জ্যোতিবিজ্ঞানমূলক সিরিজ || সৌরজগৎ
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? যদিও দেশের অবস্থা ভালো নয়, ভালো না থাকারই কথা তারপরও সৃষ্টিকর্তার কাছে অকুল আবেদন আমরা প্রত্যেকেই জেনো নিজ নিজ জায়গা থেকে ভালো এবং সুস্থ থাকতে পারি। তবে আজ আমি একটু ব্যতিক্রমধর্মী বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। আমরা সকলেই মনে করি আমাদের এই পৃথিবী অনেক বড় কিন্তু এই পৃথিবী মহাবিশ্বের তুলনায় কিছুই নয় বরঞ্চ একটি ধুলোকণার সমান। কিন্তু তারপরও আমাদের এই মানুষের মধ্যে রয়েছে আবেগ, বিবেক, ভালোবাসা, বন্ধন এবং অপরদিকে রয়েছে হিংসা এবং বিদ্বেষ। আজ আমি আপনাদের সাথে এই সৌরজগৎ নিয়ে বেশ কিছু জানা অজানা তথ্য শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের এই তথ্যগুলো ভালো লাগবে।
আপনারা কি কেউ বলতে পারবেন আমাদের এই সৌরজগতের শেষ সীমানা কোথায়? অনেকে হয়তো প্লুটো হিসাবেও ধরতে পারেন, প্লুটো যে অবস্থানে রয়েছে সেটাই হয়তো আমাদের এই সৌরজগতের শেষ সীমানা তবে এটা ঠিক নয়। কিন্তু আপনারা যেন অবাক হবেন প্লুটো এর পরেও বিশাল একটি অংশ রয়েছে যেটা আমাদের এই সৌরজগতের মধ্যেই পড়ে এবং এর মধ্যেই রয়েছে ধূলিকণা, ধুমকেতু এবং বামন গ্রহ সহ আরো বেশ কিছু অবজেক্ট। এই বিষয়টি যদি একটু সংক্ষিপ্তভাবে বলা যায় তাহলে আমাদের এই সূর্যের গ্রাভিটির প্রভাব যতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত তাকেই আমরা সৌরজগতের শেষ সীমানা হিসেবে বিবেচিত করতে পারি। এবং এর নাম হিলিওয়িসফেয়ার।
এই অংশ প্রযন্ত আমাদের সূর্যের প্রভাব থাকে। এর পরের যে অংশ তাকে আমরা ইন্টারেস্টটরিয়াল স্পেস হিসাবে বিবেচনা করি অর্থাৎ দুটি সৌরজগতের মধ্যবর্তী স্থান। আমাদের সৌরজগতে এখনো অনেক রহস্যময় বস্তু রয়েছে এবং আমাদের সূর্য থেকে আমরা যতই দূরের দিকে চলে যাই ততটাই আমরা অন্ধকারের দিকে চলে যাই। অর্থাৎ প্লুটের পরে যেসব অবজেক্ট রয়েছে সেগুলো কে সঠিকভাবে নির্ধারণ করা কিংবা সঠিকভাবে বিবেচনা করা আমাদের পক্ষে অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। কারণ সেখানে সূর্যের আলো অনেক কম পরিমাণে পৌঁছায়।
২০০৯ সাল পর্যন্ত আমাদের এই সৌরজগতের গ্রহ সংখ্যা ছিল ৯ টি কিন্তু ২০০৯ সালের পরে প্লুটোকে গ্রহর মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করা হয়। বতর্মানে আমাদের এই সৌরজগতে টোটাল আটটি গ্রহ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি হচ্ছে রকি প্লানেট (প্রথম চারটি) এবং পরবর্তী চারটি গ্যাসীয় প্ল্যানেট বলা হয়। আমাদের এই সৌরজগতে সবথেকে বড় গ্রহটি হচ্ছে বৃহস্পতি এবং এটা একটা গ্যাসীয় দানব। অর্থাৎ এই গ্রহের কোন সলিড সারফেস নেই। এবং আমাদের এই সৌরজগতের সব থেকে ছোট গ্রহটি হল বুধ গ্রহ। এটা একটি রকি প্ল্যানেট অর্থাৎ এই গ্রহটি পাথর এবং মাটি দিয়ে তৈরি।
