গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা। (অষ্টম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগlast year
গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা

ছবিটি আনস্প্লেস থেকে নিয়ে কেনভা দিয়ে তৈরি

প্রথম পর্বদ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব
ষষ্ঠ পর্ব
সপ্তম পর্ব

সাল: ৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
শিবলিং শহর, ঝলমলে সকাল


আজকের সকালটা হেথাংয়ের জন্য ভীষণ মিষ্টি কারন ছুরবালার মিষ্টতায় হেথাং যেন সুখের সাগরে ভাসছে। গরম এক কাপ সুপ্রন পানীয় দিয়ে শুরু হলো হেথাংয়ের সকাল। ছুরবালার হাতে এই অসাধারণ পানীয় পেয়ে হেথাং ভীষণ তৃপ্তি অনুভব করলো। মিষ্টি হাসি দিয়ে ছুরবালা বলে মনিব আপনার রাতটা কেমন কেটেছে? মিষ্টি হেসে হেথাং জবাব দেয়, আমি মনে হয় সুখের সাগরে ভেসেছি।
যাইহোক ছুরবালা ভেতরে ভেতরে রাতের ঘটে যাওয়া অদ্ভুত ঘটনা মনে আওড়াতে থাকে। সে চিন্তা করে রাজা জিংহনকে ঐ চমকদার রত্নের কথা জানাবে কিন্তু পরক্ষনেই চিন্তা করে যদি সে এটা জানায় তখন তাকে উল্টো শাস্তি পেতে হবে। কারন হলো কেন সে ঐ পাথর নিজের আয়ত্তে নেয়নি। যাইহোক ছুরবালা মনে মনে শপথ নেয় আজ ঐ চমকদার রত্নের ঘটনাটা দেখতে হবে। তার মনের কথা মনেই রইলো তবে হেথাং একপলক ছুরবালার দিকে তাকিয়ে কেমন যেন তার একটা ঘটকা লেগেছে।

হেথাংয়ের মনে হচ্ছে ছুরবালা খুব গভীর কিছু চিন্তা করছে‌। সরাসরি হেথাং প্রশ্ন করে তুমি কি কিছু চিন্তা করছো ছুরবালা? কোন জবাব নেই, আবার যখন একই প্রশ্ন করা হলো তখন সে অনেকটা ইতস্তত করে বলে না মুনিব কিছু না। হেথাং তখন চিন্তা করতে থাকে তার বিষয়টি আসলে কি হতে পারে? তাহলে কি হেথাংয়ের রত্ন পাথরের বিষয়ে সে উৎসুক? যদি তাই হয় তাহলে তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।হেথাংয়ের চেহারা রাগে লাল হতে থাকে। আসলে দুজনের ভেতরে ভেতরে কি চলছে তা কেউ শুনতে পেলো না, তবে বুদ্ধিমান হেথাং তার মতো করে পরিকল্পনা সাজাতে থাকে।

কার্লো হঠাৎ করেই অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছে, তবে তার মুখেও কেমন যেন দুশ্চিন্তার ভাঁজ। হুজুর সালাম গ্রহণ করুন। আপনার রাতটি আশাকরি ভালো কেটেছে? হেথাং জানায় সে ভালো আছে এবং বেশ ভালো উপভোগ করেছে। হেথাং কার্লোর দিকে তাকিয়ে হঠাৎ কিছু একটা অনুমান করে নেয়। নিশ্চয়ই তার সাথে এমন কিছু ঘটেছে তার জন্য সে প্রস্তুত ছিল না। সরাসরি কার্লোকে প্রশ্ন করে হেথাং কি হয়েছে তোমার? কার্লো বলে কিছু না হুজুর, শরীর একটু খারাপ লাগছে। ওর কথার মধ্যেই হেথাং উত্তর খুঁজে নেয়। নিশ্চয়ই জিংহন তাকে সেই রত্ন পাথরের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং ভয়ভীতি দেখিয়েছে। সে হেথাংকে বলে হুজুর আপনার সাথে কিছু কথা রয়েছে, হেথাং ইদানিং মনের কথা বুঝতে পারে। নিশ্চয়ই সে কোনভাবে হেথাংয়ের রত্ন পাথরের বিষয়ে জানতে চাইবে। সরাসরি কার্লোকে হেথাং সতর্ক করে বলে নিশ্চয়ই তুমি মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে চাও না? যদি তাই হয় তাহলে তুমি প্রাসাদের ভালো ভালো কিছু খাবার খেয়ে কিছু সময় উপভোগ করো এবং এখান থেকে বিদায় নাও।

