ছোটগল্প ( বৃষ্টির গান- প্রথম পর্ব )!!

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ বৃহস্পতিবার, ৫ ই জুন ,২০২৫।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000581183.png


মে মাস চলছে। বাংলায় ঠিক কোন মাস সঠিক জানা নেই। সম্ভবত ঐ আষাঢ় মাস হবে। গরমের তীব্রতা বেড়েছে। তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪০ এর গন্ডি। দিনের বেলা বাইরে বের হওয়া যায় না। সূর্যের তাপে যেন শরীর টা পুরো ঝলসে যায়। বৃষ্টির দরকার বৃষ্টির। প্রশান্তির বৃষ্টি দরকার। কিন্তু আকাশে কোন মেঘের দেখা পাওয়া যায় না। আর কতদিন যে এভাবে গরমে কাটবে নিজের ঘরে বসে এমনটাই ভাবছিল আদিত‍্য। হঠাৎ করেই সুখবর ভেসে এলো। আগামী কয়েকদিন টানা বৃষ্টি হবে। সম্ভবত কোন ঘূর্ণিঝড় দূর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং তার প্রভাব থাকবে আগামী কয়েকদিন। তবে সেটা কতটা বিশ্বাসযোগ্য এটা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে আদিত‍্যের মনে।কারণ নিউজটা দিয়েছে বাংলাদেশ আবওহাওয়া অধিদপ্তর। অধিকাংশ সময় আবওহাওয়া এদের পূর্বাভাসের বিপরীত হয়ে থাকে। তবে আপাতত বৃষ্টি চাই বৃষ্টি।

নিজের মায়ের মৃত্যুর পরে একেবারে একা হয়ে গিয়েছে আদিত‍্য। বাবা চলে গিয়েছে বছর ১৪ আগে। ছিল শুধুমাত্র এক মা সেও কয়েকমাস আগে চলে গিয়েছে। আদিত‍্য এখন পুরোপুরি একা। মায়ের চলে যাওয়ার পরে চাকরিটাও ছেড়ে দিয়েছে আদিত‍্য। ঠিক কার জন্য আর আদিত‍্য এসব করবে? এই পৃথিবীতে আর কে আছে তার। সারাদিন নিজের ঘরের মধ্যেই থাকে। বিকেলের দিকে হাঁটতে বের হয়। কোনদিন চলে যায় রমনা পার্কে। আবার কোনদিন হাঁটতে থাকে নীলক্ষেত এর বইয়ের মার্কেটে। আবার কোনদিন চলে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ‍্যানে। তবে সন্ধ‍্যার পরে এই জায়গাটা মোটেও আর নিরাপদ না সেটা আদিত‍্য এতদিনে বুঝে গিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সব ছেলেরা নেশাদ্রব‍্য বিশেষ করে গাজা নিয়ে বসে পড়ে গোল হয়ে। এসব দেখে আদিত‍্যের মাঝে মাঝে বেশ বিরক্তি লাগে। আবার পরের মূহূর্তে মনে হয় না ঠিকই আছে। সবাই যদি ভালো হবে তাহলে খারাপ হবে কে। সন্ধ‍্যার হাঁটাহাঁটি শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত ৯-১০ টা বেজে যায়। তারপর আবার সেই পরের দিন বিকেল পযর্ন্ত নিজের রুমে। খুব দরকার না পড়লে আদিত‍্য নিজের ঘর থেকে বের হয় না। মানুষের ভীড় আর এখন তার ভালো লাগে না। গুটিকয়েক যে আত্মীয়স্বজন আছে তাদের সাথেও তার যোগাযোগ আর নেই।তবে আগামীকাল তাকে একটা কাজে যেতে হবে ব‍্যাংকে।

বাবার বহুকষ্টে রেখে যাওয়া সব অর্থ সম্পদ এতদিন মায়ের হেফাজতে ছিল। তবে এখন সেটা তাকে বুঝে নিতে হবে। এইজন্যই ব‍্যাংকে আগামীকাল যেতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ‍্যাস না থাকায় বড় ধরনের সমস‍্যা মনে করে আদিত‍্য। ঘুম যখন ভাঙলো তখন সকাল সাড়ে দশটা। ততক্ষণে শফিক ভাই বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েছে। শফিক আদিত‍্যের মামার ছেলে। শফিক ভাই আদ‍িত‍্যের থেকে বছর ৭-৮ এর বড়। এইসব ঝামেলা সম্পর্কে আদিত‍্য একেবারে অবগত না। এইজন্যই শফিক ভাইয়ের দ্বারস্থ হয় সে। শফিক ভাই ব‍্যাংকে গিয়ে বসে থাকলেও আদিত‍্যের খোঁজ নেই। তবে ঘুম ভাঙার পরে ফোন দেখে, তখন কিছু বুঝতে বাকি থাকে না আদিত‍্যের। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়ে কাগজপত্র নিয়ে। বাইরে গিয়ে একটা রিক্সা নিবে ঠিক করে আদিত‍্য। তখন সে লক্ষ্য করে আকাশটা বেশ মেঘলা। সকাল থেকে সম্ভবত বৃষ্টি হয়েছে সামান্য। একটা রিক্সাওয়ালাকে ডেকে আদিত‍্য বলে

এই মামা মতিঝিল যাইবা?

হ মামা যাবু মাগার দেড়শো টাকা লাগবো।

আরে কী বলো মামা সবসময় তো ৫০ টাকায় যায় আজ এতো কেন।

মামা মতিঝিলের সাইডে রাস্ত ভাঙা। তার উপরে হইছে বৃষ্টি। পানি জইমা গ‍্যাছে রাস্তায়। ঐটার কমে যাইতে পারব না মামা। ।

আদিত‍্যের আর বুঝতে বাকি থাকলো না। সকাল থেকে বৃষ্টি টা বেশ ভালোই হয়েছে। আর বৃষ্টি হলে ঢাকার রিক্সাওয়ালারা যে ভাড়া চাই সেটা শুনে আপনার হৃৎপিণ্ডে কিঞ্চিৎ কেঁপে উঠবে এতে কোন সন্দিহান নেই।

আরও কয়েকবার ততক্ষণে ফোন দিয়েছে শফিক ভাই। ফোন ধরে আদিত‍্য বলেছে ভাই আইয়া পড়ছি আরেকটু। সাধারণত শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে আদিত‍্য। তবে ঢাকার এই সাইডে থাকতে থাকতে এদের ভাষাটা মোটামুটি আপন হয়ে গিয়েছে। এইজন্যই মাঝে মাঝে পুরান ঢাকার ভাষায় কথা বলে যদি সেরকম সঙ্গী পায়। ব‍্যাংকে যখন আদিত‍্য ঢুকলো তখন ঘড়িতে প্রায় ১২ টা। আরেকটু পরেই শুরু হবে লাঞ্চ ব্রেক। আর ব‍্যাংকের লাঞ্চ ব্রেক মানে যে কী সেটা হয়তো আপনাদের আর বোঝানো লাগবে না।

চলবে.......



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png


1000561739.png


Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.