হোস্টেল লাইফ রেগিং (শেষ পর্ব)|| Hostel life ragging.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হোস্টেল লাইফ রেগিং
(শেষ পর্ব)

সংগ্রহশালা

আমি আমার হোস্টেল লাইফ রেগিং নিয়ে বেশ কয়েকটি পর্ব আলোচনা করেছিলাম। আজ তার শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। আমি আমার হোস্টেল জীবন থেকে অনেক কিছু শিখেছি এই শিক্ষাগুলো আমার পরবর্তী জীবনে ভীষণ কাজে লেগেছে। তবে রেগিং এর বিষয়গুলো এতোটাই ভয়ানক এবং বেদনাদায়ক ছিল যে বলে শেষ করতে পারবো না। যাইহোক চলুন আজ শেষ পর্ব শুরু করি।


গত পর্বে বলেছিলাম একটি ছেলে রেগিং সহ্য করতে না পেরে অবশেষে হোস্টেল ছেড়ে চলে গেছে। ছেলেটা যাওয়ার সময় তার মন ভীষণ খারাপ ছিল, মনে হচ্ছিল সে ভীষণ ভয় পেয়ে সে এই জায়গাটা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। কি আর করা আমরা একজন হোস্টেলমেট হারালাম। তবে আমরা বেশ সতর্ক হতে থাকলাম সবদিক থেকেই।

দুপুরের পরেই হোস্টেলের রুমগুলো বেশ শান্ত হয়ে যায়। যাইহোক আমরা পরিকল্পনা করলাম সবাই মিলে আলোচনা করে আমাদের উপর অত্যাচারের একটা বিহিত করবো। দুপুরের দিকে নিঃশব্দে সবাই একদমই শেষের রুমটায় জমায়েত হলাম, উদ্দেশ্য সবাই কথা বলে কোন সমাধান বের করা যায় কিনা। যাইহোক আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বললো প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে যাবে, কেউ বললো স্যারকে চিঠি দাও। আবার কেউ বললো যখন ওরা আমাদের মারতে আসবে তখন আমরাও প্রতিহত করবো এবং উচিত জবাব দেবো।

যাইহোক আমাদের মধ্যে একটা ছেলের একটু বয়স বেশি ছিল, সে বললো এগুলো করতে গেলে আমাদের অনেক বড় ক্ষতি হবে এবং পড়াশোনা নষ্ট হবার সুযোগ রয়েছে। সে যথেষ্ট যুক্তি দিয়ে বোঝালো। যাইহোক আমরা সবাই অন্য পরিকল্পনা করলাম, ওরা যেগুলো যেগুলো ভুল ধরতে পারে আমরা সেগুলোর লিষ্ট তৈরি করলাম এবং সবাই সেগুলো মেনে চলার শপথ নিলাম।

সত্যি বলতে ধীরে ধীরে আমাদের উপর ওদের অত্যাচার বেশ কমে যেতে শুরু করলো এমনকি কিছু বড় ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক বেশ ভালো হতে শুরু করলো। সত্যি বলতে আমরা নিয়ম ভদ্রতা এবং মনযোগী হতে শুরু করলাম। এভাবে একটা বছর আমরা কাটিয়ে দিলাম।

আমরা যখন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তখন প্রথম বর্ষের ছাত্রদের নিয়ম শেখানো তথা রেগিং করার দায়িত্ব ছিল আমাদের উপর। প্রথম দিকে আমাদের মধ্যে অতি উৎসাহী কিছু ছেলে প্রথম বর্ষের কিছু ছাত্রকে ভীষণ বিরক্ত এবং রেগিং করতো। তবে আমি ছিলাম এগুলোর ঘোর বিরোধী। আমি প্রথম বর্ষের সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতাম এতে আমার ইয়ারমেট সবাই আমাকে বেশ টিচ করতো তবে আমি পাত্তা দিতাম না। যাইহোক আমি সবসময়ই নিজের চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী ছিলাম এবং সবাইকে রেগিং এর ক্ষতিকর দিকগুলো বোঝানোর চেষ্টা করতাম। তবে আমাদের ইয়ার থেকে রেগিং বেশ শিথিল হয়ে যায় এবং সবাই মোটামুটি ভালোভাবে থাকতে থাকে হোস্টেলে।

পরবর্তী সময়ে হোস্টেলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল আমার এবং সবার কাছেই পরিচিত মুখ হয়ে উঠি। আমি আমার হোস্টেলে শেখা এমন অনেক কিছুই জীবনের বিভিন্ন জায়গায় প্রয়োগ করেছি এবং আশানুরূপ ফল পেয়েছি। যাইহোক এই ছিল আমার হোস্টেল লাইফ রেগিং।

সমাপ্ত



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

"Please support Bangla Witness"

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

https://steemitwallet.com/~witnesses



VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1ejFJCaMLR3zrx1iztXmdz4AFKcaXPfpHbadyDS7yzWTRRjc8kkRjGZNGVw27n8Q3Mi19jpMVHLYFyQ4NZ.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 

আসলে ভাইয়া হোস্টেলে জীবন অন্য রকম একটা জীবন। যদিও হোস্টেলে কখনো থাকি নি তবে সবার কাছ থেকে যতটুকু অনুভব করেছি। সত্যি হোস্টেলে বড়দের এমন রেগিং করা মোটেও উচিত হয়নি। যার কারনে বাধ্য হয়ে একজনকে হোস্টেলে ছাড়তে হয়েছিল। আপনি এদের বিরুদ্ধে ছিলেন বেশ ভালো করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

খুব ভালো করেছেন নিয়ম কানুন মেনে লাইফটাকে সহজ করে নিয়ে।তবে আপনার ইয়ার মেটরা কেমন করে নতুন ছাত্রদের উপর রেগিং করার চেষ্টা করে বুঝলাম না।কেউ কষ্টে থাকলে সেই জায়গাতে অন্য কে আনে?? অন্যদেরকে সেভ করার চেষ্টা করবে। যাক আপনি ভালো করেছেন।নিজে ভালো থেকে সকলের মন জয় করে নিয়েছেন।

 2 years ago 

শিক্ষা জীবনে রেগিং এক প্রকার অভিশাপের মতই। কখনোই এই কাজগুলো করা উচিত না। কলেজে আমি নিজেও দেখেছি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা প্রথম বর্ষের ছাত্রদের সাথে রেগিং করে। তবে এটা কখনোই কাম্য নয়, বিশেষ করে ছাত্র সমাজের কাছ থেকে। যাইহোক , এটা জেনে ভালো লাগলো আপনি রেগিং পছন্দ করেন না। হোস্টেলে থাকা অবস্থায় সময়ের সাথে সাথে আপনারা রেগিং থেকে বাঁচার উপায় গুলো খুঁজে বের করে নিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। আমরা প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন আসলে অনেক কষ্ট করেছি। যাইহোক পরবর্তী সময়ে আমি এগুলোর ঘোর বিরোধী ছিলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

কলেজ লাইফের প্রথম বর্ষে আমাদের সবাইকেই কম বেশি এমন কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে ভাই।