চিত্রনাট্যের খুনি ( পর্ব ২ )

in আমার বাংলা ব্লগ27 days ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

ChatGPT Image Apr 19, 2025, 01_40_33 AM.png

Image Created by OpenAI

আজকে আপনাদের সাথে "চিত্রনাট্যের খুনি" গল্পের দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করে নেবো। এই ঘটনাগুলো প্রসেনের সাথে ঘটার পরে সে বিষয়টাকে একপ্রকার তেমন গুরুত্ব না দেওয়ার মতোই দিয়েছিলো। ফলে সে নিজের মনকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, এইসব ছিল একটা ভ্রম এবং মনের ভুল। গল্পের চিন্তায়, অনেক রকমের মানসিক চাপ ইত্যাদি এইসব নানা কারণে হয়তো এইসব প্রভাব তার মনে পড়েছে, সেটাই তার ধারণা। কিন্তু দিন দিন এই ঘটনাগুলো এমনভাবে তার সামনে মোড় নিচ্ছিলো যে, সে অনেক ভাবে এইসব তুচ্ছ করলেও তার মনে সন্দেহের দানা একটু একটু করে বাঁধতে শুরু করলো। একদিন গভীর রাতে, প্রসেন তখন একপ্রকার গভীর নিদ্রায়।

এমন সময়ে হঠাৎ একটা বিকট শব্দ হয় আর তার ঘুমটা ভেঙে যায়। সে যেখানে ঘুমিয়েছিলো, তার পাশের টেবিলেই ছিল টাইপরাইটার এবং সেটি দেখে নিচে পড়ে গেছে। পড়ে যাওয়ার কারণে টাইপরাইটার এর কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেমন রিবন এইসব ছিড়ে যায়। এখন আশ্চর্যের বিষয় হলো, কাগজের অর্থাৎ পেজের মাঝখানে লেখা আছে- "তোর গল্পের খুনি এখন তোর গল্পই লেখে"। প্রসেনের মাথায় একপ্রকার যেন অসহ্য যন্ত্রণার মতো শব্দ বাজছিলো অর্থাৎ চীন চীন করে। এই গল্পটা প্রসেন জানে এবং সেই লিখছেন এবং তার সমস্ত কল্পনা দিয়ে। কিন্তু এখন তার কাছে বিষয়টা মনে হচ্ছে যে, গল্পটা প্রসেন আর লিখছে না, বরং গল্পই তাকে লিখে দিচ্ছে।

বিষয়টা খুবই গুরুতর রহস্যময়ের মধ্যে ফেঁসে আছে। রাত শেষ হলে প্রসেন চিন্তা করলো সেখানকার স্থানীয় গ্রন্থাগারে যাবে এবং সেখানে যাওয়ার পরে ওই গ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান এর কাছে এই বাংলো বাড়িটা সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে চাইলেন। লাইব্রেরিয়ান বললেন যে, সেই তো একসময় এই বাংলোতে রুদ্র নামের একসময়ের লেখক ছিলেন। কিন্তু তিনি হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। প্রসেন তার পেজের মাঝখানে যেমনটা লেখা পেয়েছিলো, ঠিক সেরকমটাই ছিল তার ক্ষেত্রেও। প্রসেন রীতিমতো ভয়ে ঘেমে গেলেন, তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। সেই লাইব্রেরিয়ান প্রসেনকে আরো বললেন যে, রুদ্র এর পাণ্ডুলিপি পাওয়া গিয়েছিলো অর্ধেক লেখা অবস্থায়।

আর সেখানে শেষ একটা লাইন ছিল- "খুনি আমার গল্প শেষ হওয়ার আগেই আমাকে মেরে দেবে"। এরপর প্রসেন সেই গ্রন্থাগার থেকে বাংলোতে ফিরে এসে তার আগের লেখাগুলো পর্যবেক্ষণ করলেন। এরপর তিনি সেখানে দেখেন যে, কিছু লাইন এমন যা তিনি কখনোই লেখেননি। এখন বিষয়টা দাঁড়িয়েছে যে- "প্রসেন এখন ওই বাংলোতে আর একা নন, সে এখন একটা চরিত্র। খুনিও এখন আর স্ক্রিপ্টের বাইরে নয়। আর এই গল্পের শেষ সারাংশ হবে রক্ত দিয়ে"। এরপরেই প্রসেন বুঝতে পারলেন যে, তিনি যে চিত্রনাট্য লিখছিলেন, সেই খুনির চরিত্রটাই যেন আস্তে আস্তে তাকে দখল করে নিচ্ছে।

এরপর থেকে রাতে প্রসেনের স্বপ্নের মধ্যেও খুনি আসতে থাকে-যেন এক মুখহীন ছায়ামূর্তি, যার হাতে রক্ত মাখা টাইপরাইটার। গভীর রাতে আবারো একদিন একটা বিকট শব্দ হলো এবং প্রসেন এইবার সাহস করে সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখলেন যে, কোনো মানুষ নেই, কিন্তু অন্ধকারেই যেন এক ছায়ার মতো অবয়ব টাইপ করে যাচ্ছে। আবার সেই টাইপরাইটারের উপরে রক্তের দাগ পড়ে আছে। প্রসেন দেখে ভয় পেয়ে আস্তে আস্তে ওই অন্ধকারের মধ্যে পিছনের দিকে সরে আসতে লাগলেন এবং তার নিজের ঘরের লাইটও নিভে গেলো। আর এরপরেও শুধু বিকট শব্দ হতে থাকে।.....


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.