ছোট গল্প হিমেলের শেষে দেখা# দ্বিতীয় পর্ব /১০% প্রিয় 💞 @shy-fox
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।
আজ আমি আপনাদের আমার লেখা ছোট গল্প হিমেলের শেষে দেখা, দ্বিতীয় পর্ব সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
আসুন শুরু করি
তারপর আমি আর হিমেল রেস্টুরেন্টের টেবিলে এসে বসলাম। আমাদের কথার মাঝে হঠাৎ করে আমার মনে পড়লো অপূর্ণতার বয়স মনে হয় এখনো আঠারো হয় নি ।আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম অপূর্ণতার তোমার বয়স কত চলছে? তখন অপূর্ণতা বললো ভাইয়া ১৭ চলছে। তখন আমি হিমেল কে উদ্দেশ্য করে বললাম। তোমরা যে এখন বিয়ের কথা বলছো তার তো বয়স এখন কম এই অবস্থায় বিয়ের রেজিস্ট্রেশন কিভাবে সম্ভব হবে? তখন হিমেল খুবই গম্ভীর স্বরে বললো আসলে ভাই এই বিষয়টি তো মাথায় ছিল না। আসলে অপূর্ণতাকে দেখতে বেশ সুন্দর এবং লম্বা দেখতে মনে হয়। বয়স ২২ থেকে ২৩ হবে। চেহারাটা কলকাতার নায়িকা নুসরাতের মতোন। অপূর্ণতার শারীরিক অবস্থা দেখে কেউ বলবে না সে এখন মাত্র ক্লাস নাইনে পড়ে। সবাই বলবে সে ইন্টারমিডিয়েট বা অনার্সের ছাত্রী। হিমেল আর অপূর্ণতা আমাকে আর কি খেতে চাই জিজ্ঞেস করলো তারা বিভিন্নভাবে আমাকে খাওয়া-দাওয়া করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। তারা বিভিন্ন কিছু অর্ডার দিতে চাচ্ছে আমি শুধু বললাম কফি খেতে আমাদের জন্য ওয়েটার কফি নিয়ে আসলো। আমি কফি খাচ্ছি আর অপূর্ণতাকে বললাম । তুমি কথা বলছো না কেন? তুমি কি সিদ্ধান্ত নিয়েছো ? কি করবে এখন? তোমার তো বয়স কম এখনো। তখন অর্পিতা মোবাইল থেকে আমাকে তার জন্ম নিবন্ধন কার্ডের ছবি দেখালো। আমি জন্ম নিবন্ধন কার্ড দেখে বলছি এখনো তো আরো ৭ মাস ১৯ দিনের মতোন বাকি ১৮ বছর পূর্ণ হতে। আমি অপূর্ণতাকে বললাম তুমি যেভাবে হোক এই কয়েকটি দিন তোমাদের পরিবারে সকল সদস্যের সাথে খুব ভালোভাবে মিলেমিশে চলে কাটাতে হবে। এখন আমাদের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তুমি মাত্র নাইনে বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছো।
তুমি খুব ভালোভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের কি পরিকল্পনা রয়েছে তা যেন কোন ভাবে তোমাদের পরিবারের সদস্যরা জানতে না পারে। আর হিমেল কে বলছি তুমি অপূর্ণতার সাথে এই কয়টি মাসের জন্য আপাতত যোগাযোগ বন্ধ রাখো। আমি কথাটা বলার সাথে সাথে হিমের বললো ভাই এটা কি সম্ভব। আমি হিমেলকে বুঝাতে লাগলাম কোন কিছু পেতে হলে কঠিন ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। তা তুমি জানো অবশ্যই তোমাকে এই কয়দিন অপূর্ণতার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। তা না হলে তাদের পরিবার যে কোন মুহূর্তে যে কোন ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। তারপর আমি তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললাম । আজকের মত উঠি যাক। আমাকে তোমরা মাঝেমধ্যে ফোন দিও। তারপর আমি তাদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। আর অপূর্ণতা একটি সিএনজি করে তাদের বাসার দিকে চলে গেলো
