ছোট গল্পঃ ঘড়ির অদ্ভুত রহস্য।

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001


আজ ০৩ ফেব্রুয়ারি রোজ সোমবার ২০২৫ ইং:।

বাংলায় ১৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।

হ্যালো বন্ধুরা........

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ছোট গল্প লিখে শেয়ার করবো।আশা করি আমার লেখা ছোট গল্পটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। চলন তাহলে শুরু করা যাক।

pocket-watch-560937_1280.jpg
Source

একটি ছোট্ট শহরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিল একটি পুরনো ঘড়ি। বছরের পর বছর তার অবস্থানটি একটিও পরিবর্তিত হয়নি, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার গঠন একদমই বদলে গিয়েছিল। পলক ছাড়া কাঁটা চালিয়ে যাওয়ার বদলে, ঘড়ির কাঁটা অদ্ভুতভাবে কখনো থেমে যেত, কখনো আবার দ্রুত চলতে শুরু করতো। স্থানীয় মানুষজন একে ভয় পেত কিন্তু তারা জানত না। তবে এ শহরের মানুষদের মধ্যে একমাত্র অমিতা ছিল যে সব কিছুতে আগ্রহী। একটি দিনও সে দম্পতি, পরিবার বা সমাজের নিয়মের মধ্যে আটকে থাকতে চায়নি। সে চেয়েছিল জীবনের গভীরে প্রবেশ করতে, এমন কিছু খুঁজে বের করতে যা অন্যরা কল্পনাও করতে পারে না।অমিতা প্রতিদিন সেই পুরনো ঘড়ির কাছে আসতো। তার চোখের সামনে একটা অব্যক্ত গল্প ভেসে উঠতো, যেন এই ঘড়ির মাঝে কোনো গোপন রহস্য লুকানো আছে। সে জানতো শহরের লোকেরা কখনো কল্পনাও করেনি, এই ঘড়ি একটা প্রবাহের মতো, এক সময় থেকে আরেক সময় ভ্রমণ করার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু এই বিষয়ে কেউ জানতো না।

একদিন এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো। রাত গভীর হতে শুরু করেছিল এবং সবার ঘুমানোর সময়। ঘড়ির কাঁটা যখন রাত তিনটায় পৌঁছালো, এক বিশাল শিহরণ সৃষ্টি হলো। রাতের গভীর নিরবতায় এক অদ্ভুত শব্দ শোনা গেল। সবাই ভয় পেয়ে উঠলো কিন্তু অমিতা তার চিরন্তন কৌতূহলে ভরা মন নিয়ে ঘড়ির কাছে চলে গেলো।যতই সে কাছে চলে আসলো, ঘড়ি থেকে একটি অদ্ভুত কণ্ঠ ভেসে উঠলো।তুমি কি জানো, তুমি যে পথের দিকে যাচ্ছ, সে পথ সময়ের বাইরের এক নতুন জগতে নিয়ে যাবে।অমিতা শিহরিত হয়ে বললো, “সময় বাইরের জগত তুমি কী বলছো।কণ্ঠটি হেসে বললো তুমি যদি সত্যি জানতে চাও তবে তুমিই পারবে। তবে সাহস প্রয়োজন।অমিতা কিছুক্ষণ স্থির থাকলো। তার মনে হাজারো প্রশ্ন ঘুরছিল। কিন্তু অবশেষে সে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে বললো, আমি চাই, আমি সেই জগতটা দেখতে চাই।

ঘড়ির কাঁটাগুলি অদ্ভুতভাবে ঘুরতে শুরু করলো একের পর এক। তার পরবর্তী মুহূর্তেই অমিতা নিজেকে এক অচেনা জায়গায় অনুভব করলো। চারপাশে ঘন অন্ধকার এবং একটিই আলোর ঝলক, যা তাকে একটি নতুন পৃথিবীতে নিয়ে যাচ্ছিল। সে অনুভব করলো এই জায়গাটি সময়ের সীমার বাইরে, যেখানে সময়ের কোনো গতি নেই। ঘড়ির কাঁটা এখানে থেমে গেছে, এমনকি পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টির গতি এখানে স্নিগ্ধ এবং স্থির।এখানে মানুষ ছিল না তবে ভাসমান অস্তিত্ব ছিল। তাদের কোনো মুখ ছিল না কেবল শক্তিশালী চোখ যা অমিতার দিকে তাকিয়ে ছিল। তারা জানতো সে এক নতুন জীবনের সন্ধানে এসেছে।তুমি কি জানো এখানে আসার পরে, তুমি সময়কে ছাড়িয়ে যাও এক অদ্ভুত কণ্ঠ জানালো।অমিতা ভয় পেল না বরং সে গভীরভাবে ভাবতে লাগলো। আমি জানি না তবে আমি এখানে থাকতে চাই। আমি জানি এখানে অনেক কিছু শেখার আছে।তারা তাকে এক সাদা দরজা দেখালো, যেখানে লেখা ছিল এটি তোমার প্রথম পরীক্ষা।

