স্পোর্টস পোস্ট || অবিশ্বাস্য অস্ট্রেলিয়া দল
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আবারো স্পোর্টস বিষয়ক একটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। ক্রিকেট খেলা ছোটবেলা থেকেই আমার ভীষণ পছন্দ। তাই চেষ্টা করি সবসময় ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে। আপনারা জানেন যে,গত রবিবার অর্থাৎ ১৯ শে নভেম্বর ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের মধ্য দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ এর ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভারতের আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। টস জিতে অস্ট্রেলিয়া দল বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। যথারীতি ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং শুভমান গিল ব্যাট করতে নামে। রোহিত শর্মা দুর্দান্ত শুরু করলেও, শুভমান গিল দলীয় ৫ম ওভারে ৩০/১ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরত চলে যায়। এরপর রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি ছোটখাটো একটি পার্টনারশিপ গড়ে তোলে। রোহিত শর্মা দ্রুতগতিতে ব্যাট করতে থাকে।
স্ক্রিনশট - স্কাই স্পোর্টস
রোহিত বেশ কয়েকটি বাউন্ডারি এবং ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। তবে দলীয় দশম ওভারে ৭৬/২ রানের মাথায় রোহিত শর্মা ক্যাচ আউট হয়ে যায়। রোহিত শর্মা মাত্র ৩১ বল মোকাবেলা করে ৪৭ রান করে আউট হয়ে যায়। এরপর শ্রেয়াস আইয়ার নামার পরপরই আউট হয়ে যায়। এরপর কোহলি এবং কে এল রাহুল ভারতের স্কোর বড় করার চেষ্টা করে। বিরাট কোহলি মোটামুটি রান পেলেও, রাহুলের বেশ কষ্ট হচ্ছিল রান পেতে। রাহুল অনেক গুলো ডট বল খেলে। মূলত তাদের পার্টনারশিপ গড়ে উঠে সিংগেল এবং ডাবল রানের উপর ভিত্তি করে। কারণ তারা বাউন্ডারি বের করতে পারছিল না। অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা তাদেরকে একেবারে চেপে ধরে। যাইহোক দলীয় ২৯ তম ওভারে ১৪৮/৪ রানের মাথায়, বিরাট কোহলি ব্যক্তিগত ৫৪ রান করে পেট কামিন্সের বলে বোল্ড আউট হয়ে যায়। এরপর ভারতীয় আর কোনো ব্যাটসম্যান সেভাবে রান তুলতে পারেনি। সূর্যকুমার অনেক চেষ্টা করার পর ২৮ বল মোকাবেলা করে মাত্র ১৮ রান করতে সক্ষম হয়।
স্ক্রিনশট - স্কাই স্পোর্টস
কে এল রাহুল ১০৭ বল মোকাবেলা করে ৬৬ রান করে আউট হয়ে যায়। এটাই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস সেই ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। যাইহোক শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৪০/১০ রান করে ভারত অলআউট হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করে। বিশেষ করে পেসাররা খুবই ভালো বোলিং করেছে। জবাবে ২৪১ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়া দল, প্রথমেই ডেভিড ওয়ার্নার এর উইকেট হারিয়ে ফেলে। এরপর মিচেল মার্শ এবং স্টিভেন স্মিথ তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। এর ফলে দলীয় সপ্তম ওভারে মাত্র ৪৭/৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া দল। তখন বেশ সম্ভাবনা জেগে উঠেছিল যে, হয়তোবা ম্যাচের রেজাল্ট অন্য রকম হতে পারে। ভারতীয় দলের প্লেয়ার এবং দর্শকদের মাঝে বেশ উল্লাস দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ট্রাভিস হ্যাড এবং মারনাস লাভুশেন দুর্দান্ত একটি পার্টনারশিপ গড়ে তোলে। ট্রাভিস হ্যাড মারমুখী ভঙ্গিতে ব্যাট করলেও লাভুশেন ধীর গতিতে ব্যাট করে। তাদের দুজনের ব্যাটিং কম্বিনেশনটা দারুণ লেগেছিল।
স্ক্রিনশট - স্কাই স্পোর্টস