আমি বাসায় এসে রাতের খাবার আর খাইনি কেমন যেন আমার কাছে ভালো লাগছে না। বারবার তাদের কথাই মনে পড়ছে। তাদের দুইজন দুইজনকে দেখে মনে হচ্ছে তার একে অপরকে অনেক ভালোবাসে। তাদের এই ভালবাসার সম্পর্ক কি স্থায়ি হবে? মনের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। কিছুদিন পর আমার কাছে হিমেল ফোন করেছে আমার কাছে অপূর্ণতার কথা জিজ্ঞেস করলো। আমি বললাম অপূর্ণতা ভালো আছে। তবে ঐ দিন রেস্টুরেন্টে দেখা হওয়ার পর থেকে তার সাথে আর কথা হয়নি আমি মনে মনে বলছি। হিমেল বললো ভাইয়া কোন ভাবে দিন যাচ্ছে না। আজ অনেক দিন হয়ে গেলো অপূর্ণতার সাথে কথা বলা হয় নাই। আমি হেসে উঠে বললাম, অনেকদিন কই, মাত্র কয়দিন পার করেছো মাত্র । হিমেল বললো ভাইয়া আপনি হাসছেন আমার তো ভীষণ করছো কষ্ট হচ্ছে । আমার কাছে মনে হচ্ছে অনেকদিন তার সাথে কথা বলা হয় না। ভাইয়া আমি তার সাথে দেখা করতে চাচ্ছি। আমি একথা শুনে মাত্র কঠোর ভাবে তাকে বললাম এখন কোন ভাবে দেখা করো না। আমি তাকে বললাম অপেক্ষায় থাকো আমি তার সাথে কথা বলে তোমাকে জানিয়ে দেবো। অর্পিতার মনে হয় মড়েল টেস্ট পরীক্ষা চলছে। তার সাথে কথা বললে শেষ করে আমি অপূর্ণতাকে ফোন দিচ্ছি। আমি যতবারই ফোন দিচ্ছি ততো বারই ফোন বন্ধ বলছে। আমি পরদিন সকালে আবার ফোন দিলাম তখনো ফোন বন্ধ বলছে। তখন আমার মনের মধ্যে হঠাৎ চিন্তা আসলো অপূর্ণতার কোন কিছু হয়েছে নাকি। এভাবে করতে করতে কয়দিন কেটে গেলো। আমারও কোন কাজ নেই ম্যাডামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য। এদিকে বারবার ফোন করে হিমেল অপূর্ণতার কথা জিজ্ঞেস করছে। আমি বলছি অপূর্ণতা ভালো আছে। আমি মনে মনে বলছি সত্যি যদি অপূর্ণতার কোন কিছু হয়ে যায় । তাহলে আমি হিমেলের কাছে কি উত্তর দিবো। যেভাবে হোক ম্যাডামের বাড়িতে যেতে হবে আমাকে। আমার মনে আছে একদিন ম্যাডাম ক্লাসের এক ছাত্র থেকে দেশি মুরগির ডিম নিয়েছিল তার মেয়ের জন্য। তখন আমি বাজার থেকে দশটি দেশি মুরগির ডিম নিয়ে গেলাম ম্যামের বাড়িতে।
ম্যাডাম দেখে তো হতবাক তুমি হঠাৎ ডিম নিয়ে আসলে কেন। আমি বললাম ডিম গুলো অনুশির জন্য। আমি ম্যাডামদের পরিবারের সকলের কথা জিজ্ঞেস করছি। কথা ফাঁকে আমি অপূর্ণতা কথা জিজ্ঞেস করলাম তখন সে বললো অপূর্ণতাকে তার আব্বু ঢাকাতে তার মামার বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে। তখন আমি বললাম কেন সেই এই বছর এসএসসি পরীক্ষা দিবে না। ম্যাডাম বললো দিবে তবে পরীক্ষার আগে