অমিতা কিছুক্ষণ দাড়িয়ে ভাবলো তবে সাহসী হয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো। দরজা খুলতেই সে এক অন্য পৃথিবীতে প্রবেশ করলো। এখানে সময় ছিল না কিন্তু তার অস্তিত্ব আরো কঠিন হয়ে উঠেছিল। সে বুঝতে পারলো পৃথিবীর সমস্ত রহস্য আসলে সময়ের অন্তর্গত নয় বরং আমাদের চিন্তার সীমায় সীমাবদ্ধ।তবে একসময় অমিতা বুঝলো যে যতই সে সময়ের বাইরেও চলতে থাকুক, তার নিজের অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যতের মধ্যকার সম্পর্কটি ছাড়া, সে কখনো সত্যিকারের স্বাধীনতা পাবে না।শহরে ফিরে আসার পথে অমিতা এক নতুন দর্শন নিয়ে ফিরলো সময় কেবল একটি ধারাবাহিকতা নয়, এটি একটি সংযোগ যা আমাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সাথে সম্পর্কিত। আর এই সম্পর্ক বুঝে, সে নতুন এক জীবনের পথে এগিয়ে চললো, যেখানে সে নিজেকে সময়ের সীমার বাইরে খুঁজে পেলো।

পোস্টের বিষয়ছোট গল্প
পোস্টকারীতানহা তানজিল তরসা
ডিভাইসরেডমি নোট ১১
লোকেশনপাবনা
আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর লেখার ভেতর ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেবেন।


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি তানহা তানজিল তরসা। আমার স্টিম আইডির নাম @tanha001। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমি বিবাহিতা। আমার একটা ছেলে সন্তান আছে। আমি ফটোগ্রাফি, গান গাইতে,রান্না করতে ও বাইকে ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। আমার জন্ম স্থান কালিগঞ্জ থানা ঝিনাইদহ জেলায়। আমি পেশায় এক গৃহিনী। পাশাপাশি আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমি আমার হাসবেন্ড এর চাকরির সূত্রে পাবনা চাটমোহর এ বসবাস করছি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য ও সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। স্পেশালি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিন ও মডারেটরদের যারা আমাকে এত সুন্দর একটা কমিউনিটিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আমাকে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করছেন।


Logo.png

Banner.png

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnznE4oV7ctWuCxnsd9uy6YxdR8heVcjeT9mQWG2kihiWVWy9u9N83zWKRcGD2v7GMF1ttdPgUBMuuMuZY2.jpeg

Sort:  
 4 months ago 

1738600371247.png

 4 months ago 

অমিতার কৌতূহল এবং সাহসী পদক্ষেপ সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। গল্পটিতে সময় এবং মানব অস্তিত্বের গভীরতার প্রতি এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন। সময় শুধুমাত্র গতি নয়, এটি আমাদের অতীত, বর্তমান, এবং ভবিষ্যতের সাথে সম্পর্কিত একটি অদ্ভুত সংযোগ।আপনার শেয়ার করার অনু গল্প পড়ে ভালো লাগলো আজ।

 4 months ago 

আপনার মূল্যবান অভিমত ব্যক্ত করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 4 months ago 

বাহ খুবই চমৎকার একটি গল্প লিখেছেন আপু। সত্যিই সময় শুধু গতি নয় বরং এর সাথে আমাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ জড়িয়ে রয়েছে। অমিত সাহসী ছিল বলেই সে সময়ের বিপরীতে গিয়ে সবকিছু জেনে এসেছে। অমিতের সাহস দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনি খুব সুন্দর ভাবে গল্প লিখেছেন আর পড়েও খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করে পাশে থেকে উৎসাহিত দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

 4 months ago 

আপনার লেখা এই ছোট গল্প পড়তে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। ঘড়ির অদ্ভুত রহস্য গল্পটা সত্যি অনেক সুন্দর ছিল। খুবই সুন্দরভাবে আপনি গল্পটা লিখেছেন আমাদের মাঝে। আসলেই সময়ের সাথে আমাদের সব কিছুই সম্পর্কিত। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ এসব কিছুর সাথে এক অদ্ভুত সংযোগ। ভালো লাগলো পুরোটা পড়তে।

 4 months ago 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।

 4 months ago 

এত সুন্দর একটা ছোট গল্প আপনি লিখেছেন দেখে আমার অনেক ভালো লাগলো। এরকম গল্প গুলো পড়তে আমি অনেক বেশি পছন্দ করি। অমিতা সাহসিকতার সাথে সবকিছু জানার চেষ্টা করেছি। তার ভেতরে ছিল অসাধারণ কৌতুকল। তাই জন্যই তো সে সক্ষম হয়েছে সবকিছু জানতে। ভালো লাগলো পোস্টটা পড়ে।

 4 months ago 

আমার লেখা ছোট গল্পটি পড়ে আপনার কাছে অনেক ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু ধন্যবাদ আপনাকে।

 4 months ago 

আজকে আপনি সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন তো। আপনার গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো। আসলে ঘড়ির মধ্যে অদৃশ্যময় আওয়াজ শুনলে তো এমনি ভয় লাগে। তবে আপনার গল্পটি খুব রসালো ছিল। আর এরকম গল্প গুলো পড়তে ভালো লাগে আবার ভয় লাগে। ধন্যবাদ গল্পটি শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

আমার লেখা ছোট গল্পটি ভালো লাগার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।