গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা। (সপ্তম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগlast year
গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা

ছবিটি আনস্প্লেস থেকে নিয়ে কেনভা দিয়ে তৈরি

প্রথম পর্বদ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব
ষষ্ঠ পর্ব

সাল: ৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
শিবলিং শহর, তেজদীপ্ত দুপুর


হেথাংয়ের ভয়ানক কথা শুনে রাজা জিংহন এবং পুরো রাজ দরবারের সবাই একেবারে তাজ্জব বনে যায়। কি বলে ছেলেটা, সে এমন কিছু রহস্য জানে যার উদঘাটন করতে গেলে মানুষ মৃত্যু পথযাত্রী হয়ে যায়। পুরো রাজদরবারে কিছু সময় শুনসান নীরবতা ছেয়ে যায়। যাইহোক রাজা জিংহন নীরবতা ভেঙ্গে বললেন, যুবক আমি তোমার পরিচয় জানি না কিন্তু তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। আমার মনে হয় তোমার ভেতর এমন কিছু রয়েছে যা আমার পুরো রাজ্যে আর কারো কাছে নেই। তোমাকে এই রত্ন পাথরের জন্য এক লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা দিলাম এবং উপহার স্বরুপ আমার একটি প্রাসাদ দিলাম। আশাকরি তুমি আমার উপহার গ্রহণ করবে।

হেথাং মনে মনে বলে আমার কাছে যা আছে তা দিয়ে হয়তো একদিন তোমার পুরো রাজত্ব কিনে নেবো আর তুমি আমাকে প্রাসাদ উপহার দিচ্ছো। হা হা হা 😄 তবে এখন এই রাজার বিপক্ষে যাওয়ার উপায় নেই, কারন বিশাল সৈন্য সামন্ত রয়েছে, খেপানো যাবে না।
যাইহোক হেথাং কথাগুলো মনের মাঝেই রেখে দিয়েছে। শুধু মুখ ফুটে এতো টুকুই বললো, ঠিক আছে আমি আপনার উপহার গ্রহণ করলাম। রাজা জিংহন খুশি হয়ে বললেন তাহলে যুবক আজকেই আমার দক্ষিণের প্রাসাদে উঠে যাও আর তোমার যত্নআত্তির জন্য কিছু দাসী আমি নিয়োগ দিচ্ছি। হেথাংয়ের এই ব্যাপারটাতে মানা নেই কারন সে এই ধরনের খাতির যত্ন বেশি পছন্দ করে।

এদিকে কার্লো বেচারার মন খারাপ, তাহলে কি তার শিকার হারিয়ে যাবে? আর বুঝি উপার্জন হবে না। হেথাং যেন তার মনে কথা পড়তে পারছে। হেথাং কার্লোর দিকে হেসে বলে আমি যেখানেই থাকি তুমি আমার সাথে থাকবে। তোমাকে আমার সমস্ত কাজ আর দাসীদের দায়িত্ব দিলাম। কার্লোর কলিজায় যেন পানি এসেছে। কার্লো বলে ওঠে জি হুজুর আপনার খেদমতে বান্দা হাজির।

হেথাং আর কার্লো মনের সুখে প্রাসাদে উঠে গেছে, তবে হেথাংয়ের মনে কিছুটা খটকা রয়েছে। কারন রাজা জিংহনকে তার ভীষণ চালাক মনে হয়েছে। সে হয়তো তার নীলকন্ঠ রত্ন পাথরের রহস্য উদঘাটন করার জন্য তাকে প্রাসাদে রেখেছে। যাইহোক হেথাং মনে মনে সর্বোচ্চ প্রতিজ্ঞা করে সে সতর্ক থাকবে, কারন সে জানে একটু এদিক সেদিক হলেই তার রত্ন পাথর এবং রাজত্ব দখলের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে। প্রাসাদে প্রবেশ করা মাত্র সুন্দরী দাসীরা তাকে বরন করার জন্য এগিয়ে আসে। এক একটি প্রাসাদে একজন করে প্রধান দাসী সহ মোট দশজন থাকে যারা মনিবের সকল চাহিদা মিটিয়ে থাকে। এই প্রাসাদের প্রধান দাসী ছুরবালা ভীষণ সুন্দরী এবং তার সুনাম পুরো রাজ্যে রয়েছে। মূলত জিংহন তাকে পরিকল্পিতভাবে এই প্রাসাদে নিযুক্ত করেছেন যাতে হেথাংয়ের গোপন রহস্য বের করতে পারে।

