বাবা তুমি কি আমাদের বেড়াতে নিয়ে যাবে? || Quality time spending with children.
ছবির অবস্থান :- উত্তরখান, ঢাকা, বাংলাদেশ।
গত শুক্রবার আমায় অফিসের কাজ করতে হয়েছে, আসলে ভেবেছিলাম শুক্রবার দিনটি অন্তত পরিবারের সাথে কাটাবো। আসলে চাকরি মানে নিজের স্বাধীনতা বলতে কিছুই থাকে না। যাইহোক শুক্রবার রাত আটটা অবদি কাজ করার পর অবশেষে অনুমতি পেলাম ঢাকার দিকে যাওয়ার। তাড়াতাড়ি বাসে উঠে পরলাম কিন্তু ঢাকা পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত বারোটা বেজে গেছে। এরমধ্যে বাসা থেকে ফোন আর ভিডিও কল এসেছে অন্তত দশ বার, কতটুকু এসেছি। বাচ্চারা একদমই অস্থির ছিল কখন আমি বাসায় ফিরবো। অবশেষে বাত বারোটার একটু আগে বাসায় ফিরলাম, অবাক ব্যাপার ইলমা আর ইয়ান কেউ ঘুমায়নি এমনকি রাতের খাবারও খায়নি।
আমাকে দেখা মাত্রই বাচ্চারা হৈচৈ শুরু করে দিলো, আর আমি আসার সময় ফল, চকলেট, চিপস, কেক এবং তাদের পছন্দের আরো বেশ কিছু খাবার নিয়ে ঢুকেছি। ছোট্ট সদস্য ইয়ান বারবার লাফ দিয়ে কোলে আসতে চাইছে কিন্তু আমি বাইরে থেকে এসেছি এবং অপরিষ্কার শরীর। আমি তার হাতে সমস্ত খাবারের থলে ধরিয়ে দিলাম, আমাকে অবাক করে দিয়ে সে সেটা টানতে টানতে ভেতরে নিয়ে গেলো। এরপর সবার খোঁজখবর নিয়ে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
এবার ইলমা হঠাৎ করে আমাকে একটা চিঠি ধরিয়ে দিলো, আমি অবাক হয়ে বললাম এটা কি? ইলমা বললো খুলেই দেখো না। আমি খুলে দেখলাম রঙিন কালিতে লেখা বাবা তুমি কি আমাদের বেড়াতে নিয়ে যাবে?
আমি আসলে বাচ্চাদের তেমন সময় দিতে পারি না, যাইহোক নিজের ভুল বুঝতে পারলাম কারন তাদের অনেকদিন থেকে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হয় না।
ছবির অবস্থান :- উত্তরখান, ঢাকা, বাংলাদেশ।
পরদিন সারাদিন বেশ ব্যাস্ত সময় পার করলাম কারন আমি যেহেতু বাসায় থাকছি না, তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এবং খাবারের ব্যবস্থা করে যেতে হবে ওদের জন্য। তাই হাটবাজার নিয়ে বেশ ব্যস্ত ছিলাম। সন্ধ্যার ঠিক আগে আগেই ইলমার সেই রঙিন কালির চিঠির কথা মনে পড়ে গেল। আমি ওদের সবাইকে তাড়াতাড়ি তৈরি হতে বললাম, কারন সন্ধ্যা হতে চলেছে। আসলে এই সময়টাতে বেশি দূরে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। অবশেষে ওদের নিয়ে তেরমুখে গড়ে ওঠা ছোট্ট এই পার্কটিতে যাওয়ার চিন্তা করলাম।
যখন পৌঁছলাম বেশ অন্ধকার নেমে এসেছে, তবুও মানুষের বেশ জটলা ছিল ওখানে। তবে দেখলাম পার্কে বেশ কিছু রাইড রয়েছে।
ছবির অবস্থান :- উত্তরখান, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ঈলমার সবথেকে পছন্দের রাইড হলো স্লিপার, তাইতো দুই ভাই বোনকে টিকিট কেটে প্রথমেই স্লিপারে উঠিয়ে দিলাম।
![]() | ![]() |
---|
ছবির অবস্থান :- উত্তরখান, ঢাকা, বাংলাদেশ।
এবার স্লিপারে ওঠার পর ইলমা সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকে আর ইয়ান ভয়ে উঠতেই পারছিলো না। এটা অবশ্য ইলমার জন্য পারফেক্ট।
![]() | ![]() |
---|
ছবির অবস্থান :- উত্তরখান, ঢাকা, বাংলাদেশ।
