পাটনাই মুরগির মাংসের সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি রেসিপি পোস্ট শেয়ার করে নেবো। অনেকদিন রেসিপি পোস্ট করা হয় না, আসলে এই দুই সপ্তাহ অনেক কাজের চাপ ছিল ঘরে-বাইরে মিলিয়ে। এই রেসিপিটা যদিও করেছিলাম বেশ কিছুদিন আগে, কিন্তু সাজানোর আর সময় হয়নি। যাইহোক, এই রেসিপিটা করেছিলাম মুরগির মাংসের। এটি ছিল পাটনাই মুরগির মাংস। তবে এই মাংস কেনা নিয়ে ছোট একটা গল্প বলি, মূলত আমি মুরগির থেকে হাঁস খেতে বেশি পছন্দ করি, তাই ওইদিনও গিয়েছিলাম হাঁস কিনতে। কিন্তু ঠিক করে ওইদিন দোকানটাই বন্ধ ছিল, এখন এসেছি যখন, তখন না নিয়ে যাবো না সেটাও মাথায় ছিল।

আর তার পাশের দোকানে মুরগি থাকলেও কিনিনা, কারণ তার ব্যবহার একটু খারাপ। তবে এই পাটনাই মুরগিটা বেশ বলিষ্ঠ ছিল, দেখে মনে হলো নিয়েই নেই। তবে লস হয়নি কিনে, ভালোই মাংস হয়েছিল, একটাতে প্রায় ২ কিলো ২০০ গ্রামের মতো। পাটনাই মুরগির মাংস তেমন খাওয়া হয় না, তবে মাঝে মাঝে এই ধরণের মুরগির মাংসের স্বাদ বেশ ভালোই লাগে। তবে পাটনাই মুরগিগুলোর রোস্ট করে খেতে সেই লাগে। যাইহোক, নরমালি এইটা আমি ঝোল ঝোল মতো করে রান্না করেছিলাম। আর খেয়েছিলাম মাঝে বৃষ্টির দিনে, দারুন লেগেছিলো মাংসটা। যাইহোক, এখন রেসিপিটার প্রস্তুত প্রণালীর দিকে চলে যাবো।


☀প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☀

❁উপকরণ
পরিমাণ❁
পাটনাই মুরগির মাংস
২ কিলো
গোল আলু
২ টি
পেঁয়াজ
৩ টি
রসুন
২ টি
আদা
১ পিস
চুঁইঝাল
পরিমাণমতো
জিরা, লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি, শুকনো লঙ্কা
পরিমাণমতো
লঙ্কার গুঁড়ো
২.৫ চামচ
তেজ পাতা
২ টি
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৬ চামচ
হলুদ
৫ চামচ
জিরা গুঁড়ো
২.৫ চামচ


পাটনাই মুরগির মাংস, গোল আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা


জিরা, লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি, শুকনো লঙ্কা, লঙ্কার গুঁড়ো, তেজ পাতা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


✦এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


☫প্রস্তুত প্রণালী:☫


➤আলু দুটির খোসা প্রথমে ভালোভাবে ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে নিয়ে কেটে রেখেছিলাম।

➤রসুনের কোয়াগুলো থেকে খোসা ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে আদার খোসা ছালিয়ে নিয়ে কেটে রেখেছিলাম। এরপর চুঁইঝাল এর খোসা ছালিয়ে কেটে নিয়েছিলাম।

➤রসুনের কোয়া এবং আদা মিক্সারের বাটিতে দিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে নিয়েছিলাম।

➤এরপর জিরা, লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি, শুকনো লঙ্কা সব গরম করে নেওয়ার পরে মিক্সারের বাটিতে দিয়ে একইভাবে পেস্ট তৈরি করে নিয়েছিলাম।

➤কড়াইতে তেল দিয়ে আলুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আলু ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤কড়াইতে আবারো তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালো করে ভেজে নিয়েছিলাম।

➤ভাজার পরে তাতে লঙ্কার গুঁড়ো এবং তেজ পাতা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে পেস্ট করে সব মশলাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালো করে কষিয়ে নিয়েছিলাম।

➤কষানোর পরে তাতে মাংসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে স্বাদ মতো লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর মাংসের সাথে ভালো করে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

➤মাংসটা ভালো করে কষিয়ে নেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা আলুর পিস আর চুঁইঝাল দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব একসাথে উল্টেপাল্টে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

➤মিক্স করার পরে তাতে পরিমাণমতো জল ঢেলে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা ভালো করে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম। পরে তাতে অল্প করে জিরা গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে আরেকটু জ্বাল দিয়ে নিয়েছিলাম।

➤তরকারিটা আমার ভালোভাবে তৈরি হয়ে গেলে জ্বাল নিভিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর মাংসের তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।


রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

হাঁসের মাংস খেতে আমারও অনেক ভালো লাগে। যেহেতু দোকান বন্ধ ছিল তাই আর হাঁস কিনতে পারেননি। অবশেষে পাটনাই মুরগি কিনেছেন জেনে ভালো লাগলো দাদা। যেহেতু ২ কিলোর উপরে মাংস হয়েছে তাই মনে হচ্ছে মুরগি খেতে ভালোই ছিল। আপনার তৈরি করা রেসিপি অসাধারণ হয়েছে দাদা।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year (edited)

