ছোট গল্প : স্বপ্নের সিঁড়ি।❤️

in আমার বাংলা ব্লগ23 days ago
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001


আজ ২০ এপ্রিল রোজ শনিবার ২০২৫ ইং:।

বাংলায় ০৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।

হ্যালো বন্ধুরা....

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।আমি সপ্তাহের সাতটি ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট শেয়ার করার চেষ্টা করি। সেই ধারাবাহিকতায় আজ একটি ছোট গল্প পোস্ট শেয়ার করব। আশা করি আমার লেখা ছোট গল্পটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

boy-5355710_1280.jpg

Source

একটি দূর-দূরান্তের শান্ত গ্রামের নাম পদ্মপুর। এখানেই জন্ম রাহুলের। তার ছোট্ট কুঁড়েঘরটা গ্রামের এক কোণে, যেখানে সন্ধ্যার আলো পৌঁছায় দেরিতে, কিন্তু মায়ের ভালোবাসা আর বাবার মেহনতের আলোয় ঘরটা সবসময় উজ্জ্বল থাকত।রাহুলের বাবা ছিলেন একজন কৃষক। সামান্য জমিতে ফসল ফলিয়ে কোনোরকমে সংসার চালাতেন। মা গৃহিণী হলেও মাঝে মাঝে পাড়ার বাড়িতে কাজ করতেন। কিন্তু সব কষ্টের মাঝেও রাহুলের চোখে ছিল আলোর ঝিলিক একটা স্বপ্ন, শহরে গিয়ে বড় কিছু হবার।প্রথমদিকে সে স্কুলে যেত খালি পায়ে। অনেক সময় খালি পেটে। বন্ধুদের কাছে পুরনো বই চেয়ে আনত। কিন্তু পড়াশোনার প্রতি তার ভালোবাসা এতটাই গভীর ছিল যে কোনো কষ্টই তাকে থামাতে পারত না। স্কুলের হেডমাস্টার মীর্জা স্যার রাহুলকে আলাদা চোখে দেখতেন। একদিন বললেন,"তুই যদি সত্যিই মন দিয়ে পড়িস, একদিন তোকে সবাই চিনবে রে রাহুল।"এই কথাটা রাহুলের মনে গেঁথে গেল। সে দিন-রাত এক করে পড়াশোনা করতে লাগল। গ্রামের খেলার মাঠে যখন সবাই ফুটবল খেলত, রাহুল তখন গাছতলায় বসে অঙ্ক কষত।

একদিন শহরে একটা মেধা পরীক্ষার খবর এলো। গ্রামের অনেকেই ভাবল, এই ছেলে কি পারবে? কিন্তু রাহুল জানত চেষ্টা করলে অসম্ভব বলে কিছু নেই। সে পরীক্ষায় অংশ নিল। আর কিছুদিন পর খবর এলো সে প্রথম হয়েছে। পুরো গ্রাম তখন রাহুলকে দেখে যেন নতুন চোখে দেখতে লাগল।শহরের এক বড় স্কুল থেকে বৃত্তি পেয়ে রাহুল ভর্তি হলো। শহরের জীবন ছিল কঠিন। একদিকে নতুন পরিবেশ, অন্যদিকে জীবিকার তাগিদ। সে একটা ছোট দোকানে সন্ধ্যায় কাজ করত, আর রাতের বেলায় হোস্টেলে বসে পড়ত। কখনো কখনো অভাব এতটাই বেড়ে যেত যে, এক বেলার খাবারও জোটত না। তবু সে ভেঙে পড়েনি।একদিন এক বড় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়ে গেল রাহুল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে হয়ে উঠল দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার। দেশের নানা প্রান্তে তার কাজের সুনাম ছড়িয়ে পড়ল। একদিন বিদেশ থেকেও প্রস্তাব এল।তবে রাহুল ভুলে যায়নি তার শিকড় তার পদ্মপুর। বড় হবার পর, সে একদিন ফিরে এল গ্রামে। মাকে জড়িয়ে ধরে বলল,"তোমার স্বপ্ন ছিল বলে আজ আমি এখানে মা।"সে গ্রামে একটা ফ্রি লাইব্রেরি তৈরি করল, নাম দিল “স্বপ্নের সিঁড়ি”সেখানে গ্রামের সব ছেলেমেয়েরা এসে পড়তে পারে, বই নিতে পারে, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে।রাহুল নিজের হাতে ছোটদের গল্প পড়ে শোনাত, বলত "স্বপ্নটা আগে চোখে আনো। তারপর সে স্বপ্নে পৌঁছানোর রাস্তা আপনিই খুলে যাবে।" তার শেষ কথাটি এমন ছিল "তোমার শুরুটা যত ছোটই হোক, তুমি যদি বিশ্বাস রাখতে পারো, তুমি একদিন ঠিকই আকাশ ছুঁয়ে ফেলবে।"


মূলভাব:

"স্বপ্নের সিঁড়ি" গল্পটি একজন গ্রাম্য ছেলেকে ঘিরে গড়ে উঠেছে, যার নাম রাহুল। এই গল্প আমাদের শেখায় জীবনের বাস্তবতা যত কঠিনই হোক না কেন, সাহস, অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাস থাকলে মানুষ তার লক্ষ্যে পৌঁছাতেই পারে। রাহুলের জীবনের সংগ্রাম, তার আত্মত্যাগ, এবং অবিচল মনোবল তাকে শুধু নিজের স্বপ্ন পূরণ করতেই সাহায্য করেনি, বরং সে নিজের গ্রামের জন্যও হয়ে উঠেছে একটি আলোর দিশারি।স্বপ্ন দেখো, কঠোর পরিশ্রম করো, আর নিজের অবস্থানকে সীমা ভেবে থেমে থেকো না।"জীবনের সিঁড়িতে ওঠার প্রথম ধাপই হলো স্বপ্ন দেখা, আর পরের ধাপগুলো গড়ে ওঠে নিষ্ঠা, আত্মবিশ্বাস ও অনুপ্রেরণার উপর ভিত্তি করে। গল্পটি প্রমাণ করে, প্রকৃত সাফল্য শুধু নিজের উন্নতি নয় বরং তা তখনই পূর্ণতা পায়, যখন কেউ অন্যের জীবনেও আলো ছড়িয়ে দিতে পারে।

পোস্টের বিষয়ছোট গল্প
পোস্টকারীতানহা তানজিল তরসা
ডিভাইসরেডমি নোট ১১
লোকেশনপাবনা
আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর লেখার অমিল ও ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেবেন।


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি তানহা তানজিল তরসা। আমার স্টিম আইডির নাম @tanha001। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমি বিবাহিতা। আমার একটা ছেলে সন্তান আছে। আমি ফটোগ্রাফি, গান গাইতে,রান্না করতে ও বাইকে ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। আমার জন্ম স্থান কালিগঞ্জ থানা ঝিনাইদহ জেলায়। আমি পেশায় এক গৃহিনী। পাশাপাশি আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমি আমার হাসবেন্ড এর চাকরির সূত্রে পাবনা চাটমোহর এ বসবাস করছি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য ও সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। স্পেশালি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিন ও মডারেটরদের যারা আমাকে এত সুন্দর একটা কমিউনিটিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আমাকে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করছেন।


১০%প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


Logo.png

Banner.png

20250419_190754.jpg