গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা। (নবম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগlast year
গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা

ছবিটি আনস্প্লেস থেকে নিয়ে কেনভা দিয়ে তৈরি

প্রথম পর্বদ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব
ষষ্ঠ পর্ব
সপ্তম পর্ব
অষ্টম পর্ব

সাল: ৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
শিবলিং শহর, জোৎস্না রাত


হঠাৎ হেথাংয়ের আক্রমণে ছুরবালা ভীষণ ভয় পেয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকে। ভীষণ ভয় পেয়েছে মেয়েটা, আর ভয় পাবেই না কেন? ধারালো অস্ত্রটা ঠিক তার গলার চামড়া স্পর্শ করে রয়েছে, একটু এদিক সেদিক হলেই সে ইহলোক ত্যাগ করবে। ছুরবালা খুব চেষ্টা করছে মুখ দিয়ে কথা বের করার কিন্তু ভয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না। এদিকে হেথাংয়ের চোখ মুখ রাগান্বিত লালচে রঙের হয়ে উঠেছে। এতো বড় বিশ্বাসঘাতকতা আমার সাথে? আমি তোমাকে মনে জায়গা দিয়েছিলাম, আর তুমি কিনা শত্রুর সাথে হাত মিলিয়ে আমার ক্ষতি করতে চাইছো? কে বাঁচাবে এখন শুনি? রাগে গজগজ করছে হেথাং। ছুরবালা অনেক কষ্টে মুখ খোলে মনিব আমাকে মাফ করুন। আমি ভয় আর কিছুটা লোভে পরে আপনার রত্ন পাথরের রহস্য উদঘাটন করতে এসেছিলাম। মনিব রাজা জিংহন আমাকে মৃত্যু ভয় দেখিয়েছে, তাই বাধ্য হয়ে আপনার কাছাকাছি এসেছি। মনিব আমাকে ক্ষমা করুন, এই বলে সে কাকুতি মিনতি করতে শুরু করে।

হেথাং হেসে উঠে এবং বলে আমার রত্ন পাথরের যে রহস্য উদঘাটন করতে এসেছে তাকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হয়েছে। তোমাকেও একই দন্ডে দন্ডিত করা হবে এবং সকালের কিরন তুমি আর দেখবে না। ছুরবালা বারবার মাফ চাইতে থাকে। হঠাৎ করেই ছুরবালার মুখের দিকে তাকিয়ে কামুক হেথাংয়ের লালসার আগুন জ্বলে ওঠে। একে মারলে তার খারাপ প্রবৃদ্ধি তৃপ্তির সাথে মেটানো মুশকিল। তখন সে বলে ওঠে ঠিক আছে তোমাকে একটা সুযোগ দেয়া হবে। সেটা এমন, আজকের পর থেকে তোমার মুখ আমি ছাড়া আর কেউ দেখবে না। আমি তোমাকে ডাক দেয়া মাত্রই হাজির হতে হবে। ছুরবালা জীবন বাঁচাতে তার সেই শর্ত মেনে নেয় এবং জানায় প্রাসাদে একটি গুপ্ত কুটরি রয়েছে। যার খোঁজ ছুরবালা ছাড়া আর কেউ জানে না, আজ থেকে আমি নিজেকে নিজেই বন্দি করে নিলাম।

হেথাং তার কথায় সম্মত হলেও বেশ সতর্কতার সাথে তার কথাটা মেনে নেয়। সে সেই গুপ্ত কুটরি দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে। ছুরবালা তাকে সেখানে নিয়ে যায়। প্রকান্ড একটি আলমারি, বাইরে থেকে এটা আলমারি ছাড়া আর কিছুই বোঝার উপায় নেই। ছুরবালা আলমারির ছিটকিনি খুলে জোর হাতে দুটো তালি দিলো। অবাক করা ব্যাপার একটি দরজা খুলে গেছে। হেথাং অনেকটাই অবাক হয়ে যায়। দুজনেই ভেতরে প্রবেশের পর জায়গাটা মনেই হচ্ছে না, একটি গুপ্ত কুটরি। প্রকান্ড একটি শোবার ঘর এবং বিশেষ কায়দায় আলো বাতাস সব ভেতরে আসার ব্যাবস্থা রয়েছে। জায়গাটা হেথাংয়ের ভীষণ পছন্দ হয়েছে, কারন ঠিক এমন একটি জায়গা সে এতো দিন খুঁজে আসছিলো। যাইহোক এখন এখানেই সে গড়ে তুলতে পারবে রত্নের ভান্ডার। তবে কিভাবে এই রহস্য লুকিয়ে রাখবে ছুরবালা থেকে? হেথাং কিছুটা চিন্তায় পরে যায়। না ছুরবালাকে দুনিয়ার সবার কাছ থেকে আড়াল করে তাকে গায়েব করে ফেলতে হবে, সেই সাথে রত্নের ভান্ডার গড়ে তুলতে হবে।

সে সিদ্ধান্ত নেয় ছুরবালাকে সব খুলে বলবে তবে তাকে ভালোবাসার জালে ফাঁসিয়ে আটকে রাখতে হবে। সে তাই করলো, তাকে বিভিন্ন ভয় ভীতি দেখিয়ে এবং ভালোবাসার লোভ দেখিয়ে গুপ্ত কুটিরে বন্দি করে ফেললো। তাছাড়াও বাইরে তিন ধাপে দশজনের পাহারার ব্যবস্থা করলো।
এবার হেথাং ফন্দি এঁটেছে জিংহনকে ফাঁদে ফেলার। হেথাং ছুরবালার কাপড় নিজে পুড়িয়ে সেই পোড়া কাপড় নিয়ে চলে যায় জিংহনের দরবারে। ঘটনাটা এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যেন জিংহন বুঝতে পারে হেথাংয়ের গুপ্ত ধনের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে ছুরবালা ছাই হয়ে গেছে।।।।।।।

"চলবে"



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

জিংহনকে ভয় দেখানোর জন্য হেথাং ফন্দি করেছেন বাহ্ দারুন। হেথাং এর কথা শুনে তো সত্যি জিংহন ভয় পেয়েছেন। ভয় পাবেন না কেনো যেভাবে হেথাং গল্প সাজিয়েছেন। হেথাংয়ের গুপ্ত ধনের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে ছুরবালা ছাই হয়ে গেছে। সত্যি বলতে হেথাং অনেক বুদ্ধিমান বটে। ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা গল্পটি যত পরছি ততই বেশি ভালো লাগছে। মনে হয় গল্পটির আরো কিছু পর্ব হবে। নতুন পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ভিন্ন রকম একটি গল্প তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

হ্যা জিংহন শুধু ভয় নয় ভীষণ বিপদে পরে যাবে। যাইহোক সামনের পর্বে আরো দারুন কিছু আসছে। ধন্যবাদ তোমাকে চমৎকার মন্তব্যের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার জন্য।

 last year 

ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশার নবম পর্ব আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। আগের পর্বগুলো আমি মনোযোগ দিয়ে পড়েছিলাম। এই পর্বে হেথাং খুব বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। ছুরবালা হেথাং এর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাই হেথাং ছুরবালাকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে। ছুরবালার দেখিয়ে দেওয়া গুপ্ত কুটরিতে হেথাং একসময় রত্নের পাহাড় গড়ে তুলবে মনে হচ্ছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই, আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।

 last year 

হ্যা গুপ্ত কুটরি হবে হেথাংয়ের রত্ন ভান্ডার। যাইহোক আশাকরি পরবর্তী পর্ব পড়বে। ধন্যবাদ তোমাকে মন্তব্য করার জন্য।