ক্রোনোবায়োলোজি
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আচ্ছা আমরা সবাই যেমন ঘড়ি দেখে নিত্যদিন খাওয়া, ঘুমানো ইত্যাদি নানা কাজ সময় অনুযায়ী করে থাকি। কিন্তু এটার বাইরেও বায়োলজি ভাষায় আমাদের দেহেরও একটা ঘড়ি আছে অর্থাৎ দেহঘড়ি। এটা এই আমাদের নিত্যদিনের বাইরের সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেহের ভেতরের সব অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এটা এক গভীর রহস্যময় বিষয়। আসলে এই ঘটনাকে বায়োলজি ভাষায় আরো একটা নাম হলো "ক্রোনোবায়োলোজি"। ক্রোনো কথাটির অর্থই হলো সময় এখানে আর বায়োলজি যেটা জীববিজ্ঞানের ভাষায় থেকে থাকে।
এটা শুধু আমাদের সভ্য মানব জাতির মধ্যে ছাড়াও বাকি অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রেও এই দেহের অভ্যন্তরীন ঘটনাগুলো একই হয়ে থাকে। এইসব আমাদের দেহের একধরণের বায়োলজিক্যাল ক্লক, যা সহজ বাংলায় বডি ক্লক বলে থাকে। আমাদের দেহে সারাদিন রাত মিলিয়ে যে ছন্দের প্রতিক্রিয়া চলে থাকে অর্থাৎ- ঘুম, দেহের হরমোন নিঃসরণ, দেহের তাপমাত্রা ইত্যাদি। আর এইসব সার্কাডিয়ান রিদম এর মাধ্যমে ঘটে থাকে, যা আমাদের শরীরের একটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়চক্র। এই সবকিছুই এই রিদম এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। আর এই সার্কাডিয়ান রিদম এর যে ছন্দ, সেটাও আবার পরিচালনার দায়িত্বে থাকে আমাদের মস্তিষ্কের কেন্দ্রবিন্দুতে হাইপোথ্যালামাসে অবস্থিত একধরণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চল।
আর এটাকে বায়োলজিকাল ভাষায় বলা হয়ে থাকে suprachiasmatic নিউক্লিয়াস। আমাদের নিত্যদিনের ঘুমের মধ্যে আর এই সময় অর্থাৎ ক্রোনোবায়োলোজি এর মধ্যে একটা পারস্পারিক সম্পর্ক রয়েছে। যেমন-আমাদের দেহের পরিকাঠামো অনুযায়ী বা শরীরকে সঠিক পর্যালোচনার জন্য সঠিক সময়ে ঘুমানো এবং জাগা দুটিই অপরিহার্য, কিন্তু আমাদের বেশিরভাগ মানুষের লাইফস্টাইল বর্তমানে তার উল্টোটা, যেমন আমি নিজে হা হা। তাছাড়া আমাদের অনিয়মিত ঘুমের কারণে কিন্তু শরীরে যে হরমোন কাজ করে থাকে, তার কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। আর এর ফলে আমাদের শরীরে ইমিউনিটি সিস্টেমেরও ব্যাঘাত ঘটে থাকে। তাছাড়া মানসিক সমস্যা এবং হৃদরোগের মতো ঝুঁকিও অনেকের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে।
আমরা যখন খাবার গ্রহণ করি, তখনও আমাদের শরীরের বিপাক ক্রিয়ার উপর অনেকটাই প্রভাব ফেলে থাকে। এখানে দিনে আর রাতে খাবার খাওয়ার মধ্যেও অনেক পার্থক্য রয়েছে অর্থাৎ আলাদা আলাদা সময়ে কোন খাবার কখন খেলে কিসের প্রভাব পড়ে থাকে সেটা। যেমন- রাতে যদি ভারী খাবার খাই বা অনেক দেরি করে খাই, তাহলে ওজন বাড়ার সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে। আর দিনের বেলা খাবার খেলে সেটার হজম করার ক্ষমতাও শরীরের পক্ষে বেশি থাকে, কারণ দিনের বেলা আমাদের নানা কাজকর্মের মাধ্যমে সেটা দ্রুত হজমে পরিণত হয়ে যায়। আমরা আসলে সময়কে কিন্তু কখনোই নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা, সময় তার নিজস্ব গতিতে চলতে থাকে। কিন্তু এই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যদি চলা যায়, তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সকলেই কমবেশি জানি কিন্তু এই ক্রোনোবায়োলজি সম্পর্কে আমার তেমন কোনো ধারণা ছিলো না।দাদা আপনার পোস্ট টি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম এবং অনেক কিছু বোঝার চেষ্টা করলাম।আমাদের জানার বাহিরেও যে কতকিছু রয়েছে তা খুব ভালোভাবেই জানলাম।অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পূর্ণ একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।🙏