আজ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন বছর আগে আমাদের এই সৌরজগতের সৃষ্টি হয়। সৌর জগতের বেশিরভাগ অবজেক্ট মিলেই আমাদের এই সূর্য তৈরি হয় এবং বাদবাকি যেসব ধূলিকণা এবং গ্যাস ছিল সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গ্রহ উপগ্রহ তৈরি হয়। এরপরও যেগুলো বেঁচে গিয়েছে সেগুলো প্লুটো যে অংশটি রয়েছে সেখানেই রয়েছে। এবং সেই অংশেই অনেকগুলো বামন গ্রহ রয়েছে যেগুলো আসলে গ্রহ হবার শর্তগুলো পূরণ করে না। সেই অংশটিকে কাইপার বেল্ট বলা হয়। এর পরে অংশটিকে ওট ক্লাউড বলা হয় এবং এটি একটি মেঘের মত। এই অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ধূলকণা, পাথর এবং বরফের টুকরো। যদিও এই অংশটিকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে স্পষ্ট কোন ধারণা নেই, তারপরও এটা আমাদের সৌরজগতের একটি অংশবিশেষ।
এই ওট ক্লাউড পৃথিবী থেকে এবং সূর্য থেকে অনেক বেশি দূরে অবস্থিত। এর দুরুত্ব পরিমাপের জন্য আমরা অ্যাস্ট্রোনিকাল ইউনিট ব্যবহার করব। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব যতটুকু তাকে আমরা এক অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল ইউনিট বলি। ঠিক তেমনিভাবে এটা সূর্য থেকে প্রায় দুই হাজার থেকে এক লক্ষ ও এই অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল ইউনিট পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। তাহলে একবার চিন্তা করে দেখুন যেখানে সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছাতে প্রায় ৮ মিনিট ১৮ সেকেন্ড সময় লাগে। তাহলে অত দূর পর্যন্ত সূর্যের আলো পৌঁছাতে কতটুকু সময় লাগে এবং জায়গাটা কত বড় বিস্তৃত? আমাদের এই সৌরজগৎ ছোট দেখতে হলেও এটা কিন্তু আসলে ছোট নায়, বিশাল বড় একটি জায়গা নিয়ে এই সৌরজগৎ অবস্থিত। তবে মহাবিশ্বের তুলনায় এই সৌরজগৎ একটি ক্ষুদ্র ধুলিকনার সমান।
আমাদের এই সৌরজগতে এখনো অন আবিষ্কৃত এমন অনেক বস্তু এবং অবজেক্ট রয়েছে যেসব সম্পর্কে আমরা এখনো বিন্দুমাত্র ধারণা রাখি না। তবে আমাদের টেকনোলজি যত এডভান্স হচ্ছে তত আমরা নতুন তথ্য পাচ্ছি। আশা করা যায় বেশ কিছু সময়ের মধ্যে আমরা আরো নতুন নতুন অবজেক্ট সম্পর্কে জানতে পারব এবং আমাদের এই বাসস্থান সৌরজগৎ সম্পর্ক বিস্তারিত জানতে পারব। আজকের মত এখানে শেষ করছি আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR

250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: জ্যোতিবিজ্ঞানমূলক সিরিজ || সৌরজগৎ
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
বিজ্ঞানের যেকোনো টপিক আমাকে আকর্ষণ করে। আপনার লেখায় অনেক নতুন কিছু জানতে পারলাম। কাইপার বেল্ট সম্পর্কে আমার আগে কোন জ্ঞান ছিল না। এএস্ট্রোনোমিকাল ইউনিট সম্পর্কে জানতাম না। খুবই মূল্যবান কিছু জানতে পারলাম। আশাকরি বিজ্ঞান নিয়ে আপনার কাছ থেকে আরও এমন তথ্যবহুল লেখা পড়ার সুযোগ হবে।
টেকনোলজি যত অ্যাডভান্স হচ্ছে তত নতুন নতুন তথ্য সামনে চলে আসছে। আর যারা এই বিষয়গুলো নিয়ে সবসময় চিন্তা করে তারা অনেক কিছু জানতে পারছে। সৌরজগতের শেষ সীমানা কোথায় এই বিষয়ে খুব একটা ধারণা নেই ভাইয়া। তবে আপনার এই পোস্টগুলো পড়তে অনেক ভালো লাগে। নতুন কিছু জানতেও ভালো লাগে।
আসলেই আমরা কিন্তু সত্যিই মনে করি এই পৃথিবীটা অনেক বড়। যাইহোক আপনার শেয়ার করা বিজ্ঞান ভিত্তিক পোস্ট গুলো পড়লে অনেক কিছুই জানা যায়। কাইপার বেল্ট এবং ওট ক্লাউড সম্পর্কে একেবারেই ধারণা ছিলো না ভাই। বেশ ভালো লাগলো এসব জানতে পেরে। যাইহোক এমন তথ্যমূলক একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।