এবার শুরু হলো ইলমার সেই কাঙ্খিত মূহুর্ত। সে ইচ্ছে মতো প্রায় আধাঘণ্টার উপর স্লিপার নিয়ে খেলেছে। আমি সত্যিই তার খুশি দেখে ভীষণ আনন্দ পেলাম।
ছবির অবস্থান :- উত্তরখান, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ইলমা যখন স্লিপার নিয়ে ব্যস্ত তখন আমরা বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম।
ছবির অবস্থান :- উত্তরখান, ঢাকা, বাংলাদেশ।
এরপর পাশেই আরো বেশ কিছু রাইড ছিল, তবে নৌকার এটা আমার বেশ ভালো লেগেছে। তবে এটাতে উঠতে আমি নারাজ কারন একবার ঈলমাকে ফেন্টাসি কিংডমে উঠিয়েছিলাম আর সে এখন ভয় পেয়েছিল। এখানকার নৌকা বেশি দুলুনি দেয় বলে মনে হলো না কিন্তু মিউজিকের তালে তালে সবাই বেশ নেচে গেয়ে আনন্দ করছে দেখলাম। এরপর ইলমাদের নিয়ে ওদের পছন্দের কিছু খাবার খেয়ে বাসায় ফিরে এলাম ওদের মুখে একরাশ হাসি নিয়ে। যে হাসির জন্য আমার নিরন্তন ছুটে চলা।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR

ভাইয়া প্রতিটা সন্তান চায় তার বাবা তাদের সাথে খেলাধুলা করুক আর মাঝে মাঝে একটু বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যাক। তারা তো ছোট তাই বুঝতে পারেনা বাবা কতটা ব্যস্ত থাকে আর কাদের জন্য এত ব্যস্ত। তবে এত ব্যস্ততার মাঝেও সময় দিতে হয়। এত রাতে বাসায় এসে আপনার মেয়ের এমন চিঠি পড়ে নিশ্চয়ই মন খারাপ হয়েছিল। তবে পরের দিন তাদের ঘুরতে নিয়ে গিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। আপনার ছেলেমেয়েদের দেখে বুঝতে পারছি অনেক খুশি হয়েছে।
সত্যিই আপু মনটা বেশ খারাপ ছিল, তবে পরদিন ওদের একটু আনন্দ দিতে পেরে ভালো লেগেছে। বাচ্চারা আমার কাছে একটু সময় চায় কিন্তু আমার ব্যাস্ততা পিছু ছাড়ে না।
আহারে,ঈলমা চিঠিও লিখেছে।আসলে বাচ্চারা ঘরে কত সময় থাকতে চায়।ওরা চায় মা-বাবাকে নিয়ে বেড়াতে।তাইতো না পেরে চিঠি লিখে মনের ভাষা বুঝিয়ে দিলো।সন্ধ্যা হলেও পার্কে মানুষের জটলা ছিল।স্লিপারে কেন জানি আমার ও খুব ভালো লাগতো।পরিবার নিয়ে হাজার কাজ হলেও মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য হলেও বের হবেন।পরিবারের সবাইকে একসাথে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। শুভকামনা রইলো সবার জন্য।
সময় দিতে পারছিলাম না ওদের, ব্যাস্ততা আমাকে ছাড়ছিল না। অবশেষে বাসায় ফিরে ওদের একটু ঘুরতে নিয়ে গেলাম সত্যিই বাচ্চারা ভীষন খুশি ছিল।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1699270497715024001?t=Yx3hzvQhbYHri3-o5UPH7Q&s=19
আসলে চাকরি-বাকরি করলে নিজের স্বাধীনতা বলতে কিছু থাকে না। পরিবারের সাথে সময় দেওয়া তেমন একটা হয়ে ওঠে না এটা চাকরিজীবী মানুষদের মুখের কথা। ইলমার চিঠির কথাটি শুনে আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম কত সুন্দর চিঠি লিখেছে আপনার জন্য বাবা-মা তার সন্তানকে সব সময় খুশি রাখতে চায়। যাইহোক, ব্যস্ততার মাধ্যমে পার্কে ঘুরতে গিয়েছেন সুন্দর মুহূর্তগুলো জীবনের শান্তি বয়ে আনে।
সত্যিই ভাই বাচ্চারা তেমন বেশি কিছু চায় না, একটু সময় আর আদর চায়। যাইহোক চেষ্টা করেছি ওদের একটু আনন্দ দিতে।
