হাই বন্ধুরা!
আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। যে গল্পের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমার জীবনে কোন একটা লুকিয়ে থাকা ঘটনা। একজনের জানা ঘটনা অন্য জনের মাঝে ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় অজানা তথ্য। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আজ। আজকে আমি আপনাদের মাঝে সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করতে চলেছি। যেখানে জানতে পারবেন সর্বপ্রথম আমাদের বাড়িতে সোলার প্যানেল স্থাপনের গল্প। কবে কখন কিভাবে একটি সৌর প্যানেল হাতে পেয়েছিলাম।

২০১৬ সাল তখন আমি অনার্সের স্টুডেন্ট। ঠিক শুক্রবার বৃষ্টি ঝরা একটি দিন। তখন কি মাস চলছে এটা আমার স্মরণে নেই, সম্ভবত আষাঢ় শ্রাবণ এমন একটা সময় হবে। পবিত্র শুক্রবারে জুমার নামাজের সময় হয়ে এসেছে। এই মুহূর্তে কোন এক ব্যস্ততার কারণে হয়তো আমার মসজিদে যাওয়ার একটা পিছুটান মনে হচ্ছে। আর ঠিক এই অবস্থায় বৃষ্টি টিপটি পড়ছে তাই মনে করলাম নামাজ পড়তে যাবো না। তারপর হঠাৎ করে মনের মধ্যে নাড়া দিয়ে উঠল সবাই নামাজ পড়তে চলে গেছে পাড়ার মানুষ আর আমি কেন নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকবো। একদম একটা বেজে গেছে, এই মুহূর্তে আমি আমাদের টিউবওয়েল পাড়ে উপস্থিত,গোসল করার জন্য। হঠাৎ শব্দ পেলাম আমাদের বাড়ির পথের দিকে একটি ইঞ্জিন চালিত গাড়ি এসে থেমে গেল। আমি এখনো গায়ে পানি ঢালি নাই। মনে হলো কিছু মানুষ জোরে জোরে চেঁচামিষ করতে করতে আমাদের বাড়ির দিকে আসছে। আমি তখন গেটের দিকে চেয়ে থাকলাম। দেখলাম একজনের মাথায় কাটুন, একজনের হাতে কাটুন আর এভাবে মোট ৬ জন মানুষ গেটের সামনে এসে উপস্থিত। আমি কয়েক পা তাদের দিকে এগিয়ে গেলাম,আমাকে প্রশ্ন করে বলল এটা কি সভাপতি মান্নানের বাড়ি। আমি তখন বললাম জী হ্যাঁ।

তখন উনাদের মধ্য থেকে একজন বলল আপনার আব্বার নামে একটি সৌর প্যানেল ছিল। সেইটা আপনাদের বাসায় বসাতে এসেছি। এটা সরকারি থেকে এসেছে। তখন আমাদের এলাকার মহিলা এমপি ছিলেন সেলিনা। উনি প্রত্যেক ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি সেক্রেটারিদের জন্য একটি করে সৌর প্যানেল সেট বরাদ্দ দিয়েছিলেন। যাইহোক আমার আর শুক্রবারে নামাজ পড়তে যাওয়া হয়ে উঠল না। ওরা আমার কাছে প্রশ্ন করলে ভাই এই লাইন কোথায় সেট করতে হবে। আমি বাড়িতে নির্দিষ্ট জায়গা দেখিয়ে দিলাম কোথায় কোথায় সোলারের ব্যাটারি বসাতে হবে কোথায় সোলারের কন্ট্রোলার লাগাতে হবে আর কোথায় বাল্ব সেট করতে হবে। এরপর তারা ছয় জন ঘরের মধ্যে প্রবেশ করল,যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছিল বাইরে দাঁড়িয়ে তারা কাজ করতে পারল না। ঘরের মধ্যে দ্রুত কাজ করার চেষ্টা করল। আর বললো ভাই আমরা দীর্ঘ সকাল থেকে এভাবে এক এক বাড়িতে সৌর প্যানেল লাগিয়ে আসছি। আপনাদের লাগানোর পরেও তিনটা লাগাতে হবে। তাই বিকাল পর্যন্ত আমাদের কাজ সম্পন্ন করে বাসায় ফিরতে হবে। তবে ২০১৩ সালের সৌর প্যানেল সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছিলাম, ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে কম্পিউটার ট্রেনিং করছিলাম একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের। সেই দোকানের সৌর প্যানেল বিক্রয় করতো। অবশ্য ধারণা খুব কম নিয়েছিলাম এই বিষয়ে তখন।