ছুরবালা এমনভাবে সেজেছে প্রথমেই যেন হেথাংয়ের চোখ তার দিকে আটকে যায়। ঠিক তাই হলো হেথাং তার দিকে তাকিয়ে যেন মুগ্ধ হয়ে গেছে, যাইহোক রত্ন খচিত পাথর দিয়ে তৈরি পোশাক আর চমৎকার পাদুকা পরিয়ে দিয়েছে ছুরবালা। মিষ্টি স্বরে বলে ওঠে আপনি আজ থেকে আমাদের মনিব হলেন, আপনার সেবাই আমাদের ধর্ম। হেথাং মনে মনে এতোটাই আনন্দিত হয় যে, বারবার তার নীলকন্ঠ পাথরকে ধন্যবাদ দিতে থাকে। সে ভাবতে থাকে আজ যদি এই পাথর নিয়ে সে পালিয়ে না আসতো তাহলে এই সুখের জীবন সে কোথায় পেতো। যাইহোক প্রাসাদে প্রবেশ করে রাজকীয় খাবার খেয়ে ছুরবালার সাথে প্রথম রাত্রি যাপন করলো, এটা ছিল তার সবচেয়ে সুখের রাতগুলোর একটি। তবে প্রথমদিন ছুরবালা ভুল করেও তাকে তার রত্ন পাথরের কথা জিজ্ঞেস করলো না। তবে একটা ব্যাপার খেয়াল করলো ছুরবালা হেথাংয়ের হাতে অত্যন্ত আশ্চর্যজনক একটি আংটি যা পুরো রাত ঘরটি আলোকিত করে রেখেছে।

"চলবে"



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশার গল্পের একে একে আমরা সপ্তম পূর্বে চলে এসেছি। এর আগেও বেশ কয়েকটি পর্ব আমি পড়েছি। তবে আমার মনে হচ্ছে রাজা এবার হেথাং কে ভালো খেলতে চাই নিউকন্ঠ পাথরের গোপন রহস্য উদ্ধার করতে চাই। যার কারণেই তাকে হয়তো সুন্দর প্রাসাদ এবং সুন্দর রমণী সূর্বালাকে তার যত্ন করার জন্য নিয়োজিত করেছে। যাই হোক এই পর্বতে ভালই মজা পেলাম দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি অপেক্ষা করছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

 last year 

ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা সপ্তম পর্বে আপনি চমৎকার কিছু ঘটনা তুলে ধরেছেন। পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। হেথাং এই রত্ন পাথরের জন্য এক লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা এবং উপহার স্বরুপ একটি প্রাসাদ পেয়ে অনেক খুশি। শুধু তাই নয় হেথাং প্রাসাদের প্রধান দাসী ছুরবালা খেদমতে রয়েছেন। দারুণ একটি গল্প উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

পরের পর্ব আরো জমজমাট হবে।
আশাকরি সাথে থেকে গল্পটা উপভোগ করবে।

 last year 

আপনার এই গল্পটি সম্পুর্ন ভিন্ন রকম। গল্পটি যত পরছি ততই বেশি ভালো লাগে। যেনো গল্পটি শেষ হচ্ছে না। হেথাং বেশ বুদ্ধিমান আর এদিকে রাজা জিংহন কম বুদ্ধিমান না। সে ছুরবালাকে হেথাং এর পিছনে লাগিয়ে দিয়েছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়। তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে শেষের দিকে গল্পটি আরো চমৎকার হতে চলেছে। আপনার এধরনের ভিন্ন রকম লেখা গল্প গুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।

 last year 

ধন্যবাদ লিমন গল্পটা পড়ার জন্য।
সামনে আরো বেশ কিছু ধামাকা রয়েছে। আশাকরি সাথেই থাকবে।