বদরগঞ্জ বিজ্ঞান মেলা ২০২৫ (দ্বিতীয় পর্ব)

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে বদরগঞ্জ বিজ্ঞান মেলায় কাটানো কিছু মুহূর্ত শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।

বদরগঞ্জ বিজ্ঞান মেলা ২০২৫ ছিল এক অনন্য অভিজ্ঞতা, যা বদরগঞ্জের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি এক নতুন উদ্দীপনা জাগিয়ে তুলেছে। ২৫ জানুয়ারি বদরগঞ্জ উপজেলা মাঠে অনুষ্ঠিত এই মেলাটি শুধু একটি বৈজ্ঞানিক প্রদর্শনী ছিল না, এটি ছিল ভবিষ্যতের স্বপ্নদর্শী তরুণদের মেধা ও সৃষ্টিশীলতা তুলে ধরার এক সুবর্ণ সুযোগ। এই মেলার আয়োজনে ছিল বদরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ, যাদের নিরলস প্রচেষ্টায় এমন একটি বৃহৎ আয়োজন বাস্তবে রূপ নেয়। এই মেলার মধ্যে বদরগঞ্জ উপজেলার প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীরা সমান ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলার খ্যাতনামা পদার্থবিজ্ঞানী ড. রাশেদা পারভীন, যিনি তাঁর উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেন যে, বর্তমান বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী করতে হবে এবং তাদের মেধাকে সঠিকভাবে ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে হবে। তিনি আরও বলেন, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝেও যে পরিমাণ উদ্ভাবনী চিন্তা রয়েছে, তা উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম পেলে জাতীয় পর্যায়েও গৌরব এনে দিতে পারে। আসলে বর্তমান সময়ে গ্ৰাম এলাকার ছাত্র ছাত্রীরা শহরের তুলনায় অনেক টা এগিয়ে রয়েছে।গ্ৰাম এলাকার ছাত্র ছাত্রীদের একটু গুরুত্ব দিলে তারা ও অনেক দূরে এগিয়ে যাবে।

বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেয় প্রায় ত্রিশটিরও বেশি স্কুল ও কলেজ। শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবিত নানা রকম বিজ্ঞান প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়, যেগুলোর মধ্যে ছিল পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, কৃষিনির্ভর উদ্ভাবন, স্বাস্থ্যবিষয়ক যন্ত্রপাতি, সৌরশক্তির ব্যবহার এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন সমাধান। মেলায় ঘুরে বেড়ালে বোঝা যেত, কেবল শহরেই নয়, গ্রামের শিক্ষার্থীরাও কী অসাধারণ চিন্তা ও দক্ষতার অধিকারী। প্রতিটি স্টলে ছিল শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম ও স্বপ্নের স্পষ্ট ছাপ। শিক্ষার্থীরা প্রতিটি প্রজেক্ট খুবই সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে তৈরি করেছিলেন। তাদের তৈরি করা প্রতিটি জিনিস পত্র ছিল বিজ্ঞান সম্মত।

এই মেলার একটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল বিজ্ঞানভিত্তিক সেমিনার ও ওয়ার্কশপ। প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক এবং প্রযুক্তিবিদগণ। তারা শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন, হাতে-কলমে বিজ্ঞান বোঝান এবং কিভাবে একজন বিজ্ঞানমনস্ক নাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা এমন সুযোগে অত্যন্ত আনন্দিত এবং অনুপ্রাণিত ছিল। সেমিনারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, রোবোটিক্স, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি প্রভৃতি বিষয় উঠে আসে, যা তরুণদের মনে বিজ্ঞানভিত্তিক ক্যারিয়ারের স্বপ্ন জাগিয়ে তোলে।

মেলার শেষ দিন আয়োজিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। বিচারক মণ্ডলী প্রকল্পের মৌলিকতা, বাস্তব প্রাসঙ্গিকতা এবং উপস্থাপনাভঙ্গি বিবেচনা করে বিজয়ীদের নির্বাচন করেন। বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্মাননা স্মারক, সার্টিফিকেট এবং গবেষণার জন্য নগদ অর্থ অনুদান। সেই সঙ্গে তারা পাবেন বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়ার সুযোগ, যাতে তাদের উদ্ভাবন আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। আমাদের সকলের উচিত বর্তমান সময়ের তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কে সব সময় বিভিন্ন ভাবে সাপোর্ট করা, যাতে করে তারা আমাদের দেশ কে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।