ছোট গল্প: একটি মেয়ের স্বপ্ন। ❤️

in আমার বাংলা ব্লগ23 days ago
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001


আজ ০২ মে রোজ শুক্রবার ২০২৫ ইং:।

বাংলায় ২০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি.........

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি।প্রতিদিনের মতো আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজ আমি একটি মেয়ের স্বপ্ন নিয়ে অনেক সুন্দর একটি ছোট গল্প লিখব। আশা করি আমার লেখা ছোট গল্পটি পড়ে আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করি।

fantasy-7750512_1280.jpg

Source

একটা সবুজে মোড়ানো ছোট্ট গ্রাম নাম তার সোনারতলি। এই গ্রামটা যেন ছবির মতো সুন্দর, কিন্তু আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে অনেক দূরে। এখানেই জন্ম রুপার। ছোটবেলা থেকেই রুপার চোখে ছিল এক আশ্চর্য দীপ্তি। তার বয়স তখন মাত্র আট, যখন সে প্রথমবার তার বাবাকে বলেছিল "বাবা আমি একদিন বড় ডাক্তার হবো, আর তোমার মতো যারা কষ্ট করে মাঠে কাজ করে, তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেবো।"রুপার বাবা একজন সাদাসিধে কৃষক, মেয়ের স্বপ্ন শুনে শুধু হেসেছিলেন। তিনি জানতেন স্বপ্ন দেখা সহজ, কিন্তু সেটা পূরণ করার পথ খুব কণ্টকাকীর্ণ। তবু মেয়ের চোখের আলো আর সাহসে তিনি নিরবে ভরসা রেখেছিলেন।রুপা পড়ালেখায় ছিল অসাধারণ। গরিবের ঘরের মেয়ে হলেও কখনো অভাবকে নিজের দুর্বলতা বানায়নি। খালি পায়ে স্কুলে যাওয়া, রাতের আঁধারে কুপি জ্বালিয়ে পড়া সব কিছু সয়ে নিয়েও সে প্রথম হতো। তার প্রতিটি পরীক্ষার ফল ছিল তার পরিবারের আশা বাঁচিয়ে রাখার মতো।একবারের এক মেলায় গ্রামে এলো এক এনজিও সংস্থা। তারা দরিদ্র-মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির সুযোগ নিয়ে এসেছিল। রুপা আবেদন করল, পরীক্ষায় অংশ নিল এবং বাজিমাত করল। সংস্থার কর্মকর্তারা তাকে দেখে মুগ্ধ হলেন। তারা শহরে তাকে উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করল। গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার আগে রুপা মাটির দলা হাতে নিয়ে বলেছিল, “আমি ফিরে আসব, এই মাটিকেই ভালোবাসি।”

শহরের জীবন সহজ ছিল না। ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন সংস্কৃতি, আর হোস্টেলের চার দেয়ালের মধ্যেও রুপা তার লক্ষ্য থেকে একচুলও সরে যায়নি। ক্লাসের পর সে লাইব্রেরিতে ঘন্টার পর ঘন্টা পড়াশোনা করত, পয়সা বাঁচিয়ে খেত কম, কিন্তু শেখার প্রতি তার লোভ ছিল সীমাহীন।ছয় বছর পর রুপা ডাক্তার হল। সে চাইলেই শহরে থাকতে পারত, বড় কোনো হাসপাতালে চাকরি করে আরাম-আয়েশে জীবন কাটাতে পারত। কিন্তু সে কথা রেখেছিল। ফিরে এল সোনারতলিতে হাতে একটা মেডিকেল ডিগ্রি, সঙ্গে মনের ভেতর ভালোবাসা।সে শুধু নিজের জন্য নয় সঙ্গে করে একদল তরুণ ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, ওষুধ, আর পরিকল্পনা নিয়ে এল। গ্রামের পুরনো স্কুল ঘরটাকে রূপ দিল এক আধুনিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। যেখান থেকে প্রতিদিন অসহায় মানুষ বিনা মূল্যে চিকিৎসা পেতে শুরু করল।শুধু চিকিৎসাই নয়, রুপা স্কুলে গিয়ে মেয়েদের স্বাস্থ্য শিক্ষা দেয় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বয়স্কদের রক্তচাপ মাপে, গর্ভবতী নারীদের সচেতন করে তোলে। সে জানে, চিকিৎসা শুধু ওষুধ না ভালোবাসা, সেবা আর বোঝাপড়ার নামও।গ্রামের শিশুরা এখন বড় হয়ে বলতে চায়, “আমিও রুপা আপুর মতো হবো।” একদিন এক রোগী, যিনি অনেক দিন অসুস্থ ছিলেন, রুপার হাত ধরে বললেন, “তুই শুধু ডাক্তার না রে মা, তুই তো আমার মেয়ের চেয়েও আপন।” সেদিন রুপার চোখে জল এসেছিল, কিন্তু সে হাসিমুখেই বলেছিল, “আমি থাকব চিরদিন, এই গ্রামের প্রতিটা মানুষই তো আমার পরিবার।”


পোস্টের বিষয়ছোট গল্প
পোস্টকারীতানহা তানজিল তরসা
ডিভাইসরেডমি নোট ১১
লোকেশনপাবনা
আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর লেখার অমিল ও ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেবেন।


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি তানহা তানজিল তরসা। আমার স্টিম আইডির নাম @tanha001। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমি বিবাহিতা। আমার একটা ছেলে সন্তান আছে। আমি ফটোগ্রাফি, গান গাইতে,রান্না করতে ও বাইকে ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। আমার জন্ম স্থান কালিগঞ্জ থানা ঝিনাইদহ জেলায়। আমি পেশায় এক গৃহিনী। পাশাপাশি আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমি আমার হাসবেন্ড এর চাকরির সূত্রে পাবনা চাটমোহর এ বসবাস করছি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য ও সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। স্পেশালি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিন ও মডারেটরদের যারা আমাকে এত সুন্দর একটা কমিউনিটিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আমাকে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করছেন।


১০%প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


Logo.png

Banner.png

20250501_194036.jpg