বাড়িতে আসার সম্ভাবনা কম। তারপর আমি বললাম বাড়িতে থাকলে তো মনে হয় লেখাপড়া ভালো হতো। আপনার সাথে কথা হয় নাকি? সে বলল না অপূর্ণতার আব্বু তার মোবাইল রেখে দিয়েছে ঐ বাসাতে তার কোন মোবাইল নেই। আমি বললাম ও আচ্ছা। তারপর ম্যাডামের সাথে আরও অন্যান্য বিষয়ে কথা বলে তাদের বাড়ি থেকে চলে আসলাম। তারপর আমি হিমেলকে জানালাম অপূর্ণতা তার মামার বাসায় ঢাকাতে রয়েছে। তার কাছে কোন মোবাইল নেই।
এই কথা শুনা মাত্রই হিমেল পাগলপারা হয়ে গেলো। আমি হিমেলকে সান্তনা দিয়ে বলছি দেখো একটু অপেক্ষা করো। আমি জানার চেষ্টা করবো ঢাকাতে কোন জায়গায় রয়েছে অপূর্ণতা। কয়েকদিনের মধ্যে আমি ম্যাডাম থেকে জানতে পারলাম অপূর্ণতা দের বাসা ঢাকাতে সংসদ ভবন এলাকাতে রয়েছে। এদিকে আমি হিমেলের সাথে দেখা করেছি। দেখা করে বুঝতে পারলাম হিমেলের চোখে মুখে চিন্তার চাপ পড়ে রয়েছে। আমি তাকে বললাম ফার্মগেটে আমার এক বন্ধু রয়েছে। তাকে তোমাদের বিষয়গুলো বলেছি। সে চেষ্টা করবে কোনভাবে অপূর্ণতার সাথে দেখা করা যায় কিনা। এভাবে প্রায় পাঁচ মাস কেটে গেল। আর এদিকে হিমেল দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এক দিন ম্যাডামের মুখে শুনেছি অপূর্ণতা পাসপোর্ট তৈরি করতেছে কলকাতা যাওয়ার জন্য। এদিকে হিমেল ঠিক মতে অফিসে না যাওয়াতে চাকরি চলে গেলো।এই পরিস্থিতিতে আমি তাদের জন্য কিছু করতে পারছি না।
প্রিয় বন্ধুরা, আজ এ পর্যন্ত আগামী পর্বে পুরো গল্পটি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
পোস্ট বিবরণ :-
শ্রেণী | ছোট গল্প |
---|---|
ক্যামেরা | Redmi note 7 |
পোস্ট তৈরি | @ah-agim |
লোকেশন | ফেনী, বাংলাদেশ |
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি এই ধরনের ছোট গল্প আরো উপস্থাপন করব , ইনশাআল্লাহ।
- অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
সত্যিই তো কোন কিছু পেতে হলে কঠিন ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। হিমেল অপূর্ণতাকে অনেক ভালো বাসে।হিমেল যখন জানতে পারল অপূর্ণতাকে তার মামার বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার কাছে কোন ফোন নেই। তখন হিমেল কেনো যে কোন মানুষই পাগল হওয়ার মত অবস্থা হবে। যাইহোক দেখা যাক হিমেল ধৈর্যের ফল পাই কি না।পরবর্তী পবের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। ধন্যবাদ
পুরো পোস্টটি পড়ে সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
ভাই আপনি অনেক ভাল একটা পরামর্শ দিয়েছেন।তখন তারা রেজেস্ট্রি করলে হিমেল প্রচুর বিপদে পড়ত। বন্ধু হিসেবে আপনি দারুন একটি পরামর্শ দিয়েছেন। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
গল্পটি পড়ে এত দুর্দান্ত মতামত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।