গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ || 10% Beneficiary To @shy-fox
আমার প্রিয় স্টিমিট বন্ধুরা,
আমি @alamgir833 বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আজ রবিবার, সেপ্টেম্বর ০৫/ ২০২১
আসালামু আলাইকুম। আদাব-নমস্কার। বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যবৃন্দ, আশা করি আপনারা এই করোনা মহামারীর ক্লান্তিলগ্নে ভালো এবং সুস্থ আছেন।
নৌকা বাইচ হলো নদীতে নৌকা চালানোর প্রতিযোগিতা।একদল মাঝি নিয়ে কয়েকটি দল গঠন করা হয়।কতগুলো দলের মধ্যে নৌকা দৌড় বা নৌকা চালানোর প্রতিযোগিতায় হলো নৌকা বাইচ। যেটা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন নদীতে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়।নদীমাতৃক বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ইত্যাদি উৎসব খেলাধুলায় সবকিছুতেই নদী ও নৌকার আনাগোনা। হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক হিসেবে বাংলাদেশের নৌকাবাইচ পরিচিত।একসময় বাংলাদেশ যোগাযোগের মাধ্যম ছিল নদীকেন্দ্রিক আর বাহন ছিল নৌকা। নৌ শিল্পকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন শিল্প গড়ে ওঠে এসব শিল্পে যুগ যুগ ধরে তৈরি হয় দক্ষ ও অভিজ্ঞ কারিগর। এভাবে একসময় বিভিন্ন নৌযানের মাধ্যমে এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার শুরু হয়।নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌকাবাইচ বাংলা লোকসংস্কৃতির একটি অংশ। এদেশে গণ বিনোদন হিসেবে নৌকা বাইচের প্রচলন হয়েছিল তার সঠিক ইতিহাস পাওয়া যায় না।মধ্যযুগের মুসলমান নবাব সুবেদার ভূস্বামীরা যাদের নৌবাহিনী ছিল তারা এই প্রতিযোগিতামূলক বিনোদনের সূত্রপাত করেছিল। এ বিষয়ে দুটি জনশ্রুতি আছে একটি হলো জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা কে কেন্দ্র করে দ্বিতীয়টি হলো পীরগাজীকে কেন্দ্র করে।
মুসলিম যুগের নবাব বাদশাদের আমলে নৌকা বাইচ বেশ প্রচলন ছিল। নবাব বাদশাদের নৌ বাহিনী থেকে নৌকা বাইচের গোড়াপত্তন হয়। পূর্ববঙ্গের ভাটি অঞ্চলের রাজ্য রক্ষার অন্যতম কৌশল ছিল নৌশক্তি। বাংলার বারো ভূঁইয়াদের নৌবলের মাধ্যমে মোগলদের সাথে যুদ্ধ করেছিল। মগ, হামদর্দ জলদস্যুদের দমনে নৌশক্তি ভূমিকা রেখেছিল। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের নৌকা দেখা যায় বাইচের নৌকা গঠন কিছুটা অন্যরকম। নৌকা সূরু ও লম্বাটে ধরনের হয়।নৌকা বাইচের ব্যবহৃত নৌকায় কখনো কখনো রাজহাঁস বা অন্য কোন পাখির মুখাবয়ব ইত্যাদি দৃষ্টিনন্দন এর জন্য নকশা হিসেবে তৈরি করা হয়।যা দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে।বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার নৌবাচের নৌকা গুলোর মধ্যে বৈচিত্রতা দেখা যায় কারুকার্য গঠনের দিক থেকে। ঢাকা, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ অঞ্চলের নৌকা বাইচের জন্য ব্যবহৃত হয় কুশানৌকা, এই নৌকা তৈরিতে শাল, শীলকড়ায়, চাম্বুল ইত্যাদি গাছের কাঠ ব্যবহৃত হয়। টাঙ্গাইল ও পাবনায় নৌকা বাইচের জন্য সরু ও লম্বা দ্রুতগতিসম্পন্ন নৌকা ব্যবহার করা হয়। এই নৌকা তৈরি শাল,গর্জন, শীল কড়ই ইত্যাদি গাছের কাঠ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।চট্টগ্রাম, নোয়াখালী জেলার নিম্নাঞ্চল ও সন্দ্বীপে বাইচের নৌকা হিসাবে সাম্পান নৌকা ব্যবহৃত হয়। ঢাকা ফরিদপুরে নৌকা বাইচের জন্য ব্যবহৃত হয় গয়না নৌকা।বাংলাদেশের নৌকা বাইচের বিভিন্ন ধরনের নৌকা রয়েছে যেমন উড়ন্ত, অগ্রদূত, বলাকা, পঙ্খিরাজ, ময়ূরপঙ্খী, সাইমন ইত্যাদি নৌযান নৌকা বাইচে ব্যবহার করা হয়।
নৌকা বাইচের জন্য বিভিন্ন ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। সবাই পাক পবিত্র হয়ে গেঞ্জি গায়ে মাথায় একই রঙের রুমাল বেধে সবার মাঝখানে থাকে নৌকা নির্দেশক দাঁড়িয়ে থাকে। নৌকা চালান পিছনের মাঝিরা প্রতিটি নৌকায় ৭,২৫,৫০ বা ১০০ জন মাঝি থাকতে পারে।নৌকা বাইচের সময় মাঝি-মাল্লারা সমবেত কণ্ঠে যে গান গায় তাকে সারিগান বলা হয়। নৌকার মধ্যে ঢোল, তবলা, গায়েন থাকেন। তাদের গান মাঝিদের উৎসাহ আর শক্তির জোগায়। নৌকা বাইচে সকল মাঝি-মাল্লারা তালে তালে একই সুরে গেয়ে চলেন। মাঝি-মাল্লারা একই কন্ঠে বিভিন্ন ধরনের জনপ্রিয় সারি গান গেয়ে থাকেন।
আজকে এখানেই শেষ করলাম পরবর্তীতে নতুন কোনো ভিন্নধর্মী টপিক নিয়ে আবার আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ইনশাআল্লাহ।
এই পোস্টটির ১০% রিওয়ার্ড @shy-fox কে উৎসর্গ করা হয়েছে।আশা করি, আমার এই পোস্টে কোন প্রকার ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে আপনারা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আমাকে উৎসাহ প্রদান করবেন।
শুভেচ্ছান্তে,
@alamgir833
শুভেচ্ছান্তে,
@alamgir833
সত্যিই নৌকা বাইচ গ্রাম বাংলার বিশেষ একটি ঐতিহ্যকে ধারণ করে। তবে এটি আর আমাদের দেশে খুব একটা লক্ষ করা যায় না।
ধন্যবাদ সুন্দর অনুভূতি গুলোকে শেয়ার করার জন্য
ধন্যবাদ
নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতা।এটা বর্তমান বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে প্রায়।আমাদের এলাকায় কিছুদিন আগে নৌকা বাইচ হয়েছে আমি খুব ভালো উপভোগ করেছিলাম।
আপনার পোস্টটি খুব সুন্দর হয়েছে। খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো।
ধন্যবাদ ভাইয়া
আমার মনে হয় নৌকা বাইচ খুবই মজার ছিল।আগের দিনে অনেক কিছুই দেখা যেত।এগুলো এখন তো তেমন দেখাই যায় না।ধন্যবাদ আপনাকে।
খুব মজার ছিল নৌকা বাইচ, ধন্যবাদ আপনাকে।