স্টেশন বন্ধু এবং আড্ডা

IMG_20210612_125601.jpg
এখানে যে ছবিটা দেখছেন এই ছবিটি কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনের। দৈনিক হাজার মানুষ এখানে আসে আবার যায় নিজের ঠিকানায়। এটি নিঃসন্দেহে কুমিল্লার সবচেয়ে ব্যস্তময় স্থান। সবাই এখানে আসে নিজেদের গন্তব্যতে পৌছানোর জন্য আমরা এই জায়গাটাকেই নিজেদের গন্তব্য বানিয়ে ফেলেছি।বিগত কয়েকছরে এই জাগয়াটা আমাদের অনেক আপন করে নিয়েছে এই এই জায়গাটা আমাদের আড্ডার প্রানকেন্দ্র হয়ে পড়েছে। প্রত্যেকদিন রিপন মামার হাতের এক কাপ চা আর সিগারেট ছাড়া আমাদের সন্ধ্যাটা জমে না৷
IMG_20210615_221855.jpg
রিপন মামার চায়ের দোকান এটি।

ট্রেনের আওয়াজ খোলা বাতাস আর চা সিগারেটের কম্বিনেশনটা আজ পর্যন্ত কোন কিছুই হারাতে পারেনি। প্রত্যেকদিন বিকালে শত ব্যস্ততার পরেও স্টেশনে আড্ডা দেওয়া মাস্ট আমাদের জন্য। স্টেশনের ঝালমূড়ি বন্ধুদের সাথে গান গাওয়া এই সবের মধ্য দিয়েই কাটে আমাদের বিকালবেলা। স্টেশনের দুইটা কুকুরের সাথেও আমাদের বন্ধুত্ব হয়েছে আমাদের। ওরাও আমাদের আড্ডায় আমাদের আনন্দে মেতে উঠে।
স্টেশনের প্রতিটা পিলার প্রতিটা আসন, ঝালমুড়ি ওয়ালা মামা সবাই আমাদের কাছে অনেক আপন। তাছাড়া রকি এবং মান্না নামে দুইটা পথশিশুদের সাথেও আমাদের দারুন সম্পর্ক৷ তাদের বাসস্থান এই রেলওয়েএ প্লাটফর্মেই৷ তারা প্রায় সমই আমাদের সাথে এসে বসে আমাদের সাথে গান করে গিটার বাজানোর চেষ্টা করে আমাদের সাথে। এই দুজনও আমাদের অনেক আপন। ওরা অনেক সময় আমাদের চা ও খাওয়ায়। অদ্ভুত এক মায়া গড়ে উঠেছে তাদের প্রতি ওরাও এখন আমার নতুন আপনজন। তাদের সাথে এই সম্পর্ক এবং এই স্টেশনের সাথে আমার সম্পর্ক থাকুক আজজীবন এই প্রার্থনাই করি।

IMG_20210615_223416.jpg

IMG_20210615_223405.jpg

ডিভাইস - আইফোন ১১

এখানে যে ছবিগুলো দেখছেন এইগুলা দেবিদ্বার এবিএম গোলাম মোস্তফা স্টেডিয়ামে তোলা ছবি। এই জায়গাটা পিওর নষ্টালজিয়া। এই জায়গাটাতেই জীবনের অনেকটা সময় বন্ধুরা আড্ডা দিয়ে ফুটবল খেলে কাটিয়েছি। এখনো মনে আছে কলেজ শেষ করে কলেজের ড্রেস নিয়েই মাঠে নেমে পরতাম ফুটবল খেলার জন্য কাদা, বৃষ্টি, ঝড় উপেক্ষা করেই। এইখানে খেলার জন্য বাড়ি থেকে অনেক বকা শুনতে হতো৷ আর অনেকসময় ফিজিক্স ক্লাস বাংক করে এসে ফুটবল খেলতাম এই মাঠে। এই জাগয়াটাতে অনেক সৃতি জড়িয়ে আছে হয়তোবা জীবনের সবচেয়ে সুন্দরতম দিনগুলো এখানেই কাটিয়েছি। কে জানে আগামীর দিন গুলা কেমন হবে। কিন্তু আমি এটা শিওর যে যত ভালো দিন ই আসুক না কেন এই সময় গুলার মতো মধুর,রঙীন আসবে না৷ এই স্টেডিয়াম আমাদের অনেক আনন্দের সাক্ষী। এই স্টেডিয়ামের আড্ডা গুলা আসলেই মনে করার মতো। অইদিন এই স্টেডিয়ামে গেলাম স্টেডিয়ামটা অই আগের মতোই আছে কিন্তু আড্ডা দেওয়ার ওই মানুষ গুলা নাই৷ সবাই আলাদা আলদা নিজের ক্যারিয়ার গড়তে ব্যস্ত। আমি চাই আমার জীবনে আবার সে সুদিন গুলো আসুক আবার আমরা একসাথে হাসি,একসাথে আড্ডা দেই এক সাথে বাচি। আমি জানি একদিন সেই সুদিন আসবে যেদিন আমারা আবার একসাথে এক হবো গান ধরবো আবার। আমাদের আনন্দে হেসে উঠবে আকাশ।সে সুদিনের অপেক্ষায় রইলাম।

ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য।