যাইহোক তারা তাড়াহুড়া করে এরপর পর্যায়ক্রমে সৌর প্যানেলের সমস্ত জিনিসগুলো একের পর এক লাগাতে থাকলো। একজন সোলারের কন্ট্রোলার বোর্ড দেওয়ালের সাথে লাগাচ্ছে আর একজন তার সেট করছে এভাবেই লক্ষ্য করলাম আধা ঘন্টার মধ্যে সেটআপ করে ফেলল। আর বৃষ্টি ভেজা চালের উপর একজন উঠে প্যানেল টা স্ট্যান্ডের উপর স্থাপন করলো। তারপর একটি ১২ ভোল্টের ডিসি টেবিল ফ্যান আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে ফটোগ্রাফি করল বলল এগুলা ডকুমেন্ট। তারপর আমার কাছে ৫০০ টাকা বকশি চাইলেও এই মুহূর্তে আমার কাছে কিন্তু ৫০০ টাকা ছিল না। সম্ভবত ২০০ কিবা ৩০০ টাকা ছিল সেটা বকশিশ হিসেবে দিয়ে দিলাম। তারপর বেশ সুন্দর সুন্দর পরামর্শ প্রদান করল বললো তিন দিনের মধ্যে আপনারা কোন বাল্ব বা ফ্যান চালাবেন না। আগে ব্যাটারি চার্জ হয়ে যাক। যেহেতু বৃষ্টি ভেজা দিন সূর্যের আলো সঠিকভাবে না দিলে ব্যাটারি চার্জ হতে দেরি হবে বিস্তারিত এভাবে আমাকে বুঝিয়ে দিল আর সে থেকে ধারণা পেলাম একটি সৌর প্যানেল সম্পর্কে। আর মূলত ২০১৬ সালের ওই দিনটাই আমার জীবনে প্রথম সরাসরি সৌর প্যানেল সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা আর এরপর থেকে ইউটিউব চ্যানেল আর নিজেকে কেনাকাটার মধ্য দিয়ে যথেষ্ট ধারণা অর্জন করে ফেলেছি এবং অন্যান্য মানুষদের সহায়তা প্রদান করে থাকি এই বিষয়ে।
গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

পুনরায় ফিরে আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই, সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ। |

আপনার বাবা ইউনিয়নের সভাপতি ছিল তাই আপনার বাবার জন্য একটি সৌর প্যানেল বরাদ্দ ছিল সরকারিভাবে এবং সেটা হাতে পেয়ে আপনার অনুভূতি বেশ দুর্দান্ত ছিল জেনে ভালো লাগলো ভাই। অনেক সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
এখনো রানিং সভাপতি রয়েছে ভাই।
আপনার বাবা যেহেতু ইউনিয়নের সভাপতি তাই একটি সৌর প্যানেল আপনাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।আপনি ইতিমধ্যে সেটি হাতে পেয়েছেন ।এখন আপনাদের জীবন নির্বাহ আরো মসৃণ হবে সৌর প্যানেল ব্যাবহারের মাধ্যমে।ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি মূলক পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ, প্যানেল অবশ্যই রয়েছে ব্যাটারি কবে নষ্ট হয়ে গেছে তবে স্মৃতিটা যেন মনে হয় স্পষ্ট
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন প্রথম সৌর প্যানেল হাতে পাওয়ার গল্প। আসলে ভাইয়া কোন কিছু প্রথম নিজ হাতে পেলে সেটি খুবই ভালো লাগে এবং তার কদর বেশ বেড়ে যায়। গল্পটি দারুন ছিল ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন প্রথম সৌর প্যানেল হাতে পাওয়ার গল্প। আসলে ভাইয়া কোন কিছু প্রথম নিজ হাতে পেলে সেটি খুবই ভালো লাগে এবং তার কদর বেশ বেড়ে যায়। গল্পটি দারুন ছিল ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
আমি এতটাই খুশি ছিলাম সেই স্মৃতি যেন মনে হয় কোনদিন ভুলবো না
ভাইয়া আপনার বাবার মাধ্যমে আপনারা প্রথম সৌর প্যানেল পেয়েছেন শুনে ভালো লাগলো। ২০১৬ সালের কথা আপনার এখনো মনে আছে। আমাদের দিকে সরকার থেকে কেউ সৌর প্যানেল পেয়েছে এমন কাউকে দেখি নাই। সেই দিক থেকে আপনারা শুভাগ্যবান। ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাই তারপর থেকে আমি একাধিক শোর প্যানেল কিনেছি এবং এই বিষয়ে যথেষ্ট কিছু জানি
সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত সৌরপ্যানেল পেয়েছেন নিশ্চয়ই তখনকার অনুভূতি অনেক বেশি দারুণ ছিলো নয়তো ১৬ সালের ঘটে যাওয়া সবকিছু এতোটা স্পষ্ট মনে থাকার কথা না। আপনার দেখছি বারসহ কতোজন ছিলো সবকিছুই মনে আছে আসলেই স্মৃতিটা বেশ অনুভূতিটা বেশ ভালো ছিলো বুঝতে পারছি
হ্যাঁ একদম স্পষ্ট মনে হচ্ছে সেই দিন। খুবই আনন্দিত ছিলাম কিন্তু আমি।
প্রথম সৌর প্যানেল হাতে পাওয়ার সুন্দর একটি গল্প আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। আপনার বাবা সভাপতি ছিলেন তাই একটি সৌর প্যানেল আপনাদেরকে দিয়েছিল জেনে ভালো লাগলো।গল্পটি পড়ে বেশ ভালই লাগলো যদিও এটা জীবনের বাস্তব একটি গল্প। এরকম সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
যেমন বাস্তব তেমনি আনন্দ ঘন মুহূর্তের গল্প