কার্লোর চোখমুখ অন্ধকার হয়ে যায়, সত্যিই হেথাং কি মানুষ নাকি অন্যকিছু? কিভাবে সে তার মনের কথাগুলো পড়ে নিল। ভয়ে সে তাড়াতাড়ি প্রাসাদ ত্যাগ করেছে। আড়াল থেকে ছুরবালা সবকিছু নজরে রেখেছে, তার মুখেও চিন্তা ভাঁজ। কার সে নিজেও শুনেছে কেউ যদি এই রত্ন পাথরের রহস্য জানতে চায় তাহলে তাকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু সে যদি রাজা জিংহনের কথা মতো না চলে তাহলে তাকে মরতে হবে। ছুরবালা উভয় সংকটে পরে গেছে।

রাতের বেলা জমকালো একটা আয়োজন ছিল রাজা জিংহনের পক্ষ থেকে। বিশাল খাবার দাবারের আয়োজন আর নিভৃত নৃত্যের আয়োজন ছিল। এই নিভৃত নৃত্য অনেকটা নেশার মতো মোহনীয় পরিবেশ তৈরি করে। যাইহোক হেথাং তার ভাগ্য আর রত্ন পাথরকে ধন্যবাদ দিতে থাকে। সব আয়োজন শেষে যখন ছুরবালার সাথে রাত্রি যাপনের জন্য প্রবেশ করবে তার ঠিক কিছু সময় পূর্বে গোপনে বালিশের নিচে ধারালো রত্ন খচিত খন্জর রেখে দেয়। আবারো হেথাং অমিয় সুধা পান করে নিজের মতো অনেকটা অভিনয়ের ধাঁচে পরে রইলো। আজো রত্ন পাথরের আলোয় আলোকিত হয়েছে পুরো ঘর। ছুরবালা সাহস করে রত্ন পাথর খচিত হেথাংয়ের আংটি খুলে নিতে যাবে, হঠাৎ হেথাং লাফিয়ে উঠে তার রত্ন খচিত খন্জর গলায় ধরে।।।।।

"চলবে"



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা গল্পটি যত পরছি ততই বেশি ভালো লাগতেছে। মনে হচ্ছে যেনো গল্পটি শেষ হচ্ছে না। ধনকুবের হেথাং সত্যি বুদ্ধিমান সবার মনের কথা গুলো ধরে ফেলেছেন। পরের পর্বে ছুরবালার হয়তো ভালো শাস্তি হবে। কি হয় সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম। সত্যি অদ্ভুত একটি গল্প। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকবেন।

 last year 

দেখতে দেখতে ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশার অষ্টম পর্ব চলে এসেছে। আজকের পর্ব পড়ে আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। তবে ছুরবালার সাথে রাত্রি যাপনের জন্য প্রবেশ করবে তার ঠিক কিছু সময় পূর্বে গোপনে বালিশের নিচে ধারালো রত্ন রাখার বিষয়টি ছুরবালা দেখতে পায়। কিন্তু অবশেষে বুদ্ধিমান হেথাংয়ের কাছে ধরা পড়তে হলো। আশাকরি ছুরবালা অনেক বড় শাস্তি হবে। পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই ভালো থাকবেন।