অতিবৃষ্টিতে ডুবে যাওয়া সোনালি স্বপ্ন, ধানক্ষেতের করুন চিত্রের বেশ কিছু এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে অতিবৃষ্টিতে ডুবে যাওয়া সোনালি স্বপ্ন, ধানক্ষেতের করুন চিত্রের বেশ কিছু এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

পৃথিবীর সবচেয়ে মমতাময় সম্পর্কগুলোর একটি হলো প্রকৃতি আর কৃষকের সম্পর্ক। কিন্তু কখনো কখনো সেই প্রকৃতিই যেন হয়ে ওঠে রুদ্ররূপে। গত কয়েকদিনের অতিবৃষ্টিতে আমাদের গ্রামের বহু ধানক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সোনালি শীষে ভরপুর ফসল এখন পানির নিচে কাত হয়ে পড়ে আছে–যেন কৃষকের কষ্ট আর স্বপ্নের কবর।এই ছবিগুলোতে ধরা পড়েছে সেই করুণ বাস্তবতা।যে শস্যক্ষেতগুলোতে কিছুদিন পর হাসি ফোটার কথা ছিল, সেই ক্ষেতে আজ জমে আছে বেদনার জল। কাঁচা-পাকা ধানগাছ পানিতে ডুবে গেছে, অনেক গাছ মাটিসহ উপড়ে গেছে, আবার কিছু শীষ ভেসে উঠেছে পানির ওপর।

বাংলার মাটি বরাবরই উর্বর। শত শত বছর ধরে এই ভূখণ্ডে কৃষি কাজ একদিকে যেমন জীবিকার প্রধান মাধ্যম, তেমনি অন্যদিকে বাঙালির সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। বিশেষ করে ধান চাষ যা বাংলার প্রতিটি প্রান্তরে ছড়িয়ে থাকা সোনালি মাঠের প্রতিচ্ছবি। কিন্তু আজ এই সোনালি স্বপ্ন যেন ক্রমশ বিবর্ণ হয়ে উঠছে। প্রকৃতির রুদ্র রূপে কৃষকের মুখে হাসির বদলে ভেসে উঠছে চরম উৎকণ্ঠা, হতাশা আর দুশ্চিন্তার রেখা।

এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন একের পর এক কৃষকদের ওপর আঘাত হেনেছে। কখনও অকাল বৃষ্টি, কখনও ঘূর্ণিঝড়, কখনও আবার শিলাবৃষ্টি বা অতিবৃষ্টি সব মিলিয়ে ধান গাছের কোমল কচিপাতা থেকে শুরু করে পাকা শীষ পর্যন্ত কোনো পর্যায়েই রক্ষা পায়নি। কিছু কিছু অঞ্চলে ধান পাকার আগেই জলমগ্ন হয়ে গেছে জমি। অন্যত্র আবার বাতাসের তাণ্ডবে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে সোনালি শীষ। এসব দেখে কৃষকের বুক ফেটে কান্না আসে, কারণ তিলে তিলে যে ফসলের আশায় সে প্রতিদিন সকালে মাঠে ছুটে যায়, সেই ফসলই যেন তার চোখের সামনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

বাংলার বহু অঞ্চলে কৃষকরা ঋণ নিয়ে চাষ করেন। সরকারি কিংবা বেসরকারি ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তারা আশা করেন, ফসল বিক্রি করে সেই ঋণ শোধ করবেন। কিন্তু দুর্যোগে ফসল নষ্ট হলে সেই ঋণই হয়ে দাঁড়ায় অসহনীয় এক অভিশাপ। ফলে প্রান্তিক কৃষকরা পড়ে যান চরম দুশ্চিন্তায়। অনেকে বিকল্প আয়ের পথ না পেয়ে ভেঙে পড়েন মানসিকভাবে। এমনকি কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনাও আমাদের সমাজে বিচ্ছিন্ন নয়।

দুর্যোগ মোকাবিলায় কিছু পদক্ষেপ থাকলেও, বাস্তব চিত্রটা অনেকটাই ভিন্ন। সময়মতো সরকারি সহায়তা পৌঁছায় না অধিকাংশের ঘরে। আবার অনেক সময় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা সাহায্য থেকে বঞ্চিত হন নানা অনিয়ম আর মধ্যস্বত্বভোগীর কারণে।তবে এই অন্ধকারের মধ্যেও কিছু আশার আলো আছে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, দুর্যোগ পূর্বাভাস ব্যবস্থা, ও সঠিক কৃষি পরামর্শ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ যদি আরও জোরদার করা যায়, তাহলে কিছুটা হলেও কৃষকদের কষ্ট লাঘব করা সম্ভব।

একইসঙ্গে প্রয়োজন কৃষি বিমা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সহজলভ্যতা, যাতে অন্তত প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকের সর্বস্ব না হারায়।বাংলার সোনালি ধানখেত শুধু খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্র নয়, এটি এক একটি জীবনের গল্প, এক একটি পরিবারের স্বপ্ন। সেই স্বপ্নগুলো যেন না হারিয়ে যায় ঝড়ের ধাক্কায় বা বৃষ্টির প্লাবনে, সেই দায়িত্ব আমাদের সকলের। প্রকৃতির সঙ্গে যুঝে বেঁচে থাকা কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের কথা বলা ও সমাধান খোঁজা এখন সময়ের দাবি।

গত কয়েকদিনের টানা অতিবৃষ্টিতে আমাদের এলাকায় অনেক ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এই ছবিগুলোর প্রতিটিই যেন সেই বেদনার এক নীরব দলিল। ধানগাছগুলো প্রায় পাকে এসেছিল, কৃষকের চোখে ছিল সোনালি স্বপ্ন ,ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু প্রকৃতির নিষ্ঠুর আচরণ সেই স্বপ্নকে মাটিতে মিশিয়ে দিল।🥺🥹

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।