আসলে আমাদের সবার উচিত কাজের মধ্যে থাকলেও কিছুটা সময় বের করে বাচ্চাদেরকে সময় দেওয়া। আর তাদেরকে যদি মাঝে মাঝে এভাবে ঘুরতে নেওয়া হয় তখন অনেক বেশি খুশি হয়। আপনি বাচ্চাদেরকে নিয়ে এই পার্কটিতে গিয়েছিলেন এটা জেনে সত্যি খুব ভালো লাগলো। আপনার বাচ্চারা যেন এরকম আনন্দ করতে পারে সব সময় এটাই দোয়া করি। বাচ্চাদেরকে মাঝে মাঝে ঘুরতে নিয়ে যাবেন তাহলে ভালো লাগবে।
আপু আসলে অনেক ব্যাস্ত থাকতে হয় আমাকে। তবুও একটু সময় পেলেই চেষ্টা করি ওদের নিয়ে বেরিয়ে পরার।
আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে ব্যস্ততা রয়েছে, তবে ব্যস্ততার মাঝেও পরিবারকে সময় দেওয়া উচিত। কারণ পরিবারেরও ইচ্ছে থাকে আমাদের সাথে সময় কাটানোর, বাহিরে ঘোরাঘুরি করার। আপনার ছেলে মেয়ে দুজনেই অনেক কিউট। আপনি সন্ধ্যার পরে তাদেরকে নিয়ে কাছের একটা জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলেন এটা জেনে ভালো লাগলো। তারা অনেক খুশি হয়েছিল যা বুঝতে পারছি।
ঠিক বলেছেন চাকরি বলতে তেমন স্বাধীনতা থাকে না। অনেক রাতে বাসায় এসে দেখে ইয়ান এবং ঈলমা জেগে আছে জেনে খুশি হলাম। আর ঈলমা তো বাইরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য চিঠি ধরিয়ে দিয়েছে। খুব ভালো করেছেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরতে গিয়ে। এভাবে মাঝে মধ্যে সময় দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনার পুরো পরিবারের জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
চাকরি মানেই পরাধীন এবং বেশ নিয়মের মধ্যে থাকতে হয়। তবুও যতটুকু সময় পাই তাতেই ওদের খুশি করার চেষ্টা করি।
ঠিকই বলেছেন চাকরি বাকরি করলে নিজের কোন স্বাধীনতাই থাকে না। এবং নিজের মন মত করে পরিবারের সাথে সময় কাটানো যায় না। আসলে বাচ্চাদের একটু শখ থাকে তারাও তার বাবার সাথে একটু বাইরে সময় কাটাবে। ভালোই করেছেন তাদেরকে পার্কে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে। এবং খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন।
সত্যিই আপু এখন আর ওদের তেমন সময় দিতে পারি না। যাইহোক একটু সময় নিয়ে ওদের ঘুরিয়ে আনলাম চমৎকার এই পার্ক থেকে।
সারাদিন মায়েরা যদি বাচ্চাদেরকে সময় দেয় তারপরেও বাবার জন্য চটফট করে। তা আমি খুব ভালভাবে বুঝি ভাইয়া। মেয়ে তো দেখছি আপনাকে একেবারে মনে দাগ লাগিয়ে দিল চিঠি টা হাতে দিয়ে। আমি তো অনুভূতি ধরে রাখতে পারলাম না চোখে পানি এলো। যাক অবশেষে আপনি পরিবারকে নিয়ে বাইরে গেলেন। তাদেরকে সময় দিলেন অনেক ভালো লাগলো। সবার জন্য শুভকামনা রইল ভালো থাকুন পরিবারের সবাইকে নিয়ে।
অনেক ধন্যবাদ আপু।
আসলেই আমি নিজেও ওর চিঠিতে আবেগ আপ্লুত হয়ে পরেছিলাম। যাইহোক শত প্রতিকূলতা ছাপিয়ে তাদের একটু ঘুরিয়ে আনতে পেরেছি এটাই বড় বিষয়।
এটা একদম ঠিক বলেছেন ভাই চাকরি করলে নিজের স্বাধীনতা অনেকটাই কমে যায়। অনেক সময় অনেক ইচ্ছা থাকলেও সেটা করা যায় না। তবে সন্তান যদি কোন একটি আবদার করে বসে সেটা কোন রকমে ফেলা যায় না। যাইহোক আপনার মেয়ে স্লিপার পছন্দ করে শুনে আপনি প্রথমে টিকিট কেটে তাকে স্লিপার খেলার জন্য নিয়ে গেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।