমে। এরপরে রাধা-কৃষ্ণ এবং নারী মূর্তির আলাদা আলাদা তিনধরণের ভাস্কর্যের শৈল্পিক রূপ তুলে ধরা হয়েছে। রাধা-কৃষ্ণের যে যুগলবন্দী রূপ রয়েছে, তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া আরেকটিতে একটা নারী নিজের কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অর্থাৎ একটা নৃত্যকৃত শিল্পের ন্যায়। এখানে শাস্ত্রীয় দিক থেকে বিবেচনা করে শিল্পের দারুন কারুকার্য উঠে এসেছে। এখানে আরো একটি শঙ্খা আকৃতির মধ্যে দেবীমূর্তির দৃশ্য রয়েছে।

Photo by @winkles

এখানে এই বৃহৎ শঙ্খের মধ্যে একটি মা লক্ষ্মীর মূর্তির কারুকার্য করা রয়েছে। শিলার ভেতরে এমন রূপায়ণ অত্যন্ত চোখে আকৃষ্ট করার মতো। সৌন্দর্যের এক অনন্য রূপ। এখানে শিলার মাধ্যমে শিল্পী একদম হুবহু দৃশ্যের পটভূমি তুলে ধরেছে, দারুন কারুকার্য। এরপরে রয়েছে গণেশের মূর্তি ও সাপের প্রতীক সমূহ বিভিন্ন বিষয়। এখানে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন প্রতীক, যেমন- গণেশের মূর্তি, সাপের গোল বাঁধা প্রতীক এবং অন্য এক দেবদেবীর মূর্তি। সাপ বিষয়টা কিন্তু আবার আদিবাসী সংস্কৃতিতে শক্তির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। আর তাদের সংস্কৃতিতে গণেশ হলো শুভরম্ভের দেবতা।

Photo by @winkles

এখানে একটি লাল পাথরের ভাস্কর্যের মূর্তিতে একটি নারীর নাচের ভঙ্গিমায় হাতে হাত রেখে শরীর বাঁকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই ধরণের ভাস্কর্য সাধারণত ভারতীয় সংস্কৃতিতে তাদের নৃত্যকলার অনুপ্রেরণায় তৈরি করা। এরপরে রথের চাকার মতো অর্থাৎ এটাকে ধর্মচক্র বা সূর্য মন্দিরের চাকা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এই চাকাটি সাধারণত কনার্কের সূর্য মন্দিরের অনুকরণে নির্মিত করা। এই চাকাটিতে ভারতের প্রধান স্থাপত্যশিল্প, ধর্ম ও সময়ের প্রতীক তুলে ধরা হয়েছে। সবকিছুতে দারুন কারুকার্য।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 days ago 

শান্তিনিকেতন ভ্রমন আপনি সুন্দর কাটিয়েছেন তা এই অসাধারণ ফটোগ্রাফিগুলি দেখলেই বোঝা যায়।আসলে ঝিনুকের মধ্যে বিভিন্ন দেব ও দেবীর মূর্তি যেমন অপূর্ব তেমনি ভাস্কর্য্যগুলিও।দেখে মুগ্ধ হলাম, ধন্যবাদ দাদা।