ট্রাভিস হ্যাড এর দুর্দান্ত সেঞ্চুরির উপর ভর করে অস্ট্রেলিয়া দল জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। ট্রাভিস হ্যাড ১২০ বল মোকাবেলা করে ১৩৭ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলে। তার ইনিংসের মধ্যে ১৫ টি চার এবং ৪ টি ছয়ের মার ছিলো। অস্ট্রেলিয়া ৭ ওভার বাকি থাকতেই ৬ উইকেটের বিশাল জয় পায়। সেরা পারফরম্যান্স এর জন্য ট্রাভিস হ্যাড ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয় এবং পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করায় বিরাট কোহলিকে ম্যান অফ দ্যা সিরিজ নির্বাচিত করা হয়। অস্ট্রেলিয়া দল ষষ্ঠ বারের মতো ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতে নিলো। অস্ট্রেলিয়া দল প্রথম দুই ম্যাচে ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শোচনীয় হারের পর এভাবে ঘুরে দাঁড়াবে, এটা আসলেই অবিশ্বাস্য ছিলো। টানা ১০ ম্যাচ জেতার পর ভারতীয় দল ফাইনালে হেরে যাবে, এটা অকল্পনীয় ছিলো। ভারত এই ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করতে পারেনি। মূলত এটাই ছিল প্রধান কারণ এই ম্যাচ হারার। তবে এই ম্যাচে টস বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। যাইহোক ক্রিকেট হচ্ছে অনিশ্চয়তার খেলা। কখন কি হয়ে যায় সেটা বলা মুশকিল। সবমিলিয়ে পুরো বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টটি বেশ উপভোগ করেছি।
স্ক্রিনশট - স্কাই স্পোর্টস
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | স্পোর্টস |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২৩.১১.২০২৩ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
Twitter Link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
৬ষ্ঠ বারের মতো কাপ জিতলো অস্ট্রেলিয়া। তাদের খেলা ধরন অনেক দারুন ছিল ট্রাভিস হেড অসাধারণ একটি ইনিংস উপহার দিয়েছিল।ইন্ডিয়ার জন্য দূর্ভাগ্য ধন্যবাদ আপনাকে দারুন উপস্থাপন করেছেন।
হ্যাঁ ট্রাভিস হ্যাড দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়া দলকে বিশ্বকাপ উপহার দিয়েছে। যাইহোক সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
অস্ট্রেলিয়া এবারের বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠার পরে আমি অনুমান করেছিলাম বিশ্বকাপটা হয়তো অস্ট্রেলিয়ার হাতে চলে যাচ্ছে। কারণ অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল খেলে কাপ নেয়ার জন্য পারফেক্ট একটি দল। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিক বলেছেন, ফাইনাল খেলে কাপ নেওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া দল একেবারে পারফেক্ট। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের সেদিন হেরে যাওয়ার কারণটি খুব চমৎকারভাবে এখানে ব্যাখ্যা করেছেন ভাই। সেদিনের পুরো খেলাটাই আমি দেখেছিলাম। আমিও আপনার এ কথাগুলোর সাথে একমত। খেলা শুরুর পূর্বে টস বিশেষ ভূমিকা পালন করে এটা সঠিক কথা বলেছেন। সেই দিন যে পিচে খেলা হয়েছিল সেখানে দুপুর বেলা খেলাটা অনেক কঠিন ছিল। এইজন্য ভারতীয় ব্যাটারা এত ভাল হওয়া শর্তেও তারা সেদিন বেশি রান করতে পারেনি। এক এক করে সব উইকেটের পতন ঘটে, ৫০ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৪০ রান করতে সক্ষম হয় তারা । যার ফলে অস্ট্রেলিয়া খুব সহজেই ম্যাচটি জিততে সক্ষম হয়।
আসলেই প্রথম ইনিংসে পিচ অনেক স্লো ছিলো। নয়তোবা কে এল রাহুল এবং সূর্যকুমার এমন মারমুখী ব্যাটসম্যান হয়েও,রান বের করতে কষ্ট হয়েছিল। আসলেই ভারতের দুর্ভাগ্য। ভেবেছিলাম টানা ১১ ম্যাচ জিতে নট আউট চ্যাম্পিয়ন হবে ভারত। যাইহোক গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।