দাদা, আমার কাছেও মুরগির মাংসের চাইতে হাঁসের মাংসের স্বাদ বেশি মনে হয়। খেতে ভীষণ মজা লাগে। তবে পাটনাই মুরগির মাংসের স্বাদও কম নয়। দাদা আপনি যাকে পাটনাই মুরগি বলছেন, আমরা তাকে লেয়ার মুরগি বলে থাকি। আর আমার এই লেয়ার মুরগির ১০০০ পোল্ট্রি খামার ছিল। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই, ব্যবসা করতে গিয়ে ৫০০ মুরগি মারা গিয়েছিল। যার কারণে লাভের ধন টিয়া খেয়ে ফেলেছিল 😭। যাইহোক দাদা, চুইঝাল দিয়ে খুব মজার করে পাটনাই মুরগির মাংসের রেসিপি তৈরি করেছেন, দেখেই তো খেতে ইচ্ছে করছে। খুবই লোভনীয় লাগছে মুরগির মাংসের রেসিপিটি। অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা, মজার এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

দাদা পাটনাই মুরগির নাম কখন শুনিনি। তবে আপনি কিন্তু দারুন রেসিপি করেছেন। আপনার রেসিপি দেখে কিন্ত বেশ সুস্বাদু মনে হচ্ছে। রেসিপির প্রতিটি ধাপ আমাদের মাঝে খুব সুন্দর করে উপস্থাপনও করেছেন।

 last year 

পাটনাই মুরগির মাংসের সুস্বাদু রেসিপি সুস্বাদু মনে হচ্ছে দাদা। আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার রেসিপির পরিবেশন আমার খুবই ভালো লাগে। আপনি এত সুন্দর ভাবে পরিবেশন করেন, এই রেসিপির ধাপ গুলো দেখে খুব সহজে শিখতে পারা যায়। এই রেসিপিটি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। তাই দেখে শিখে নিলাম।

 last year 

যেহেতু ২ কিলোর বেশি মাংস হয়েছে তাহলে মুরগির সাইজ টা বেশ বড় ছিল। যাই হোক রেসিপি তৈরিতে মুরগির মাংসের কালার দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু হবে। আর হ্যাঁ মুরগির মাংসের সাথে আলু যেন আরও বেশি মজা লাগে যাই হোক শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দাদা।

 last year 

পাটনাই মুরগির মাংসের সুস্বাদু রেসিপি দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। এত মজুমদার রেসিপি তৈরি করেছেন দাদা। আপনার রেসিপি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। এই ধরনের রেসিপি কখনো তৈরি করা হয়নি। তাই ধাপগুলো দেখে শিখে নিলাম, পরবর্তীতে তৈরি করবে ইনশাআল্লাহ।

 last year 

যে দোকানদারের ব্যবহার খারাপ থাকে, সেই দোকানে তো যাওয়া ই যায় না। কারণ উল্টাপাল্টা ব্যবহার দেখলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়, তখন ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। দাদা আপনার মতো আমারও হাঁসের মাংস খুব পছন্দ। তবে শীতকালে হাঁসের মাংস খেতে বেশি ভালো লাগে। যাইহোক পাটনাই মুরগির মাংসের রেসিপিটা দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে দাদা। রেসিপিটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু লেগেছিল। গরম গরম রুটি দিয়ে এই রেসিপিটা খেতে দারুণ লাগবে। রেসিপির উপস্থাপনা এবং পরিবেশনাও চমৎকার হয়েছে। যাইহোক এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

চুঁইঝাল কখনো খাওয়া হয়নি। আমাদের এদিকে এগুলো একদমই পাওয়া যায় না। মুরগির মাংস দিয়ে চুঁইঝাল রেসিপি দারুণ হয়েছে দাদা। হাঁস কেটার উদ্দেশ্য নিয়ে গেলেও অবশেষে মুরগি কিনে ফেলেছেন জেনে ভালো। পাটনাই মুরগি যেহেতু বড় ছিল আশা করছি খেতে অনেক ভালো লেগেছে।

 last year 

পাটনাই মুরগি কোনটাকে বলে দাদা চিনতে পারলাম না।তবে মুরগি কেটে রেখেছেন তা দেখে আমাদের দেশী মুরগির মতোই মনে হলো।আপনি এই মুরগি কিনেছেন কারন হাঁস কেনার জন্য গেলেও হাঁসের দোকান বন্ধ থাকাতে এই মুরগিটি এনেছিলেন।ভালোই তো মাংস হয়েছে মুরগির।আর আপনি এতো চমৎকার করে রান্না করলেন তা আর কি বলবো।চুঁই ঝাল দিয়ে মাংস রান্না করলে খেতে নাকি ভীষণ স্বাদের হয়।আমার কখনো চুঁই ঝাল খাওয়া হয়নি।আপনার রান্না করা মুরগির মাংসের রেসিপিটি খুবই লোভনীয় হয়েছে। আশাকরি খুব মজা করেই খেয়েছিলেন।খুব সুন্দর ভাবে রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা আপনাকে।ভালো থাকবেন সব সময়।অনেক অভিনন্দন রইলো আপনার জন্য।